একটা বিষয় নিয়ে কিছুদিন খুব মাথা ঘামাচ্ছি। কিন্তু ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না কিভাবে পরিবেশন করবো। আমাদের দেশের শিক্ষা ও চাকুরী ব্যবস্থা নিয়ে খুব বেশী কিছু জানি না। মাথার ভেতর শুধু একটি বিষয়ই ঘুরপার খাচ্ছে তা হলো অনার্স মাষ্টার্স পাশ করে প্রাইভেট কোম্পনীর এজিএম ডিজিএম বা জিএম হওয়ার থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে সরকারী কোন অফিসের পিওন হতে পারা এদেশে অনেক বেশী ইফেক্টিভ।
অথচ এই বেসরকারী অফিসে অনির্দিষ্ট ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রম বিক্রি করে উপার্জিত অর্থ থেকে সরকারকে তারা ট্যাক্স দেয়, আর সেই ট্যাক্সের টাকায় সরকার দেশ চালায় তার প্রশাসন চালায়, অথচ সমাজের কোথাও তাদের বিন্দুমাত্র স্ট্যাটাস নাই, স্থান নাই। নাই পদ পদবীর কোন মূল্যায়ন। নাই অর্জিত শিক্ষা সনদের বিন্দু মাত্র ভেদ বিভেদ। সরকারী কোন অফিসের প্রথম আ দ্বিতীয় শ্রেনী বাদই দিলাম, একজন তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী যে ক্ষমতা রাখে বা প্রকাশ করে এই দেশে এই সমাজে, প্রাইভেট কোম্পানীর কোন কর্মকর্তা তার ধারের কাছেও যেতে পারে না। কিন্তু বিষয়টা এমন হওয়া কি সুশাষনের পরিপন্থী নয়?
শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী যখন একটি মানুষ চাকুরী করার যোগ্যতা অর্জন করে, তখন সমাজে তার সম্মানও সেই অনুযায়ী ওঠা নামা করে। কিন্তু কম শিক্ষিত একজন মানুষ যখন বেশী শিক্ষিত মানুষের উপর খবরদারী করে, তখন শিক্ষার কি মূল্য থাকে? চেইন অব কমান্ডে কিভাবে শৃঙ্খলা থাকে? আর করবে নাই বা কেন? ঘুষের অপর নাম এখন স্পিডমানি। এই স্পিডমানি বড় বড় কর্মকর্তারা সরাসরী নেন না। নেন ঐ তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী মারফত। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে সে কেনো তার অফিসারকে সম্মান করতে যাবে? আর যে নিজের অফিসারকেই সম্মান করে না, সে বাইরের কাওকে তোয়ক্কা করার তো প্রশ্নই উঠে না!
এভাবেই ধীরে ধীরে দেশের মেধা মগজ মূল্য না পেতে পেতে ডাইভার্ট হয়ে ভিন দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে!! সুশাসন বিঘ্নিত হচ্ছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যহত হচ্ছে। যেমন গ্রামের একজন প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক, যে কিনা অধিক সম্মান পাবার যোগ্য, সেও ঐ গ্রামের অশিক্ষিত বা অর্ধ শিক্ষিত মেম্বার বা চেয়ারম্যানের কথায় উঠে বসে। উঠতে বসতে হয়। নইলে সমাজে চলা যায় না।
দেশের একজন নাগরিক হিসাবে আমার কি অধিকার, আমার কি প্রাপ্য সেই বিচারটা হয়, আমি কি করি তার উপর ভিত্তি করে। আমি যদি কোন ক্ষমতা বান ব্যক্তির ভাগ্নে বা ভাস্তে হই, তো আমার এক ধরণের অধিকার, আর যদি আমি তেমন কিছু না হই, তবে অধিকার কি জিনিষ সেটাই বোঝা যায় না। আমরা আমাদের মূল্যায়ন করতে শিখিনি আজো। আর কবেই বা শিখবো সেটাও জানি না তবে আদৌ যে শিখবো না, তা বুঝি .... এভাবেই চলতে থাকবে, ডিগনিটি হীন জীবন যাপন!!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৫