somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আস্তিক আর নাস্তিক বিতর্ক বন্ধ হোক

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামুকে পছন্দ করেছি সেই প্রথম দেখাতেই, তারপর পোস্টের এপাড়া সেপাড়া ঘুরে ঘুরে কখন যে ভালবেসে ফেলেছি বুঝতেই পারি নাই। এমনও সময় গিয়েছে সামুকে না দেখলে চলতোই না। এ যেন ভয়ানক ভালবাসার নেশা-যা রক্তের ভেতর অব্দি পৌছে গিয়েছে। অফিসে গিয়ে মিটিং সিটিংএর ভেতর হঠাৎই মনে হতো আহ্ হয়তো এতক্ষণে অনেক ব্লগার ভাল ভাল লেখা দিয়ে ফেলেছে। উহ্ কখন শেষ হবে মিটিং/ওয়ার্কশপ/ট্রেইনিং। কারণ প্রথম লেখা পড়ার মজাই আলাদা। সেই সময় ব্লগারদের ভেতর এক ধরণের বিনি সুতার টান ছিল, এ টান ছিল আত্মার টান/সম্পর্কের টান। এযেন মিলন মেলা। ভালবাসার ভেতর দিয়ে আমরা সবাই ভাল ছিলাম, খু-উ-ব ভাল ছিলাম।
তারপর এক সময় আসলো আস্তিক নাস্তিক বিতর্ক। প্রথম দিকে সবাই বেশ উপভোগ করলেও পরে তা তিতাতে গড়িয়েছে। মনটা মাঝে মাঝে কেন যেন মোচড় দিয়ে উঠতো-শুরু হয়েছিল সম্পর্কের কাদা ছোড়াছুড়ি। একদিকে অফিসের কাজের ব্যস্ততা আর অন্যদিকে সামুর প্রতি গভীর টান, ব্লগে যেয়েও কেন যেন শান্তি পেতাম না, ধীরে ধীরে কমিয়ে দেই আমার ভালবাসার আঙ্গিনায় যাওয়া। মাঝে মাঝে ঢু দিলেও দেখতাম পুরাতন ব্লগারগণ ধীরে ধীরে কমছে যারা অসাধারণ লেখা লিখতো—আবার কিছু নতুন ব্লগার ব্লগ বাড়িতে এসে ভাল ভাল লেখাও উপহার দিচ্ছেন।
এক দল নাস্তিকের কাজই ছিল প্রতিটি ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা-বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কুটক্তি করা, নবী করিম (সাঃ)কে নিয়ে ব্যাঙ্গ করা। আসিফ মহিউদ্দিনসহ আরো কিছু ব্লগার এই কাজে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিলেন। অনেক ধর্মপ্রাণ ব্লগারদের মন রক্তার্ত হতো কিন্তু নিরবে কিছুই বলতো না, আবার অনেকে দেখতাম মন্তব্য করতো ইতিবাচক ভাবে, আবার অনেকে নেতিবাচকভাবে-এইভাবে চলতো ঠেলাঠেলি। কিছুদিন পরে পত্রিকার পাতাতে দেখি একজন ব্লগার মারা গিয়েছে, কিছুদিন পরে আসিফ মহিউদ্দিনকে মারধোর—পাল্টা লেখালেখি-যুক্তি খন্ডনসহ আরো কত কি।
আমি কয়েক বছর চাকুরী সুবাদে খুলনা ছিলাম। আমার পাশের বাসার এক ভাবি এসে বললেন,” আপা, আপনিতো পড়ালেখা করতে ভীষণ পছন্দ করেন, ব্লগে কিন্তু যাবেন না মোটেও। ব্লগারগণ খুউব খারাপ, ওরা মারামারি করে, খুন খারাপি করে।” আমি অবাক হওয়ার ভান করে বলেছিলাম,” তাই নাকি ভাবি, ব্লগারগণ এত খারাপ হয় !! আমি তো শুনেছিলাম ওরা ভীষণ পড়ালেখা করে, সুন্দর সুন্দর লেখালেখি করে, মানুষের বিপদে এগিয়ে আসে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে জড়িত হয়, মানুষকে ইতিবাচক মূল্যবোধ শেখায় আরো কত কি”। ভাবি আমাকে ঝারি দিয়ে বলেছিলেন,” আপনি ছাই জানেন, ওরা হলো আস্ত শয়তান, ওরা শুধুই মারামারি করে, এই দেখেন পেপারে কি লিখেছে”। আমি ওনাকে পরে বুঝিয়েছিলাম যে দুএকটি ঘটনা উদাহরণ হতে পারে কিন্তু সামষ্টিক হতে পারে না। ভাবিও পরে মোটিভেটেড হয়েছিলেন। একদিন অফিসের এক কলিগ এসে কানে কানে বললেন,” আপা আপনি যে ব্লগে লিখেন, তা কিন্তু কাউকে বলবেন না, কারণ ব্লগার নিয়ে কানাঘুষা চলছে।” কি বিপদরে ভাই। মনটা বিষিযে গিয়েছিল—ভালবাসাতে কে/কারা যেন ছাইচাপা দেয়ার চেষ্টা করছিল। মাঝে মাঝে সামুতে ঢু দিতাম, কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগতো। যাইহোক তারপরও ব্লগে যেতাম মাঝে মাঝে ।
একদিন শুনতে পেলাম, সামুর দরজা বন্ধ। অবাক কান্ড। কে বা কারা করেছে মনে হাজারো প্রশ্ন নিয়ে সামুতে ঢুকতে যেয়ে বাধা পেলাম। সামুর প্রতি ভালবাসাটা কি আর এমনি এমনি চলে যেতে পারে ! খুউব মনে পড়তো, হঠাৎ হঠাৎ মনে হতো আজই সামুতে যেতে পারবো-প্রতীক্ষা করেছি কত সকাল, বিকাল, সন্ধা, রাত। কত রাত গড়িয়ে ভোর হয়েছে কিন্তু সামুর দরজা খুলে নাই- খুলতে দেয়া হয় নাই। আমাদের জানা আপা প্রানান্ত চেষ্টা করেছেন সামুকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে। তার সেই চেষ্টা সফল হয়েছে। ব্লগারগণ এত খুশি হয়েছে যে ঈদের আনন্দও মনে হয় হার মেনেছে। ব্লগারদের মনে ঈদের আনন্দ এনে দেয়ার জন্য জানা আপাকে অভিনন্দন।
ব্লগে যারা আসেন তারা প্রত্যেকেই কোন না কোন ধর্মে বিশ্বাস করেন। নাস্তিকতাও একটা ধর্ম বটে-কারণ তারা ওটাতেই বিশ্বাস করেন এবং সেই অনুযায়ী আচরণও করেন। আমি আস্তিক, প্রচন্ডভাবে আস্তিক, আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি,”আল্লাহ এক, তার কোন শরীক নেই, হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল”। আমি যেমন আমার বিশ্বাস নিয়ে চলি, ঠিক তেমনি অন্যান্য ধর্মের ব্লগারগণও তাদের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে চলার চেষ্টা করেন। নাস্তিকেরা অযথা কুটুক্তি করে ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করলে কঠিনভাবে প্রতিহত করতে মটারেটরদের নিকট অনুরোধ করছি। সেইসাথে আস্তিক ব্লগারদের নিকট অনুরোধ মন্তব্যের জবাবটা কিন্তু ইতিবাচকভাবেই দেয়া যায়।
মতের মিল যে সকলের সাথে হবে এমন কোন কথা নেই। আমরা অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গঠণমূলক ইতিবাচক মন্তব্য করবো। ব্লগে যারা ঘুরতে আসে/যারা পড়তে আসে/যারা নতুনই লিখতে শুরু করেছে তারা দেখবে সামুর উঠানে সকল সময়ই মিলন মেলা লেগে থাকে। এখানে নেই কোন হানাহানি- আছে শুধুই ভালবাসাবাসি। আমাদের জানা আপার প্রাণের ব্লক বাড়ি তার ভালবাসার সকল ব্লগার নিয়ে হাসি আনন্দে ভরে থাকুক সকল-দিন- রাত-বছর-শতাব্দী।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৪
১১টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×