somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনকোরা প্রাচীন

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে, রূপকথার গল্প দিয়ে নিজেদের ব্যাখ্যা দিতাম
কিন্তু কিভাবে বলি ঘৃণা, এখন আমরা যা হয়ে উঠলাম
যেভাবে নিজেদেরকে ভাঙি, হেতুহীন ঝামেলা বাড়াই
তবু আমরা আজো থেকে গেছি সেই পুরনো রূপকথাই

আমরা এখনো আটকে আছি নায়ক ও দুর্ভাগ্যের মাঝখান
এখনো আমরা দেবরূপী তাই সেইসাথে অনেক শয়তান
কিন্তু ভুলে যাই যে, আমরা আসলে বস্তুগত অঙ্কের অধিক
খোলা আকাশের নিচে ঐ বুড়োটা বাঁচে রিক্ত অবান্ধবিক

তরুণটা থুতু ফেলে, ভেতরে নরম আর বাইরে কাঠখোট্টা
আমার মনে হয়, এরাই তো আমাদের নায়ক এই সবকটা
এরাই আমাদের কালপুরুষ, যে মুখটা না দেখে পথ হাঁটো
যে মুখ তোমাকে দেখে না, সে গল্পগুলো নয় এতই ছোট

বাজারের থলি হাতে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে সাথে এসব জনতা
বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে সেই প্রতিবেশীর ভেঙে যাওয়া ছাতা
প্রত্যেকের ভেতরে আছে বিধেয় আর উদ্দেশ্য জ্বলমান
আবার তাকাও, দেখ প্রচলিত দৃষ্টিতে মারা খায় পরিত্রাণ

লক্ষকোটি চরিত্র নিজস্ব উপকথা নিয়ে হৃদয়ের গান গায়
ভাবে ভগবান হবে, যতক্ষণ শ্রোতারা অসুর না হয়ে যায়
তবু এসব শহরের লোকগাঁথা কিভাবে মানুষের ভূগোলে
সর্বদাই বলেছে এককথা: ন্যায়-অন্যায় মানবে সকলে

একটাই তো আদিম চাওয়া, সবাই কিন্তু প্রেমের সমর্থক
কোন পক্ষের কে দেখে নেওয়া, সবাই চায় কষ্ট বন্ধ হোক
না, ঠিকই আছে, এখানে আর কোন দৈত্য নেই বাকি,
নেই কোন ডাইনীর অভিশাপমালা হয়ে রাজ্য-বন্ধকী

আছে শুধু নর্দমার বর্ষা, আরো আছে বেশকিছু ছাগল
এখানে আমরা দেখছি রূপকথার এক নতুন ভূগোল
যে ভাইরা সমাজ বদলে অন্যের দোকানে দেখছে নেশা
যাদের বাপগুলো অতি ও অল্প শ্রেণীতে আনছে পেশা

আমাদের অভিজ্ঞান আর নীতিবোধ এসব শহরেই হয়
যেখানে ক্ষুব্ধতার বিপরীতে নীরবতার অনেক প্রশ্রয়
হ্যাঁ, আমাদেরও দলবদল, রঙচটা যুদ্ধেই আটকে থাকে
এখনো দেবতাসম আমাদেরকে যেন নাম ধরেই ডাকে

আমরা উত্থিত কারণ আমরাই অবনত, ধরে রাখো আশ
রাখো অস্থিরতা, যখন খুঁড়ে বের করবে আধুনিক আবাস
খুঁজে পাবে আমাদের, নব্যতম প্রাচীন এই মুহুর্তটার শব
এগুলোর সমষ্টিই ছিল আদি থেকে পৃথিবীর একমাত্র অবয়ব

আমাদেরও আছে হিংসা, কোমলতা, গালি আর উপহার
কিন্তু রূপকথা ভুলে যাওয়া মানুষের ইতিহাসে হচ্ছে আবার
এখন ভাবো, যাকিছু অবশিষ্ট তা কেবল বেদনাবোধের দিন
গ্লানি আর একাকীত্বের অমৃত যেকোন কণ্ঠস্বরেই অসমৃণ

জীবনের ধমনীতে তোমার অলৌকিকরাই চলাচল করে
তুমিই মহান এই বিশ্বাস তুমি লিখে রাখো সবকিছুর উপরে
আগাগোড়া নায়ক তো ছিলই, খলনায়কও আসবে আর যাবে
বাজি পাল্টালেও গল্প অনড় থাকে মানুষের নিজস্বস্বভাবে

পৃথিবীতে সবসময়ই লোভ, উচ্চাকাঙ্খা, সাহস, মনের অমিল
ভালোবাসা, জোচ্চুরী, প্রায়শ্চিত্ত; এটুকুই জীবনের তহবিল
আমরা এ প্রজাতির শুরু থেকেই বেঁচে থাকার একই উদাহরণ
ক্রোধ, নষ্টামি, আর ঝগড়া; এগুলোই প্রতিদিনের রামায়ণ

আমাদের স্বপ্ন আছে, সিদ্ধান্তও; গাঁথাগুলো এখানের বর্ণণা
যদি পড়ো তুমিও এখানে আছো যা তোমার নিজেরই অজানা
তুমিই গল্পের নায়ক, তোমার চাওয়াটাই ইতিহাসের ভাষা
আজো তোমার ভয়, তোমার মোহ ও দেহরক্ষায় রক্তের দুরাশা

সবগুলো আল্লাই এখানে, কারণ স্রষ্টাতো নিজেরই ভেতর
শালা, এরা সব জুয়ার টেবিলে, ওরা লুটপাট করে পরস্পর্
এই ঈশ্বররা তামাক খায়, এসব ভগ্বানগুলো রাতের আধারে
এরা কাজেকামে অফিসে যায়, বা কখনো হেঁটে বাড়ি ফেরে

এরা সামাজিক পোকা, এদের উঠাবসা চরিত্রের গলিত অধ্যায়ে
এই আল্লাগুলো ধর্ম আর রাষ্ট্রের অত্যাচারে আগুন দেয় গায়ে
এরা সব সত্যি বলতে চায়, কিন্তু সত্য এক আজব মরীচিকা
আল্লারা জন্মায় আর মরে, মাঝের কালটা মানুষ নামে ডাকা

এরা কোন এক রাস্তার ভিড়ে, ওরা শীতার্ত, ঘায়েল কিবা রোগ
ভাবতেই পারে, জীবনের মানে অবশ্যই আরো কিছুটা ভাগযোগ
এসব আল্লা'র কোন নবী বা অবতার নেই, অবতরণই কেবল
এরা সামাজিক কীট, তাই জানে না কখনোই প্রকৃত ফলাফল

এসব লড়াই শুধু শ্বাস ও খাদ্যনালীতেই থাকে, পায়ুপথও হয়তো
এরাই সেই নব্যতর প্রাচীন, মহাকাল যাদের বানাবে খননরত...
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৩২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×