somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতোটা আত্মবিশ্বাসী আপনি ?

১১ ই মে, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চার্লি চ্যাপলিন বিখ্যাত কমিক অ্যাক্টর। নির্বাক মুভির যুগের অসাধারণ সব হাস্যরসাত্মক কান্ডকারখানা করে হাসিয়েছেন বিশ্বের অনেক মানুষকে। চার্লি চ্যাপলিন তার জীবন সম্পর্কে বলতে গিয়ে একবার বলেছিলেন, নিজের ওপর আপনার বিশ্বাস থাকতে হবে, এটাই হলো সিক্রেট। এতিম অবস্থায় আমি যখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম আর খাবার খুজতাম এমনকি তখনো আমার মধ্যে বিশ্বের নামকরা একজন অভিনেতা হিসেবে ভাবতাম আমি নিজেকে। আমার মধ্যে সব সময় এক ধরনের উৎসাহ আর আবেগে পরিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করতো যেটা তৈরি হতো আমার নিজের ভেতরের আত্মবিশ্বাস থেকে। এটা ছাড়া আসলে আপনাকে পরাজিতই হতে হবে, বলেছিলেন চার্লি চ্যাপলিন।

আত্মবিশ্বাস দুই ধারেই ধারালো তলোয়ারের মতো। যারা আমাদের নেতৃত্ব দেন তাদের মধ্যে এ গুণটিকে দেখতে আমরা ভালোবাসি। নিজেদের প্রতি তাদের বিশ্বাস দৃশ্যত নিশ্চয়তার সঙ্গে দিকনির্দেশনা দেয়ার প্রবণতা আমাদের ভালো অনুসারী হিসেবে তৈরি করে। ভারসাম্যপূর্ণ আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা সত্যিই একটি বড় গুণ। অনেক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসকে ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করলেও স্বল্প আত্মবিশ্বাস খুব একটা গুরুত্ব পায় না। বাস্তবে মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের মতো আত্মবিশ্বাসহীনতাও আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটা কেবল ব্যক্তিগত ক্ষতির ব্যাপার নয় বরং একজন নিয়োগকর্তাও তার স্টাফের কাছ থেকে পুরোপুরি সুবিধা পান না।

সে ক্ষেত্রে যথাযথ আত্মবিশ্বাসী ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত? দৃশ্যত আত্মবিশ্বাসী লোকজন অন্যের কথা শোনে, বিষয়টা নিয়ে ভাবে এবং বিষয়ের পূর্ণাঙ্গ ধারণা নেয়। আপনার মধ্যে কোনো ব্যাপারে মারাত্মক আত্মবিশ্বাস কাজ করতে পারে আবার কোনো ব্যাপারে আপনি হয়তো মোটেও আত্মবিশ্বাসী নন। নিজের পছন্দ অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে হলে যথাযথ আত্মবিশ্বাস বজায় রাখাটা খুবই দরকারী। নয়তো পথের মধ্যে হুমড়ি খেয়ে পড়তে হবে আপনাকে। তাই নিজেকে খুটিয়ে দেখুন আর সেই অনুযায়ী পরিবর্তন আনুন নিজের মধ্যে।

আপনি মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী যদি
> বর্তমান বেতনের চেয়ে দ্বিগুণ স্যালারিতে চাকরির জন্য অ্যাপলাই করেন।
> বিশ্বাস করেন প্রত্যেকের চাইতে দক্ষ ও মেধাবী আপনি।
> পা আপনার ডেস্কের ওপর তুলে বসেন।
> নিজের গলার শব্দকে খুবই ভালোবাসেন আপনি।
> ইন্টারভিউয়ের সময় নিজের শক্তিশালী দিকগুলোকে বাড়িয়ে দেখান ও কোনো দুর্বলতা আছে এটা স্বীকার করেন না।
> ধরেই নেন প্রত্যেকে আপনার কথাই ভাবছে।
> হ্যান্ডশেক করার সময় অপর ব্যক্তির আঙুল গুড়িয়ে দিতে পছন্দ করেন আপনি।
> অন্যদের মতামত সম্পর্কে জানতে কখনোই আপনি আগ্রহী হন না।
> লাইমলাইটে আসার সুযোগটা কখনোই মিস করতে চান না আপনি।
> নেগেটিভ ফিডব্যাককে মিথ্যা প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন আপনি।

এ ব্যাপারে যা করতে পারেন
> নিজের অবস্থান সম্পর্কে সজাগ থাকুন, বেশি কাছাকাছি হবেন না।
> ভলিউমটাকে অ্যাডজাস্ট করুন, কমিয়ে দিন।
> কথা বলার সময় নিচুস্বরে বলুন।
> আরাম করে বসুন এবং শুনুন। বিরক্ত না করেই শুনুন।
> কথা বলার আগে থামুন। মুখ ব্যবহারের আগে মাথাটা খাটান।
> আপনার দৃঢ় উক্তির পেছনে পর্যাপ্ত তথ্য আছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন।
> শান্ত ব্যক্তিত্বের লোকজন কিভাবে কাজ করছে সেটা দেখুন।
> বাজে সিদ্ধান্তের ঝুকি কমাতে পারেন অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরামর্শ করে।
> অন্যদের ওপর আপনার ইফেক্টকে বুঝতে বারবার ফিডব্যাক নিন।
> স্বীকার করুন আপনারও ভুল হতে পারে এটা স্ট্রেংথের লক্ষণ, দুর্বলতার নয়।
> উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আপনার নিজের কাজের বিচার করুন।
> হাসুন। অন্যদের রিলাক্স হতে সাহায্য করুন।

আপনার আত্মবিশ্বাস কম যদি
> একই বেতনে দুই বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেন।
> ধরে নেন প্রত্যেকেই আপনার চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান।
> ইন্টারভিউয়ে চাকরির যেসব ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হয় তার সব পয়েন্টই আপনার কাছে নতুন মনে হয়।
> ফিসফিস করেন কথা বলার বদলে।
> কথোপকথনের সময় চোখের কন্টাক্ট এড়িয়ে যান।
> হ্যান্ডশেক করার সময় হাতকে ভেজা কাপড়ের মতো এদিক ওদিক করেন।
> যতোটা সম্ভব কম জায়গা নিয়ে থাকতে চেষ্টা করেন।
> আপনার মতামতের কোনো গুরুত্ব নেই - এটাই বিশ্বাস করেন।
> কোনোকিছুর প্রেজেন্টেশন দেয়ার সময় মনে হয় খাবি খাচ্ছেন।
> আপনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে এটা বুঝতে ব্যর্থ হন।
> বেশির ভাগ সময় যা করতে চান নিজের ভয়কে সামনে এনে সেটা থেকে বিরত হন।

এ ব্যাপারে যা করতে পারেন
> যতোক্ষণ না তৈরি করতে পারেন ততোক্ষণ বানানো আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে যান। আত্মবিশ্বাসীর অভিনয় চালিয়ে যান যেটা কেবল আপনিই বুঝবেন যে আপনি তা নন।
> কথার ভলিউম বাড়িয়ে দিন সেই সঙ্গে যে গতিতে বলছেন তা কিছুটা কমিয়ে আনুন।
> চোখে চোখ রেখে কথা বলুন, তার মানে এই নয় একেবারেই চোখ অন্যদিকে নেবেন না। বাক্য শেষে বিরতি দিন। এটা আপনার কথার গুরুত্ব তৈরি করে।
> এলোমেলো নড়াচড়া বাদ দিন। মাথা চুলকানো ও এ জাতীয় আত্মবিশ্বাসহীন আচরণ ত্যাগ করুন।
> হতে পারে, সম্ভবত - এ জাতীয় শব্দের বদলে প্রাণশক্তিসম্পন্ন শব্দ যেমন, হবে, অবশ্যই, নিশ্চিতভাবে ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
> প্রতিটা ক্ষেত্রে যখনই আপনি ভীতিকর পরিস্থিতি সামাল দেন, যা করেছেন সে জন্য নিজেকে বাহবা দিন ও বাকিটা তুলে রাখুন অভিজ্ঞতা হিসেবে।
> কিসে আপনি ভালো তার একটা লম্বা তালিকা বানিয়ে রাখুন নিজের কাছে, যখন নিজেকে দুর্বল বা অসহায় মনে হয় সেটা পড়ুন।
> এটা জানুন, বাহ্যিকভাবে আত্মবিশ্বাসী লোকজনও মাঝে-মধ্যে নার্ভাস হয়ে যান।

তামিম আব্দুল্লাহ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ১:২৮
১০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×