somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক রিএক্ট- এর পেছনে ভুমিকা কাদের??

১১ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মা দিবসে চঞ্চল চৌধুরীর পোষ্টে বিভিন্ন ধরণের আগ্রাসী মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এম আর ১৫ ভায়ের করা পোষ্ট দেখে মাথায় কিছু ভাবনা আসলো। তিনিও তার পোষ্টে বলেছেন বাংলাদেশের মুসলিমগন কখনোই এতটা সাম্প্রদায়িক রিএক্টর ছিলো না। তবে আজ কেন এমন হচ্ছে? কোন পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আচরণ আজ এতোটা উগ্র হতে বসেছে।

একটা সময় ছিলো যখন এই দেশে মূলত দুই ধরণের মুসলিম পাশপাশি শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে বসাবাস করতেন। একদল ছিলেন পীর মুরীদ পন্থী আরেক দল ছিলেন তাবলীগ জামাত পন্থী। মাজহাব নিয়ে তাদের মধ্যে কোনই কোন্দোল ছিলো না। বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের মধ্যে মতের পার্থক্য থাকলেও তাদের বসবাস ছিলো শান্তিপূর্ণ। শ্রদ্ধা ভক্তির তেমন কোন অভাব ছিলো না। সেই সময় মুসলমানেরা নিয়মিত মিলাদ ক্বিয়াম করতো। অত্যান্ত মর্যাদার সাথে ধনী গরীব নির্বশেষে শবে বরাতকে জাঁক জমক পূর্নরুপে পালন করতো। তারাবির রাকাত সংখ্যা নিয়ে ছিলো না কোন বিভেদ। নামাজে হাত বাঁধার স্থান নিয়ে ছিলো না কোন ক্যাচাল, নারী পুরূষের নামাজ পদ্ধতি এক না কি ভিন্ন, আমিন জোরে না আস্তে বলতে হবে, তাবিজ হিসাবে আল্লাহর কালাম ব্যবহার করা যাবে কি না সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন ইস্যুতে ছিলো না কোন মারামারি। যার যার বিশ্বাসের স্থান থেকে সে সে আমল করতো। কেউ কাওকে এসব নিয়ে মন্দ কথা বলতো না। এর মাঝে আবুল আলা মওদুদি তত্ব, ওহাবী তত্ব ধীর গতিতে চলতো। এর পর পরই অনলাইনের হাত ধরে আবর্ভিাব হলেন কোর্ট প্যন্ট টাই পরিহিত একজন আলেম। যার লেকচারের মাধ্যমে তৎকালীন যুব সমাজের মধ্যে ইসলাম চর্চা নিয়ে ব্যপক পরিবর্তন সাধিত হয়।

এই সময়ে মাযহাব মানার প্রতি বিদ্বেষ, পীর আউলিয়াগনের প্রতি বিষোদগার, বুখারী ছাড়া আর সব হাদিস গ্রন্থের প্রতি অবজ্ঞা সহ নানা বিধ ভাবে ইসলাম পালনের পদ্ধতি নিয়ে ব্যপক পরিবর্তন সাধিত হয়। পাশাপাশি আহলে হাদিস বা সালাফী নামে একদল মুসলিমের অনলাইন ভিত্তিক প্রচার প্রসার ঘটতে থাকে দ্রুত। আমাদের দেশে প্রচলিত ধর্মীয় ভাব গাম্ভির্যপূর্ণ অনেক আমলই তারা বিদাত, শিরক কুফরি খেতাব দিয়ে মুসলমানদের ভিতরে চরম ফেতনা ও বিদ্বেষ প্রসার শুরু করে। ইমাম আবু হানিফা সহ বিভিন্ন মণিষীগনও তাদের আক্রমন থেকে রেহাই পায় নাই। নতুন করে হাদিস নিয়ে গবেষনা করে তারা তাদের বিশ্বাস আক্বদিা আমাদের সাধারণ কোমলমতি উঠতি বয়সি নবীন যুবকদের মগজে মননে অনলাইনের সুবিধা নিয়ে খুব সহজেই প্রবেশ করতে থাকে। পীর আউলিয়াগনের হাত ধরে আসা ইসলাম ও এই সংক্রান্ত তাঁদের লেখা বই বা কিতাব তথা এলেম সমুহ উক্ত কিতাবেই সিমা বদ্ধ ছিলো। পূর্বের আলেম ওলামাগনের লিখিত ও গবেষনা লব্ধ বহু ইসলামী কিতার তখনো ইন্টারনেটে অনুপস্থিত, কিন্তু নতুন করে আবির্ভুত বিভিন্ন নামধারী আলমে উলামাদের ব্যাখ্যা বিশ্লেষানে ভরা তথ্য উপাত্ত সব ইতিমধ্যে অনলাইনে মওজুদ। একটি চক্র এর পেছনে ঠিকই কাজ করে গেছে। এই সুযোগেটাকে কাজে লাগিয়ে তথাকথিত আহলে হাদিস/ সালাফি নামধারী মুসলিম গন নিজেদের ধ্যান ধারণার পসার ঘটাতে থাকে দ্রুত।

এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে অনেক মুসলিমই তথাকথিত নব্য মুসলিম থেকে নিরাপদ নয়! শুধু মাত্র ভিন্ন মত পোশনের কারণে আল্লামা ফারুকী সাহেবকে নির্মম ভাবে জবাই করে হত্যা করে তথাকথিত মুসলিম নামধারী একদল অমানুষ! হোলি আর্টিজানে যে হামলা-তাও এই জঙ্গিবাদের অপর উদাহরণ। এভাবেই বর্তমানে ইসলামের মধ্যে সুকৌশরে জঙ্গিবাদের চাষ করা হচ্ছে। আপনি দেখেন মিলাদ ক্বিয়াম করলে বিদাতি, মাজার জিয়রত করলে তাকে মাজার পূজারী - এরকম আক্রমানত্মক বিভিন্ন আখ্যা ব্যাখ্যা দিয়ে বর্তমানে একদল তথাকথিত ইসলামের অনুসারীগন কোমল মতি উঠতি বয়সী তরুনদের আবেগ নিয়ে খেলা করছে। আগে কিন্তু কখনোই এইভাবে একজন মুসলিম অপর মুসলিমকে আঘাত করতো না, কিন্তু এখন কোন সম্মান তো দূর, একজন মুসলিম ভিন্ন মত পোষন কারী মুসলিমকে কাফের মুরতাদ বলতে বিন্দু মাত্র দ্বিধা করে না। অর্থাৎ তারা চরম ভাবে মানসিক ভাবে মগজ ধোলাই কৃত সেই সব অতি আগ্রাসী তথা কথিত আলেম দ্বারা।
এহেন পরিস্থিতিতে যেখানে একজন মুসলিমই অপর মুসলিম কর্তৃক চরম ভাবে নিগৃহিত ও অপমানিত হচ্ছে, সেখানে চঞ্চল চৌধূরী যে অপমানিত হবেন না- সে কথা কি করে বলি। আর বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে মনে হয় না, এই পরিস্থিতির অবনতি ছাড়া উন্নতি হবে!! আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুণ।


সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:০৫
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিসের সনদের মান নির্ধারণ করা শয়তানী কাজ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪০



সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×