somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ২: অপরাজেয় বাংলা

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুই.

দেশে ফিরবার এক সাপ্তাহ আগে মন্ট্রিয়লে আর্টিষ্ট বন্ধু রাকিব হাসানের বাড়িতে রাত ভর আড্ডা হলো। শামীম ভাই ক'দিন আগেই মন্ট্রিয়লে এসে নাজেল হয়েছেন। আমি বললাম, আপনে এই খানে তাইলে আমার অপরাজেয় বাংলা প্রজেক্টের কি হইব! দেশের থেইকা ফিরাতো খালিদ ভাই'র সাথে আর যোগাযোগটা ঠিক রাখতে পারি নাই। শামীম ভাই জানালেন ছ'সাপ্তাহের মধ্যেই ফিরছেন উনি। আমি বললাম তাইলে আপনে আসলেই কাজ শুরু করমূ।

তেলের দাম বাইরা প্লেনের টিকিটের দাম গেছে বাইরা! অটোয়া-ঢাকা-অটোয়া টিকিটের দাম হুহু করে বেড়ে ১৮০০/১৯০০ কানাডিয় ডলার হয়ে যাচ্ছে। বুদ্ধি করে অর্ধেক টিকিট কাটলাম। খরচ তাও বারোশো ডলারের মত। রিটার্ণ টিকিটটা হাতে থাকলে কয়দিন পরই ফিরবার একটা ব্যারা ওঠে। মাথা খাটাইয়া টিকিট কাটলাম ওয়ান ওয়ে। আসলে নগদ টাকা বাচানোর জন্য ইচ্ছা কইরাই রিটার্ণ্ কাটি নাই। দেশে হাতের টাকা পয়সা ফুরাইয়া গেলে যেন সহজে ফিরতে না পারি, উদ্দেশ্য হইল সেটা।

দেশে ফেরার পর আমার এরকম ওয়ান ওয়ে টিকেট টু হোমের কথা শুনে নিকটাত্নিয়রা ফিশফাস করে, বৌ সংসার ঠিকাছে কিনা ইঙ্গিতে জিগ্গেস করে। মরার দেশে কেন আইছি তা জানতে চায়। ডকুমেন্টারীর কথা শুইনা চোখ কপালে তোলে, বলে এগুলাতেত পয়সা নাই! আমার ভাগ্নিকে এক দিন আফসোস করে তার মাকে জিজ্ঞেস করতে শুনলাম; টেলি ফোনের জোস্ জোস্ বিজ্ঞাপন বানিয়ে কে কত টাকা কামিয়ে ফেলেছে! আর তার মামা বুড়াদের মত কি বলে অপরাজেয় বাংলা না টাংলা! মনটাই খারাপ হইয়া গেছিল সেদিন। ঠিক করলাম নিজের লাইন ছাড়া আত্নিয় স্বজন/ ববন্ধুবান্ধব কারো সাথে বোহুদা কোনো যোগােযাগ নয়। মনে মনে বললাম, আমার লাইন ছাড়া বাদবাকী আত্নিয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সকলের ক্ষেতাও পুড়ি না।

খালিদ ভাইর টেলিফোন নাম্বারটা সাথে ছিল না নাম্বারের জন্য মন্ট্রিয়ল ফোন করলাম শামীম ভাইকে পেলাম না কি সব জটিলতার কারনে জানলাম উনি সহসা ফিরতে পারছেন না! আমি তখন টার্গেট নিলাম এই ২৬ মার্চের ভেতর কাজটা শেষ করতে হবে। এক দিন দেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ এর পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে বিটিভি'র এক সময়ের ডাকসাইটে প্রযোজক ম.হামিদ কে পেলাম। ওয়ান টু থ্রী করে ম.হামিদকে এ্যপ্রোচ করে বসলাম। অপরাজেয় বাংলা নিয়ে আমি একটা কাজ করছি আপনার একটা সাক্ষাৎকার নিতে চাই। উনি পকেট থেকে একটা কার্ড বার করে দিয়ে বললেন আমি এখন আর টি ভিতে আছি, ফোন করো দু'দিন পর।

দু'দিন বাদে ফোনে ম. হামিদের কাছ থেকে, এ্যপয়েন্টমেন্ট নিয়ে যথারিতী এক বিকেল চারটার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে আরটিভির নীচে যেয়ে কল করলাম তাকে। এক বার, দুই বার , তিন বার ফোন করে বেকুব হয়ে গেলাম কেউ ফোন ধরছেন না! পরে কিছুক্ষন বাদে উনি কল ব্যাক কর্লেন, উনি তখন অফিসে নাই! উনি বললেন একটা ফোন করে আসবা না? আমি বললাম আমারে চারটায় টাইম দিয়ে ছিলেন আপনি। যাই হউক পর দিন আবার টাইম দিলেন। অফিসে গিয়ে ঠিক মত কাজ করতে পার্লাম না ওনার ব্যাস্ততার কারনে। ছুটির দিন শুক্রবার সকালে মর্ণিং ওয়াকের সময় উনি টাইম দিলেন অপরাজেয় বাংলার সামনে। আমি সানন্দে রাজী হলাম।

ম. হামিদ মুক্তি যুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে ডাকসু'র সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে একটি ভাস্কর্য নির্মান হবে এই প্রকল্পটি সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসু'র পক্ষ থেকে তিনিই এগিয়ে নিয়ে যান। শিল্পী খোজার প্রক্রিয়ার মাঝে কতৃপক্ষ ঠিক করেন ভাস্কর আবদুল্লাহ খালিদ কে। ঠিক হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে নির্মান হবে মুক্তি যুদ্ধের স্মারক ভাষ্কর্য...

(চলিবেক)

মুর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন: অপরাজেয় বাংলা এক.

ছবি: মিশুক মুনীর ১৯৭৯
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৮
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×