somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বর্তমান ই-ইসলাম চর্চা, যা নিয়ন্ত্রণ জরুরী!

০৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বর্তমানে আমাদের দেশে ইসলাম নিয়ে চর্চা নিঃসন্দেহে আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। চর্চা বলতে আমি যেটা বুঝাতে চেয়েছি সেটা হলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে হাদিস কোরআনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষন। স্যাটালাইটের এই যুগে যেহেতু তথ্য আদান প্রদান খুবই সহজ একটি বিষয়, তাই অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ধর্ম সংক্রান্ত অনেক তথ্যই খুব সহজেই আমরা পেয়ে যাই। এছাড়া রেডিও টেলিভিশনে হুজুরদের উপস্থিতিও বেড়েছে শতগুন। আগে ছবি তোলা নিয়ে হুজুরদের মধ্যে যে আপত্তি কাজ করতো, এখন সেটা আর অনেকাংশেই কাজ করে না। সুতরাং হাদিস কোরআন নিয়েই তাঁরা ক্যামেরার সামনে চলে আসেন। সুতরাং এই নেটের যুগে গুগলের যুগে, নিজে নিজে জ্ঞ্যান চর্চা করা বেশ সহজ।

এই ধরণের স্যাটেলাইট ভিত্তিক জ্ঞ্যন চর্চার একটি নেগেটিভ দিক হলো - বিভক্তি। অর্থাৎ কোন হুজুর বলেন এটা করা যাবে, কোন হুজুর বলেন ওটা করা যাবে না। যেমন উদাহরণ স্বরুপ বলছি- কোন হুজুর বলেন তারাবিহ ২০ রাকাত, কোন হুজুর বলেন ৮ রাকাত, কেউ বলেন আমিন জোরে বলতে হবে, কেউ বলেন আমিন আস্তে বলতে হবে- এমন বহু বিষয়ে বাংলার মোমিন মুসলমান আজ তথ্য বিভ্রান্তির বেড়া জালে আবদ্ধ।

লক্ষ্য করুন আজ থেকে ১৫ বছর আগেও কিন্তু এমন সব বিষয় নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ মোমেন মুসলমান ইমাম বা খতিবগনের মধ্যে কোন রুপ বিরোধ বিভক্তি ছিলো না। আজকে সমাজে যে বিদাত আর শিরিক এর লিষ্ট এতো বেশী লম্বা হয়েছে, যে ঈমান আমল কি হচ্ছে বা না হচ্ছে বোঝার কোন উপায়ই নাই। অথচ সমাজে একটা ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না, যাকে কেউ বিশ্বাস করতে পারে। আমরা কঠিন ভাবে সহিহ শুদ্ধ রুপে ইসলাম চর্চা করতে মরিয়া হয়ে উঠছি এই স্যােটেলাইটের উপর প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে, কিন্তু বর্তমান সমাজে প্রতিটি পেশার মানুষের মধ্যে ব্যবসায়িক ফায়দা লোটা ছাড়া সার্ভিসটা খুবই কম। আপনি খাঁটি মধু পাবেন না, খাঁটি ঘিঁ পাবেন না, খাঁটি চিকিৎসা পাবেন না - সর্বত্রই ব্যবসা আর ব্যবসা। এমনকি অধিকাংশ মসজিদ গুলোও আজ ব্যবসার সোর্স হিসাবে পরিগণিত হয়েছে,যেখানে খতিব থেকে শুরু করে সবাই এর অংশিদার।

এহেন পরিস্থিতিতে আমার মতে আমাদের রাষ্ট্রে একটি জাতীয় শরীয়াহ ও মাসআলা মাসায়েল বোর্ড গঠন করা অতীব জরুরী। যেখানে বিজ্ঞ এবং আস্থাভাজন আলেম উলামাগন দেশের সাধারণ মোমেন মুসলমানের জন্যে ধর্মীয় কর্তব্য সমুহ নির্ধারণ করবেন। পাশাপাশি কারা বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন সেই সব আলেম উলামাগনের একটা তালিকা থাকবে,যা নিয়মিত মনিটর হবে, তাঁরা যেটা বলবেন, তার বিপরীতে কোন কথা জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হবে না অর্থাৎ একেক মসজিদের একেক ইমাম তার নিজের খেয়াল খুশি মতো কোন ফতোয়া বা মাসআলা দিতে পারবে না। মসজিদ, ইউটিউব, ফেসবুক বা ওয়াজ মাহফিল যেখানেই হোক না কেন, তিনি নিজের মতো করে নিয়ম কানুন বাতাতে পারবেন না। ব্যাক্তিগত ভাবে কে কি আমল করলো সেটা ধর্তব্যের বিষয় নয়, কিন্তু ঢালাও ভাবে যে যার মতো করে কোরআন হাদিসের ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করে ফাতোয়া দিতে পারবেন না। দিলেই তিনি শাস্তি যোগ্য অপরাধে অপরাধী এবং দন্ডিত হবেন। তা না হলে সামনে আরো ভয়াবহ দিন আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছে।

ফেসবুক বা ইউটিউব খুল্লেই নিত্য নতুন হুজুরদের নিত্য নতুন বয়ান! শুনতে শুনতে মানুষ আজ দিকভ্রান্তের চরম পর্যায়ে পৌছে যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ নিজেদেরকে এতোই বিজ্ঞ আর আলেম ভাবছেন যে তারা বর্তমানে বসে সেই সময়ের সাহাবী(রাঃ) দের ভুল ধরতেও পিছ পা হচ্ছে না।(নাউজুবিল্লাহ)। যেভাবে খুশি সেভাবে অপরকে বুঝানোর চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় যদি মাসআলা মাসায়েল ও ফাতোয়া দেয়ার ব্যপারে যদি নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা হয়, তবে সমাজে বিশৃঙ্খলা আরো বাড়বে।

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২১ সকাল ১০:৪১
৭টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×