somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন ঝরনা হরিণ মারা

০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নতুন ঝরনা,নতুন ট্রেইল ! ভ্রমণ পাগল মানুষের কাছে এসব নিয়ে বেশ কৌতুহল । বেশ কিছু দিন হয় নতুন ঝরনার খোঁজ করছি । কিন্তু নানা প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি,বৈরীপূ্ন প্রাকৃতিক পরিবেশ ইত্যাদি পরিস্থিতির কারণে সম্ভব হয়নি । অবশেষে দীর্ঘ ট্রেকিংয়ের পর নতুন ঝরনার সন্ধান পেলাম । রাঙামাটির সবচেয়ে উচু ঝরনা, উচ্চতায় প্রায় ১৫০ ফুট । ঝরনার নাম হরিণ মারা ।
সকাল থেকেই বৃষ্টি! ঝমঝম বৃষ্টি পুরো পাহাড় তখন প্রায় সাদা । এমনই এক ঘোরলাগা পরিবেশ প্রকৃতিতে । দীর্ঘদিন ধরে নতুন ঝরনার ট্রেইল ধরে হাঁটার ইচ্ছে ,তাই প্রকৃতির বৈরি হাওয়া সত্ত্বে দিঘীনালা থেকে রওনা হলাম । মোটর বাইকে ক্ষনস্থায়ী ভ্রমণ শেষে পৌছাই মূল ট্রেইল । এখান থেকে পুরোটা হাঁটার পথ । বৃষ্টিতে উঁচু –নিচু পাহাড়ী পথ বেশ পিচ্ছিল । আকাশ রূপ তখনও বেশ মেঘকালো । সময় আর দুরত্বের কথা বিবেচনা নিয়েই দ্রুত হাঁটতে শুরু করলাম ট্রেইলের পথ ধরে । কিন্তু ঘন জঙ্গল আর ধারালো শন পাতা হাঁটার গতিকে ধীর করে দিল । মন জুড়ানো সব ল্যান্ডস্কেপ-সবুজ পাহাড়ের কোল ঘেষা আদিবাসী বসতি,আদিবাসীরা ফসল বুনন করছে জুমের ক্ষেতে ,ছোট ছোট ক্যাসকেট । সুবজ পাহাড়জুড়ে জুমে চাষ । বড় বড় বৃক্ষরাজি ! পথ চলতে চলতে কানে আসে বজ্রপাতের গুড়ম গুড়ম শব্দ । এমন বর্ষণমুখর দিনে –ঝরনার পথটাই সত্যিই বেশ রোমাঞ্চকর । ট্রেইলের পথ চলতে চলতে স্থানীয় এক আদিবাসী বন্ধুর সাথে দেখা হলে,তার অপ্যায়ন গ্রহণ করতে হল, তাকেও ট্রেকিংয়ের সাথী করে নিলাম । দূর পাহাড় থেকে কানে আসছে বৃষ্টির আগমনী শব্দ । বোঝা যাচ্ছিল বৃষ্টির বড় বড় ফোটে ক্রমশ আমাদের দিকেই আসছে । নিরুপায় হয়ে সবাই ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে একাকার,এই বৃষ্টির মধ্যে আমাদের বিরতিহীন পথ চলা । তবে বৃষ্টিতে পায়ে হাঁটার পথটা ধীরে ধীরে আরো বেশী সুর হয়ে আসছিল এবং ঘন ঢাকা পথে পা কোথায় ফেলছি তাও বুঝাচ্ছিল না । ঘন সুবজের জঙ্গল ,জোক এবং কালো মেঘের আকাশে পেরিয়ে ঝরনা কাছেই আসতে ঝরনার শব্দ পেলাম । ঝরনার কাছের পৌছাতে মনে হল, দীর্ঘ খাড়া পথ বেঁয়ে নামতে হবে । কিন্তু নামার পথেই যত বিপত্তি,ট্রেইলটা প্রায় ৮০ ডিগ্রি খাড়া । পাথর আর ঘন জঙ্গলের পথটা মাড়িয়ে নামা খুব কষ্টকর ,তাই সাথে থাকা দেশী দা দিয়ে জঙ্গল কেটে কেটে নিচে নামতে হচ্ছে । বৃষ্টির কারনে পথের ঝুকিটা আরো বেড়ে গেল । পাথরে খাঁজ ধরে এমন পাহাড়ী ট্রেইলে নিচে নামা রোমাঞ্চের বিপরীতে ভয় ছিল বেশী । ট্রেইলের ঘন জঙ্গলের ভিতরে নামতে নামতে চোখে পড়ে বিশাল ঝরনার ধারা । অতিবৃষ্টির কারণে ঝরনায় পানির গতি ছিল খুব বেশী । কলকল ঝরনার তীব্র ধ্বনি ‍! প্রায় ১৫০ ফুট উপর থেকে বেয়ে পাথরের পথ বেয়ে নেমে আসছে ঝরনার স্রোত । ঝরনার ঢাল বেয়ে নেমে আসা জলের স্রোত মিশেছে ঝিরিতে । পাহাড়ের প্রাচীন পাথর বেয়ে সাদা রেখার নিচে নেমে আসছে ঝরনার স্রোত । সন্ধ্যার কাছাকাছি সময়ে ঝরনা থেকে ফেরা পালা,প্রায় অন্ধকারের ট্রেইল ধরে আবার হাঁটার পথ শুরু ।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সরাসরি বাসযোগে খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা পৌছানো যায় । দিঘীনালা বাসটার্মিনাল থেকে মোটরবাইক বা চাঁদের গাড়ি করে ১০ নাম্বারে নামক জায়গায় নেমে ,পাহাড়ী ট্রেইল ধরে পাঁয়ে হেঁটে ঝরনায় পৌছানো যাবে ।
প্রয়োজনীয় তথ্য : ঝরনা প্রকৃতির এক অসাধারণ সৌর্ন্দয্য । ঝরণা দেখতে গিয়ে এর আশে পাশে কোন প্ল্যাস্টিক,বোতল,প্যাকেট ফেলে ঝরনাকে নোংরা করবেন না । প্রৃকতিকে তার মত করে থাকতে দিন । উপভোগ করুন তার সৌর্ন্দয্য । হরিণ মারা ঝরনা ভ্রমণের জন্য যোগাযোগ করুন—০১৮১৫ ৮৫৬৪৯৭,০১৫৫৬-৭১০০৪৩( Travel in CHT) ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×