somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

থাকে শুধু ভালোবাসা

২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কানের কাছে এভাবে ফোন বাজতে থাকলে কিভাবে যে কারো ঘুম আসে বুঝি না! বিছানায় বসে টেবিলের উপর রাখা বইয়ের পাতা উল্টাতে উল্টাতে রিয়া পুনরায় বলল,"হয় ফোনটা রিসিভ কর না হয় বন্ধ কর অনু"

কাৎ হয়ে শুয়ে থাকা অনু চিৎ হয়ে দুই হাত উপরে তুলে হায় ছাড়তে ছাড়তে বলল,এত সকালে কেন যে মানুষ ফোন করে বিরক্ত করে বুঝি না!একটু শান্তিতে ঘুমাতেও দেবে না।

ফোনটা রাতে ঘুমানোর আগে বন্ধ করে রাখলেই তো পারিস,তাহলে আর সকাল সকাল বিরক্ত হতে হয় না।

অনু রিয়ার কথার কোন উত্তর না দিয়ে ফোনটা রিসিভ করে বলল,হ্যালো কে বলছেন?

আমি....

আপনি কে তার উত্তর বুঝি শুধুই আমি,আর তারপর চুপ করে থাকা।

আমার নাম বললে ও আপনি আমাকে চিনবেন না।

চিনব না তো ফোন করছেন কেন? যত্তসব!বলেই অনু লাইনটা কেটে দিল।

রিয়া বলল,তুই আবার শুয়ে পড়লি আজ কিন্তু আটটা পঁয়তাল্লিশে সুরাইয়া ম্যাডামের ক্লাস আছে।

মাত্র তো ছয়টা পঁয়তাল্লিশ বাজে,এখনো বহুৎ সময় আর একটু ঘুমিয়ে নি।

গোসল দিয়ে আসতেই এতক্ষণ! আটটা বাজে অনু।

এক কাজ করি আমরা একবারে রেডি হয়েই বেরোই।ক্যান্টিন থেকে হালকা কিছু নাস্তা করেই ডিপার্টমেন্টে চলে যাবো।

নাস্তা সেরে ওরা ডিপার্টমেন্টের দিকে যাচ্ছে। রিয়া বলল,প্রথম বর্ষের পরীক্ষার বেশী দেরী নেই,আমার খুব টেনশন হচ্ছে।

সারাদিন বইয়ের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে থেকে ও যদি টেনশন করা লাগে তাইলে তো সারা বছর না পড়ে আমি ঠিকই করছি।

এগারোটা বাজে আর পড়তে হবেনা,এখন ঘুমা না রিয়া!

আর ত্রিশ মিনিট।

লাইট অন থাকলে ঘুম আসে না তো।

মুখের উপরে ওড়না দিয়ে ঘুমায় পড়।

হ্যালো!

আমি পরশ! গতকাল সকালে যে ফোন করেছিলাম।আসলে আমার এক আত্মীয়ের নাম্বারে ফোন দিতে গিয়ে একটা সংখ্যা মিস্টেক হওয়াতে আপনার নাম্বারে ফোন চলে যায়।স্যরি,গতকাল সকালে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আপনার ঘুম নষ্ট করার জন্য।

কিন্তু কাল তো আপনি ভুলটা করেছিলেন না জেনে,আর আজ তো জেনে বুঝে ভুলটা করলেন।

আজ কিন্তু আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে না,আমি ফোন করার সময়ে আপনি ঘুমিয়ে ছিলেন।

তা ছিলাম না,আচ্ছা! আপনি কি আমাকে স্যরি বলার জন্য ফোন করছেন?

হ্যান্ডেড পার্সেন্ট না হলে ও অনেকটা সেই কারনেই..

বাকীটা!

একটি অচেনা সুকন্ঠী মেয়ের সাথে কথা বলার সামান্য কিউরিসিটি হয়তো।আপনার নামটা জানতে পারি কি?

অনু!এর মধ্যেই রিয়া এসে বলল,সাতটায় প্রাইভেট আছে মনে আছে তো।

অনু কিছু বলতে যাবে তার আগেই পরশ বলল,আপনার মুল্যবান সময় নষ্ট করলাম,আজ রাখছি!

পরদিন সকালে অনু বাথরুমে গোসল শেষে চুলে তোয়ালে জড়াচ্ছে,এমন সময় মোবাইলটা বেজে উঠতেই অনু বাথরুম থেকেই চিৎকার করে বলল, রিয়া দেখতো কে ফোন দিছে।

রিয়া বলল,আন নোন নাম্বার থেকে ফোন আসছে।

অনু এসে ফোনটা রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে পরশ বলল,কেমন আছেন?

ভালো।আপনী?

এই প্রবাসের জীবন যেমন যায়!সারাদিন কাজ,রাতে বাসায় ফেরা,কোন কোন দিন দেশে স্বজনদের সঙ্গে ফোনে একটু কথা বলা তারপর খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়া,এইতো।আপনি কি এখন কোথাও বেরুবেন?

হ্যা! ক্লাস আছে।

তাহলে তো এখন রাখতে হয়...

অনু রিয়াকে বলল,কি ব্যাপার লাইট অফ করছিস যে মাত্র তো দশটা বাজে,এখনি ঘুমিয়ে পড়বি!

হ্যা,শুধু শুধু জেগে থেকে লাভ কি! তাছাড়া তুই তো আর পড়ছিস না তাই লাইট অফ করলাম।

বাড়িতে বিয়ের আলাপ চলছে শুনে মন খারাপ।

তা একটু,বিয়েটা বাবা মায়ের পছন্দেই করার ইচ্ছা আছে।কিন্তু তাই বলে এখন থেকেই....।

আজ এই সময়!

আজ আমার ছুটির দিন।পড়ন্ত বিকেলে লেকের ধারে হাঁটতে হাঁটতে আপনার কথা মনে পড়ল তাই ফোন দিলাম।ওখানে তো এখন রাত,জানি একটি অনাত্মীয় মেয়েকে রাতে ফোন দেওয়া ঠিক নয়,আচ্ছা! আমি কি আপনার বন্ধু হতে পারি না?

কয়েক সেকেন্ড পর অনু বলল,পারেন কিনা সেটা একটু ভেবে কয়েক দিন পরে জানাবো।

বন্ধুত্বের অফারেই কয়েক দিন,যদি প্রেমপ্স্তাব দিতাম তয় কয় বছর সময় নিতেন আল্লায় জানে।

বেশিরভাগ প্রেমের সম্পর্কই কিন্তু বন্ধুত্ব দিয়ে শুরু হয়।

হারিয়ে দিলেন।তবে আমি কিন্তু কোন কিছুই অত ভাবিনা,যেকোন বিষয়ই হোক মুহূর্তেই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।

জীবনের সকল সিদ্ধান্ত কি মুহূর্তের মধ্যে নেওয়া যায়?

আপনার মত করে কখনো ভেবে দেখিনি।আচ্ছা! আপনার হ্যা না উত্তরের অপেক্ষায় থাকলাম,রাখি! ভালো থাকবেন।

এরপর থেকে শুরু হলো ওদের বন্ধুত্ব।আর বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্কটা কখন কিভাবে যে ভালোলাগা আর ভালোবাসায় রুপ নিয়েছে সেটাই অনু অন্ধকার রুমে একা একা বসে চোখ বন্ধ করে মনে করার চেষ্টা করছে।এর মধ্যেই পরশের ফোন,অনু ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে....কি করছো?

ভাবছিলাম!

কার কথা?

তোমার! তোমার আমার কথা,ঠিক কখন থেকে,কিভাবে শুরু হলো আমাদের ভালোবাসার গল্পের।

আমি ও কখনও কখনও ভাবি,কত দ্রুত আমাদের জীবনের মুহূর্তগুলো চলে যায়,তোমার সাথে পরিচয় মনে হয় যেন সেদিন অথচ চার বছর কেটে গেল।তোমার পরীক্ষা কেমন হয়েছে?

(চলবে)

০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×