somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছয় জন অন্ধ ও একটি হাতি !!!

২২ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[মুখ বন্ধ: ইহা একখ্যান কচি কাঁচাদের জইন্য লেখা গল্প। পাকনারাও পড়তে পারেন, তয় অবশ্যই ১০০% কাঁচা মন দিয়া। কাঁচাদের একখ্যান ইংরাজী গল্প পৈড়া ইচ্ছা হইল তা নিজ ভাষায় লেখার। তাই সামাইন্য এইদিক সেইদিক কৈরা লিখা ফালাইলাম। হয়ত কিছুই হয় নাই।]



অনেক অনেক দিন আগে এক গ্রামে বাস করত ছয় জন অন্ধ লোক। তারা নানা উপায়ে তাদের জীবন ধারনের জন্য বিভিন্ন কাজকর্ম গুলো শিখে নিয়েছিল।

সুরের মুর্ছনা, কোন কিছুর কোমলতা এবং খাবারের স্বাদ ও গন্ধ ওরা খুব সহজেই বুঝতে পারত।



তারা একসাথে তাদের বাড়িঘরের যত্নআত্তিও করত।



এক দিন তারা একটা মজার খবর শুনল....রাজ প্রাসাদে রাজকুমার একটা বড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়ড়ড় হাতি কিনে এনেছেন। হাতি সম্পর্কেত অনেক কিছুই শুনেছে তারা, কিন্তু জানেনা হাতি দেখতে কেমন হয়!

"চল আমরা সবাই মিলে রাজপ্রসাদে যাই...."
বলল, একজন অন্ধ। তাহলে আমরা স্পর্শ করে বের করতে পারব হাতি আসলে কেমন।



তারপর তারা সবাই মিলে রওনা হল রাজপ্রাসাদের দিকে। অনেক দুরের পথ, গরমে তারা সবাই কাতর হয়ে গেল। কিন্তু হলে কি হবে! তারা থামল না। তারা হাটতেই থাকল, হাটতেই থাকল, কারন হাতিকে স্পর্শ করার অপেক্ষা তারা সইতে পারল না।



শেষ পর্যন্ত তারা সবাই রাজপ্রসাদে এসে পৌঁছাল। তাদের দেখে এক রাজরক্ষী এসে সাবাইকে স্বাগত জানাল। একজন অন্ধ রক্ষীকে জানাল তারা কেন এখানে এসেছে।



সব শুনে রক্ষী বলল...... অবশ্যই আপনারা হাতিকে স্পর্শ করতে পারবেন। আমার বিশ্বাস এতে রাজকুমার কিছুই মনে করবেন না।

তারপর রক্ষী তাদের নিয়ে গেল বাগানে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা হাতিটার কাছে।



অন্ধদের মধ্যে প্রথম জন হাতির একপাশে স্পর্শ করল....., এটা অনেক শক্ত আর প্রশস্থ! সে ভাবে হাতি মনে হয় দেয়ালের মত!!!!!



এবার দ্বিতীয় জন হাতির লম্বা শুরটাতে হাত রাখল। ওহ!! এটাত সাপের মত!



তারপর তৃতীয় জন হাতির মসৃণ সুচালো দাঁতের উপর হাত বুলাল। সে ভাবে হাতি কেন সুচাল বল্লমের মত!!!!!



চতূর্থ অন্ধ লোকটা হাতির পা ধরে বলল..... আরে, এটাত খসখসে গোলাকার, গাছের মত!

পঞ্চম জন হাতির কান স্পর্শ করে। বড় হাতির কানটাও ছিল বিশাল বড়। লোকটা যখন কানটা ধরল, ঠিক তখনি হাতিটা আস্তে করে কানটা একটু নাড়াল। তখন লোকটা হেসে বলে উঠল,ওমা! এটাত পাখার মত!!!



সবার শেষে ৬ষ্ঠ জন লম্বা চিকন লেজটা স্পর্শ করল। সে বলে......আরে আরে হাতিত রশির মত!!



এদিকে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে। সূর্যের তাপও বেড়ে গেছে। রক্ষী ছয় জন অন্ধ লোককে সাথে করে নিয়ে একটি গাছের নীচে তাদের বিশ্রাম করতে বলে তাদের জন্য পানি আনতে চলে গেল।



ওরা যখন গাছের নীচে বিশ্রাম নিচ্ছিল তখন হঠাৎ করে একজন হাতি সম্পর্কে কথা বলে উঠল।

"কেউত কখনো বলেনি হাতি দেয়ালের মত! বলল প্রথম জন।
দেয়াল!!!!!! বলল দ্বিতীয় জন, আরে না.... হাতি হচ্ছে সাপের মত।"

"ঐ সময় তৃতীয় জন উঠে হাত নাড়িয়ে বলে উঠল,.....আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম হাতি বল্লমের মত। কি!!!!!!!!! চতুর্থ জন গর্জে উঠল। আরে গাধা হাতি হচ্ছে গাছের মত।"

"পঞ্চম জন এবার চিৎকার করে বলে উঠল.........., দেয়াল? সাপ? বল্লম? গাছ? তোমরা সবাই ভূল। হাতি হচ্ছে পাখার মত। না না না জোড়ে চেঁচিয়ে বলে উঠল ৬ষ্ঠ জন.......... হাতি হচ্ছে রশির মত।"

তারা সবাই তাদের নিজের ভাবনাকে সত্যি প্রমান করার জন্য নিজেদের মাধ্যে ঝগড়া ও মারামারি শুরু করল হাতি নিয়ে।



"দেয়াল!", " সাপ!", " বল্লম!", " গাছ!", " পাখা!", " রশি!"



তাদের চিৎকার চেঁচামিচিতে রাজকুমারের দুপুরের বিশ্রামের ব্যঘাত ঘটল।

"চুপপপপপপপ, কারা ঐখানে হট্টগোল করছে?"
রাজকুমার হেঁকে উঠল। আমি ঘুমানোর চেষ্টা করছি।



আমরা দূঃখিত রাজকুমার। বলল ১ম জন। কিন্তু আমরা সবাই কিছুতেই একমত হতে পারছিনা আসলে হাতিটা কেমন! আমরা সবাই একই হাতিকে স্পর্শ করলাম কিন্তু সবার ধারনা ভিন্ন।

রাজকুমার খুবই নম্রভাবে অন্ধজনদের বুঝাতে লাগলেন যে, হাতি একটা অনেক বড় প্রাণী। এটার পাশটা দেয়ালের মত, এটার শুরটা সাপের মত, এটার দাঁত গুলা বল্লমের মত, এটার পা গুলো গাছের মত, এটার লেজটা রশির মত। সুতরাং তোমরা সবাই সঠিক, কিন্তু তোমরা সবাই ভূল! কারণ তোমরা হাতিটার একেকটা অংশ শুধু স্পর্শ করেছ। যদি জানতে চাও হাতি সত্যি কেমন , তাহলে তোমাদের অবশ্যই সব গুলা অংশ জোড়া লাগাতে হবে।



অন্ধ লোক গুলা ভাবতে লাগল রাজকুমার কি বলল! এবং তারা বুঝতে পারল যে, তিনি আসলে সত্যি বলছেন।

রাজকুমার বললেন আমি এবার তোমাদের অন্য কিছু বলব হাতি সম্পর্কে।
হাতির উপরে চরতে অনেক মজা এবং আরামদায়ক। এখন তোমরা সবাই মিলে হাতির উপর চরে বাড়ি যাবে।

এবং তারা তাই করল।



অতঃপর তারা সবাই একমত হল যে, অন্য সব গুলা অংশের চেয়ে এই অংশটাই হল সবচাইতে ভাল অংশ।

**************************************************

আমার কথা-----কোন একটা বিষয় নিয়া মানুষের মতবাদ ভিন্ন হইবারই পারে। আসল কতা হইল কে কোন জায়গা থাইকা বিষয়টা দেখতাছে। হইবার পারে সবাই ভুল, আবার এইটাও হইবার পারে হগলেই ঠিক। আবার এটাও হইতে পারে আসল জায়গায় কারো খেয়াল বা ভাবনা পৌঁছাইবারই পারে নাই। যেটা ভাবা বা দেখা উচিত। আমরা আমজনতা হইলাম এই অন্ধ লোক গুলার মতন খালি মারামারি আর ঝগড়াঝাটিই কইরা যাই মাগার বিষয়ের আসল দিক কখনো দেখবারই পারি না, আফসোস.............!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৪:২১
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×