somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোকা ঘুমাল পাড়া জোড়াল, বর্গী এলো দেশে!!!

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একসময় ছোট বাচ্চারা যখন ঘুমাতে চাইতোনা, তখন ভয় দেখিয়ে তাদের ঘুম পাড়ানোর কৌশল হিসাবে মা ছড়া বলত, “খোকা ঘুমাল পাড়া জোড়াল, বর্গী এলো দেশে, বুলবুলিতে দান খেয়েছে, খাঁজনা দিবে কিসে…” অথবা কোন রাক্ষস-খোক্কসের গল্প শোনাত । আর সেই অজানা বর্গীকে রাক্ষসের মত কোন প্রানিরুপে কল্পনা করে ভয় পেয়ে বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়ত ।
আর এখন বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনের মত করে বলতে হয়, “যুগ পাল্টাইয়া গেছেনা…।” হ্যাঁ, যুগ তো অবশ্যয় পাল্টেছে । এই যুগে গরুর গাড়ির বদলে চলে বাস, ট্রেন, উড়োজাহাজ । লাঙলের জায়গা দখল করেছে পাওয়ার ট্রিলার, ডাংগুলি খেলার বদলে ঘরে বসে কম্পিউটারে খেলা হয় জাম্বি সূটার, এংরি বার্ড প্রভৃতি থ্রিডি গেমস । এই যুগের বাচ্চারা এখন আর ওইসব রাক্ষস-খোক্কস অথবা বর্গীদের ভয় পায়না । তাহলে এখন উপায় ? কি করে অশান্ত বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানো যায় ? সমস্যা যেহেতু হয়েছে, সমাধানও নিশ্চয় একটা আছে । এই নিয়ে মায়েদের এত দুশ্চিন্তার কিচ্ছু নেই । সবচেয়ে সহজ একটা সমাধান হল আমাদের দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহের ছাত্রসংগঠনগুলোর নাম নেওয়া । এইভাবে বলা যেতে পারে, “ সোনামণি এখন ঘুমাও, নইলে ছাত্রলীগ/শিবির/ছাত্রদল আসবে ।”– ব্যাস, হয়ে গেল । শুধু বাচ্চাদের নিয়ন্ত্রণ করাটাই না, বাচ্চার বাবাকেও একই ভয় দেখান যেতে পারে । বলা যেতে পারে, “আজ বাইরে যেওনা, রাজপথ আজ তাদের (ছাত্রলীগ/শিবির/ছাত্রদল) দখলে ।”- ব্যাস, এটাও হয়ে গেল, সারাদিন বউয়ের সাথে বসে টিভিতে স্টার জলসা আর জি-বাংলা দেখবে ।
কিন্তু দরিদ্র দুলাল মিয়ার দশ বছরের বাচ্চা রাব্বিকে হয়তো তার মা নব্য-বর্গীদের কথা বলে সাবধান করতে পারেনি, অথবা ঐ কোমল শিশুর মনে এত হিংস্রতার কথা কখনো কল্পনাতেও আসেনি । যার ফলে বাকৃবি’র ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে গুলিবিদ্ধ হয়ে অকালে প্রান হারাতে হল রাব্বিকে । মায়ের নাড়ি ছেঁড়া এই ধনকে পারবে কি ফিরিয়ে দিতে ? অবাল, বৃদ্ধ-বণিতা, যুবা কেউ কি এদের হাত থেকে রক্ষা পাবেনা ? কি অপরাধ ছিল রাব্বির ? কি অপরাধ ছিল বিশ্বজিতের ? তারা তো তাদের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিতে ভাগ চায়নি । কেন তাদের খুন করা হল ? জানি, এই প্রশ্নের কোন সুদুত্তর নেই । যেখানে রাষ্ট্রযন্ত্র নিজেই এইসব খুনি, সন্ত্রাসীদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয় সেখানে এইসব প্রশ্ন তোলা অবান্তর ।
এখানেই শেষ না, আরও আছে । আমাদের শিবিরকর্মী ভাইয়েরা রগকাটা পদবী নিয়ে বহাল তবিয়তে তাদের কৌশলী রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে । মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার নামকরা(!) প্রধান প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে কাছা মেরে তারা রাজপথে নেমেছে । পুলিশদেরকেও যেভাবে তারা পেটালো, অন্যসব তো তাদের কাছে পান্তা ভাত । সাবাস ! পূর্বখুনিদের (যুদ্ধাপরাধী) যোগ্য উত্তরসূরি ।
ক্ষমতাশূন্য অবস্থায় বর্তমানে ছাত্রদলকর্মীরা যদিও একটু অসচল । কিন্ত সরকার পরিবর্তনের পর ছাত্রদলকেও আমারা আবার একই রুপে দেখতে পাব । যা পূর্বেও আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম ।
আফসোস ! ছাত্ররাজনীতির গৌরবউজ্জ্বল আদর্শ, ইতিহাসকে ত্যাগ করে আজ তারা গল্পের ভয় পাওয়া বর্গীদের আধুনিক মাত্রায় সেজেছে । পার্থক্যটা হল গল্পের বর্গীদের কেবল বাচ্চারাই ভয় পেত, আর নব্য-বর্গীদের ভয় পায় দেশের ষোল কোটি মানুষ ।
আমাদের এই দেশে বর্গী আগমন চক্র কবে বন্ধ হবে, কে জানে ! কবে আমরা শান্তিতে সর্বত্র বিরাজ করতে পারব ? বুলবুলি ধান খেলেও খাজনা দেওয়ার আর ভয় থাকবেনা কবে ? কবে আসবে সেই সুদিন ? হয়তো আসবে, হয়তোবা আসবেনা । এই অনিশ্চয়তার মাঝেই আমাদের চলতে হবে, বাঁচার জন্যই শুধু বাঁচা হবে ।
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×