আপনি যদি মদিনা শরীফে মসজিদে নববীতে সোম বারে এবং বৃহস্পতি বারে আছরের নামাজের পর মাগরীবের নামাজ পর্যন্ত অবস্থান করেন, তাহলে আপনি দেখতে পাবেন কত সুন্দরভাবে তাঁরা মুসল্লিদের জন্য ইফতারের আয়োজন করে। আপনি বসে আছেন, আপনার সামনে দিয়ে প্লাস্টিকের চাদর বিছিয়ে দেবে। যেনো নামাজের জায়গা পরিষ্কার থাকে। তার পর কার্টন ভর্তি প্যাক করা পানির বোতল, খেজুর, দট দই, সবার সামনে সামনে দিয়ে যাবে। সে এক মনোহর দৃশ্য। রাসুল (সাঃ) এঁর রওজার পাশে বসে, মদিনার মেহমান হয়ে ইফতার করছেন, ভাবতেই আবেগ আপ্লুত হয়ে ওঠে অনেকে। প্রতি সোম এবং বৃহস্পতি বারে এই ব্যবস্থা। কে রোজা আছে কে নাই, সেটা তো আর জানা যায় না, তবে প্রায় মুসল্লির সামনেই থাকে এই ইফতারির আয়োজন। কারণ নবী করিম সাঃ এই দুই দিন রোজা রাখার ব্যপারে বলে গেছেন।
মা আয়ি’শাহ (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সাঃ) সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখাকে প্রাধান্য দিতেন।’ (তিরমিযী : ১০২৭)।
আবু কাতাদাহ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে সোমবার দিন রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং এই দিনেই আমাকে নবুওয়াত প্রদান করা হয়েছিলো অথবা, এই দিনে আমার উপর (ক্বুরআন) নাযিল করা হয়েছে।’ (সহীহ মুসলিম : ১১৬২)।
আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাঃ) সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখতেন। একদিন তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখেন কেনো? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআ’লা সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন প্রত্যেক মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী সম্পর্কে (আল্লাহ বলেন), তাদেরকে ছেড়ে দাও, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। (ইবনে মাজাহ : ১৭৪০)।
রাসূল (সা.) বলেছেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর নিকট বান্দার আমল পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, রোযা থাকা অবস্থায় যেন আমার আমলনামা (আল্লাহর) কাছে পেশ করা হয়। (তিরমিযী : ৭৪৭)।
আমাদের দেশের কোন মসজিদে এমন ভাবে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারে এমন ইফতারের আয়োজন হয় বলে আমার জানা নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮