somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্টনার টেলিফিল্ম

২৪ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক
ঘোষ আর দত্ত দুই বন্ধু। এক পাড়াতেই বাস। দুজনেই রিটায়ার্ড এবং বিপত্নীক। ছেলে, বৌ এর সংসারে বেশ মানিয়েই আছেন। সংসারের কূট-কাচালিতে কেউ কান দেয়না। প্রতিদিন বাজার ফেরার পথে দুজনের দেখা ও আলাপ। যে যার সময় মত একটু আগে ও পরে বাজারে বেরোয় তবে বাজার সেরে ফেরেন একসাথে। দুটি রসিক মন কিঞ্চিত রস সঞ্চয় করে আবার যে যার ঘরে ফেরেন। সকলে মজা করে বলে - রাজযোটক- । তা সেদিনও গল্প করতে করতে থলে হাতে দুজনে ফিরছেন, হঠাৎ ঘোষ জিজ্ঞেস করে,
ঘোষ--- আচ্ছা দত্ত, তোমার কি মনে হয়না, আজকালকার মানুষ যেন একটু বেশী আলাপী হয়ে যাচ্ছে?
দত্ত--- হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন বলতো?
ঘোষ--- এই যে ফোনের এত ডাকাডাকি হাঁকাহাঁকি এতো আলাপেরই বাঁশি কিনা বল?
দত্ত--- হা,হা। আরে না না। তা নয়, তা নয়। তুমি বড্ড সোজা। আসলে কি হয়েছে কি জান? আজকাল মানূষ আর কেউ কারুর মুখ দেখতে চায় না। সামনে বসিয়ে , খাবার সাজিয়ে কথা বলতে চায় না । তাই এসব ব্যাবস্থা। মুখ দেখতে হোল না, আসুন বসুন করতে হোল না, অথচ বিনা ঝঞ্ঝাটে কেমন ভদ্রতা রক্ষা হয়ে গেল। কেমন কর্তব্য পরায়ন হওয়া গেল বল?
ঘোষ--- তা, তুমি এতসব বুঝলে কি করে?
দত্ত--- কেন, তুমি বোঝনা? শোননি আমাদের বরাট দম্পতির কথা? ছেলে নাকি বালিগঞ্জ থেকে টালিগঞ্জে সকালে বিকেলে নিয়ম করে প্রতিদিন মা-বাবাকে দু দুবার ফোন করে। এবেলা ছেলে করেতো ওবেলা বৌ। একেবারে রুটিন করে নিয়েছে। অথচ বছরান্তে বিজয়া দশমী ছাড়া দেখাই হয়না। অর্থেরতো ওনাদের কোন প্রয়োজন নেই। আরে ওনাদের টাকাই খায় কে? সারা জীবন দুজনেতো কম রোজগার করেননি। ছেলেতো মা-বাবাকেও টেক্কা দিয়েছে। শুনছি নাকি সামনের বছর সমস্ত দান-টান করে, দুজনায় পন্ডিচেরী আশ্রমে চলে যাবেন।
ঘোষ--- কেন, দান করতে যাবে কেন? ছেলেকে দিয়ে দিলেইতো পারে।
দত্ত--- নাঃ, ওরা নেবেনা। ওদের নাকি প্রয়োজন নেই।
ঘোষ--- তাহলে ছেলে-বৌ বেশ ভালই, কি বল?
দত্ত--- হয়ত বা

( দুই )
বিকেলে আবার দেখা হয় বাস স্ট্যান্ডে। একজন আসে নাতিকে নিতে আর একজন আসেন নাতনিকে নিতে। বাস থেকে নেবেই দুই বিচ্ছু, দুই বুড়োর কাঁধে ঝুপঝুপ করে বই এর ব্যাগ, জলের বোতল চাপিয়েই বাড়ীর দিকে ছুটতে শুরু করে। তাদের দুটিকে বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছে আবার দুজনে বেরিয়ে পড়েন সান্ধ্য ভ্রমনে। সংসারের এইটুকু সাহায্য করতে পেরে দুজনেই নিজেদের কৃতার্থ ভাবেন। কিছুক্ষন এদিক-ওদিক ঘুরে ফিরে গিয়ে বসেন বিনুর চায়ের দোকানে। বিনুও তার নিয়মিত খদ্দের এই দুই দাদুকে খুব খাতির করে। চা দিতে দিতে বিনু বলে,--- দাদু, আজ খুব ভাল ঘুগনি বানিয়েছি খান। কোনদিনও বা হিং এর কচুরী, নাহলে টোস্টতো আছেই। বিকেলের টিফিনটা দুজনেই বেশ মোজ করে সারেন। এ নিয়ে নিজেরাই নিজেদের মধ্যে হাসাহাসিও করেন।
দাদু--- আরে পকেটে টাকা আছে, বয়স হয়েছে তাবলে কি খাবনা? হ্যাঁরে বিনু, আমাদেরতো স্ত্রীও নেই , তুই ছাড়া আর কেই বা আমাদের এত খাতির করে খওয়াবে বল?
বিনু--- আমি আর কি খাওয়াচ্ছি দাদু? আপনাদের পয়সাতেই আপনারা খাচ্ছেন।
দাদু--- দূর বোকা, তুই কিচ্ছু বুঝিস না। আজকাল টাকা দিলেও ভাল খাওয়ার মেলে কৈ? ---" আর সময় নষ্ট না করে, মনের স্ফূর্তিতে দুজনে গিয়ে যোগ দেয় পরের আড্ডায়। সেখানে আরও কয়েকজনও জমা হয়। তবে ঘোষ আর দত্তের জোড় বাঁধা। প্রতিদিন খেলা সেরে নিয়ম করে তর্ক করতে কর‌তে বাড়ীর রাস্তা ধরেন। ঠিক খাওয়ার আগে বাড়ী ফেরেন। কোন ঝুট ঝামেলায় নেই। এই বয়সেও নিজেদের স্বাবলম্বী রেখে দিব্যি দিন কাটিয়ে দেন। সংসারের চাপা অসন্তোষ কানে ঢোকারও সময় পায় না। তবে এরই মাঝে যেটুকু কানে আসে তাতেই বর্তে যান।

( তিন )
পরপর দুদিন বাজারে ঘোষের দেখা নেই। স্কুলও ছুটি। তাই বিকেলেও দেখা হয় না। বাড়ীতে গিয়ে খবর নিতেও ঠিক মন চায় না। শুনেছি ছেলের বৌটি নাকি অত্যন্ত মুখরা। আমার ঘরেও ওরকম একটি আছে কিনা, তাই এসব ব্যাপার এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করি। শেষ পর্যন্ত দোন মোন করতে করতে চলেই যাই খবর নিতে। বাইরে থেকেই হাঁক পাড়ি,
দত্ত---ঘোষ বাড়ী আছ নাকি হে? ও ঘোষ , ঘোষ------------- হি, হি করে কাঁপতে কাঁপতে কোন রকমে এসে দরজা খোলে।--- " কি হোল কি? জ্বর বাধালে কি করে? বাড়ীর আর সকলে কই?-
ঘোষ--- সোনুটার ছুটি, তাই ওরা কদিনের জন্য দার্জ্জিলিং বেড়াতে গেছে।
দত্ত--- তা, তোমার যে এই অবস্থা সে খবরটা দিয়েছ?
ঘোষ--- কি করে দেব?
দত্ত--- কেন? একটা ফোন করলেই পারতে।
ঘোষ--- ওরা, কোথায় উঠেছে কি করে জানব?
দত্ত--- ও এইরকম অবস্থা। তা তারা গিয়েও একবারটি তোমার খোঁজ খবর নেয়নি?
ঘোষ--- এখনও তো নেয়নি। এদিকে কাল থেকে কাজের মেয়েটিও আসছেনা।
দত্ত--- দেখ এটাও হয়ত তোমার বৌমার-ই কারসাজি।
ঘোষ--- তা, তুমি খাবে কি? চল চল ডাক্তারের কাছে চল।- একটা রিক্সা ডেকে, কোনমতে রিক্সাওয়ালা শুদ্ধু ধরাধরি করে, পাড়ারই ছেলে সবে মাত্র ডাক্তার হয়ে, পাড়াতেই চেম্বার খুলেছে, সেই সুব্রতর কাছেই নিয়ে যাই। রোগীর অবস্থা বোধহয় ভাল ঠেকেনা, তাই সামান্য ওষুধ দিয়ে বলে,--- এই ওষুধগুলো দিয়ে দিলাম। যদি বিকেলের মধ্যে কোন উপকার না বোঝেন তাহলে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যাবেন।-" কি আর করব ? ডাক্তার দেখিয়ে একটা পাউরুটি আর দুটো মিষ্টি রেখে খেতে বলে চলে আসি।
দত্ত--- আমি এখন যাই কেমন। আবার পারলে বিকেলের দিকে একবার আসব। এদিকে আমার হয়েছে আর এক জ্বালা। বৌমার শরীরটা খারাপ। তাই ঘরের বাইরের সব সামাল দিতে দিতে এ দুদিন আর তোমার খোঁজই নিতে পারিনি। যাই, ওদিকে আবার একটু এদিক - ওদিক হলেই বৌমা একেবারে হুলুস্থুলি বাঁধিয়ে দেবে।

( চার )
হন্ত-দন্ত হয়ে ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই তুলকালাম কান্ড ।
বৌমা--- কোথায়, কোথায় ঘুরে বেড়ান? দুটো দিন পড়ে রয়েছি একটু সাহায্য করলেওতো পারেন। ভাল থাকলেতো কারুককে কূটোটিও নাড়তে হয়না। গায়ে বাতাস লাগিয়েই দিন কেটে যায়।
দত্ত--- না, বৌমা, শোন শোন। ঘোষের বাড়ীতে কেউ নেই, ওর খুব জ্বর তাই একটু খবর নিতে গেছিলাম।
বৌমা--- ঘোষের আর বোসের খবর রাখাইতো আপনার কাজ। ঘরের লোক খেল কি মরল, সে খবর আর কে রাখে? ------- অযথা এদের সাথে কথা বলা মানেই নিজের সন্মানহানি। তাই চুপ করে যাই। রনি ভয়ে ভয়ে দাদুর গা ঘেঁষে এসে দাঁড়ায়। ওকে গল্প করে করে, স্নান করিয়ে, খাইয়ে, ঘুম পাড়িয়ে বাকি সব কাজকম্ম সেরে, কাজের মেয়েটি এলে ওকে সব বুঝিয়ে, যাই ঘোষের খবর নিতে।

( পাঁচ )
গিয়ে দেখি হাট করে দরজা খোলা। দ্রুত ঘরে প্রবেশ করি। খাটের একপাশে মাথা ঝুলে রয়েছে। ধূম জ্বর। অবিরাম প্রলাপ বকে চলেছে। আগে মাথাটা ঠিক করে ,গায়ে হাত দিয়ে ডাকি, কোন সাড়া নেই। ভয় হয় । সাথে সাথে বেরিয়ে মাঠের পাশেই "তরুণ" সংঘে গিয়ে খবর দি। জনা ছয়েক ছেলে বসে ক্যারাম খেলছিল। এক ডাকেই ছুটে আসে। তারপর নিজেদের মধ্যেই আলাপ আলোচনা করে দুজন চলে যায় ডাক্তার সুব্রতকে ডাকতে। বাকীরা এসে রোগীর প্রয়োজন মত সেবা শুরু করে দেয়।ডাক্তার ঘরে ঢুকেই হাসপাতালে রিমুভ করতে বলেন। ভগবানই ভরসা। কি তড়িৎ গতিতে ছেলেগুলো যে সব ব্যাবস্থা করে ফেলল, দেখলে অবাক লাগে। আমি আর দাঁড়িয়ে থেকেই বা কি করব? আমার কিছু করার ক্ষমতাও নেই। ছেলে গুলোর কর্তব্য-বোধ আমায় অভিভূত করে। আবার আমাকেও বলে,
----- দাদু আপনি এবার নিশ্চিন্তে বাড়ী যেতে পারেন। যা করার আমরাই করব। দেখি , একবার ওনার ছেলেকে কি করে খবরটা দেওয়া যায়। আপনি কি একা যেতে পারবেন, না পৌঁছে দিয়ে আসব?
দত্ত--- না, বাবা, আমি একাই চলে যাব। তোমরাইতো আমাদের বল ভরসা। তবুও সময়মত তোমাদের পাওয়ায় নিশ্চিন্ত হোলাম।
আনমনে ভাবলেশহীন ভাবে হাঁটতে থাকে। কিজানি ঘোষের কি হবে? পথের মাঝে চোখে পড়ে , বিশাল বাগানে লন চেয়ারে বসে বরাট দম্পতি গল্প করছেন। বাঃ, কি সুখী জীবন! চোখ যেন জুড়িয়ে যায়। শুনেছি কদিন আগে ভদ্রলোকের সামান্য স্ট্রোকের মত হয়েছিল। অর্থাৎ একটা ধাক্কা দিয়ে গেছে। হাঁটা চলা নিষেধ। বিশ্রামের, পরিচর্য্যার কোন ত্রূটি নেই। কি আর করবেন? দুজন মানুষের জন্য, চারজন সাহায্যের লোক। সবই কপাল। একি আমাদের মত?

( ছয় )
মিষ্টার বরাট--- বুঝলে ম্যাডাম, এত বিশ্রামেও কেন যে কোন ইমপ্রুভ হচ্ছেনা বুঝিনা। আসলে এই বিশ্রামই হয়েছে আমার যত কাল বুঝলে। এত ব্যাস্ততা, এত ছোটাছুটি যেন নিঃশ্বাস ফেলারও সময় ছিলনা। সকাল হলেই আমার কোর্টে যাওয়ার তাড়া, তোমার স্কুলে। এরমধ্যে আবার ডিউকের প্রস্তুতি। এতসবের ভেতরেও ডিউক কি করে এত বড় হয়ে গেল বলতো? ভাল প্রসার হোল, বিয়ে হোল আবার আলাদাও হয়ে গেল। সবাই কেমন দূরে সরে যায়। ওখানেই এখন সমস্ত সুবিধা তাইনা? এত ব্যাস্ত যে ফোন না করলেতো খবরই জোটেনা। কি ম্যাডাম, তখন থেকে বকবক করে যাচ্ছি, টুঁ শব্দটিও নেই? কি এত ভাবছ?
ম্যাডাম--- নাঃ, কিচ্ছু না।
মি,বরাট--- ভাবছতো কিছু নিশ্চয়ই। সে তোমার কপাল কুঞ্চনেই বোঝা যায়।
ম্যাডাম--- ভাবছি আজ যদি একটা মেয়েও থাকত, অন্তত কটা দিনের জন্য কাছে এসে বসত। খবরা খবর রাখত। তা, তুমিই চাইলেনা।
মি:বরাট--- হাঃ, হাঃ ও এই দুঃখ? হবেনা, হবেনা আর বেশী দিন একা থাকতে হবেনা। সব ব্যাবস্থা করে ফেলেছি। এবার শুধু চিঠিটা এলেই পাত-তাড়ি গোটাব। এরই মাঝে পিঁ,পিঁ করে ছোট্ট মোবাইলটা কেঁদে ওঠে।
ডিউক--- হ্যালো ড্যাড, কেমন আছ?
মি:বরাট--- ভালইতো।
ডিউক--- এ মাসের ৪ তারিখ, ব্যাঙ্গালোরে আমার একটা কনফারেন্স আছে, প্রায় সপ্তাহখানেক বাড়ীতে থাকব না। জেনিই বা একা এখানে কি করবে? ভাবছি ওকে নিয়েই যাব।
মি:বরাট--- হ্যাঁ, ঠিকইতো ওকে নিয়েই যা।
ডিউক--- ঠিক আছে। তোমরা ভাল থেকো। বাই -------
ম্যাডাম--- ডিউক কথা বলল নাগো? ----- "হ্যাঁ।" ছলছল চোখে স্বামীর মুখপানে চেয়ে আবার প্রশ্ন করে, -"আমার কথা কিছু জিজ্ঞেস করল না, না?"
মি:বরাট--আচ্ছা ম্যাডাম, তুমি যে কেন এখনও এদের থেকে এসব প্রত্যাশা করে নিজেকে এত কষ্ট দাও বুঝিনা। ওরা কি জানে, মা-বাবা বলে একটা বস্তু এখনও সশরীরে বর্তমান আছে? যারা এখনও প্রতিটা শ্বাস প্রশ্বাসে তাদেরই অনুভব করে?
ম্যাডাম--- যাক্ যাক্ তোমার শরীর ভাল নেই, তোমাকে অতখানি আবেগ-প্রবন না হলেও চলবে। ও এরকমতো আমি সব সময়ই বলে থাকি আবার ভুলেও যাই।"----- নিজেদের শান্ত রাখতে প্রসঙ্গান্তরে চলে যান। -"তোমার মনে আছে, ডিউকের সেই মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা?-"
মি:বরাট--- বাব্বাঃ সে মনে থাকবে না? সেতো এক ইতিহাস।
ম্যাডাম---এত খারাপ রেজাল্ট হয়েছিল যে, আমরা ভাবতেই পারিনি। আসলে ওই সময় ও বোধহয় একটু বিগড়ে গেছিল না?
মি:বরাট--- একটু কেন বেশ ভালই বিগড়ে ছিল, নাহয় ওরকম বিচ্ছিরি রেজাল্ট কেউ করতে পারে?
ম্যাডাম--- তুমিতো এমন বকাবকি শুরু করলে যে, আমার ভয়ই হোল। শেষমেষ ছেলে না আত্মহত্যা টত্যা করে বসে। যত তোমাকে চাপতে চাই, ততই তুমি তেড়েমেড়ে ওঠ। তোমার অমন রাগ আমি জীবনে দেখিনি। শেষে দিগ-বিদিক না দেখে, তোমাকেই ঘরে পুরে শেকল তুলে দি। তাও কি রক্ষে আছে? সে কি আস্ফালন --------------"করুক করুক ও আত্মহত্যা। এভাবে চললে একদিন নয় একদিন ওকে আত্মহত্যাই করতে হবে।" এদিকে তোমার ঘরে শেকল ওদিকে ডিউকের ঘর বন্ধ। কিছুতেই দরজা খোলেনা। অবশেষে অনেক বাবা-বাছা করে , দরজা খুলতেই ঢুকে পড়ি। তারপর সারা রাত ওর পাশে মড়ার মত জেগে পড়ে থাকি। এদিকে তুমি, ওদিকে ছেলে। উঃ, সে যে কি দিন গেছে আমার সে একমাত্র তিনিই জানেন।
মি:বরাট--- তরপরের দু বছর?
ম্যাডাম--- উঃ, সে যে কি কঠোর পরিশ্রম করেছি ছেলের পেছনে, তা শুধু আমরাই জানি। দুজনের সুবিধে মত একবার আমি ছুটি নিয়েছি একবার তুমি। সম্পূর্ণ গৃহবন্দী। পরিবার, পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলাম নিজেদের। এরমধ্যে তোমার আরও বাড়াবাড়ি, টি,ভিটাও দিলে বিক্রি করে।
মি:বরাট --- তার ফল কেমন হয়েছে বল।
ম্যাডাম--- হ্যাঁ, বুক ভরা ফল পেয়েছি। এইচ,এস জয়েন্ট এনট্রান্স সবেই খুব ভাল ফল করেছিল। এরপর আর কোন বাধা আসেনি। তরতর করে ডিউক কেমন সব পেরিয়ে গেল না?
মি:বরাট--- আসলে ওতো বরাবরই মেরিটোরিয়াস ছিল।
ম্যাডাম--- তবে সেই সময় আমরা শক্ত না হলে কিন্তু ও ভেসে যেত।
মি:বরাট--সেটা কে আর মনে রাখে ম্যাডাম?"---------- উদাস দুটি চোখে কত ছবি ধরা পড়ে। দু জনেরই কথা ফুরিয়ে যায়। আনমনে চেয়ে থাকে বাইরে। কিসের জন্য, কার জন্য এত ত্যাগ? কতদিন হয়ে গেল ডিউককে দেখিনা। তোকে বড় দেখতে ইচ্ছে হয়, ছুঁতে ইচ্ছে হয়রে ডিউক। তুই যে আমাদের একমাত্র সৃষ্টি --- মন দিয়ে, প্রান দিয়ে, হাত দিয়ে, আদর্শ দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন তৈরী। আমাদের কথা কি তোর একটুও মনে পড়েনা?------- দু জনের চোখে একই ভাষা খেলা করে।
ম্যাডাম---আচ্ছা, আমাদের চলে যাওয়ার কথা কি তুমি ডিউককে জানিয়েছ?
মি:বরাট--- সে যাওয়ার আগে জানালেই হবে। ওরাতো আর আমাদের বাধা দেবে না?
ম্যাডাম--- আর এই বাড়ী , ঘর?
মি:বরাট--- সে ভারও ওদেরই দিয়ে যাব। ও রাখলে রাখবে, বেচলে বেচবে। আমার কর্তব্যে কোন ঘাটতি রাখব না।

( সাত )
বাড়ীর কাছাকাছি আসতেই চিন্তা হয়, কিজানি এবার আবার কি রূপ নেয়। ছুটতে ছুটতে ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই ছেলে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
ছেলে---আচ্ছা বাবা, তোমার কি যত বয়স হচ্ছে, কান্ডজ্ঞান সব লোপ পাচ্ছে? আজ দুদিন ও কোমরের ব্যাথায় নড়তে পারছেনা। এসময় তুমিতো একটু বাড়ীতে থেকে সাহায্য করলেও পার। এক দিন বাড়ী থেকে না বেরোলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায় শুনি?
বাবা--- আরে নারে বাবা, না। আমিতো বাড়ীতেই ছিলাম। সব গোছগাছ করে, রনিকে ঘুম পাড়িয়ে, রীনা এলে ওকে সমস্ত বুঝিয়ে, তবে ঘোষকে একটু দেখতে গেছিলাম।
ছেলে--- কেন, একদিন ঘোষকে না দেখলে কি পেটের ভাত হজম হয় না?
বাবা--- কি যা তা বলছিস। ঘোষের অবস্থা ভাল নয়। ওর বাড়ী্তেও কেউ নেই। মনে হয় ম্যালিগ্যান্ট ম্যালেরিয়া সন্দেহ করছে। পাড়ার ছেলেরাই সব দেখা-শোনা করছে।
ছেলে--- বাঃ,বাঃ তাহলে আর কি? যাও তুমিও গিয়ে লেগে পড় উঠতি যুবকদের সাথে. আর দেরী কেন? তারপর ভালমত একটা বাধিয়ে এলেই ষোলকলা পূর্ণ। একেবারে সহ-মরণ হয়ে যাবে।

পরপর দুদিন আর বেরোই না। বসে বসে আকাশ -পাতাল ভাবি। আর গীতার কথা মনে পড়ে। চলে গিয়ে বড় সুখে আছে। আমার কথা আর ভাবেও না। আজ গীতার একটা কথা খুব সত্যি বলে মনে হয়। ওযে কতবড় ভবিষ্যত-দ্রষ্টা ছিল তা আজ বুঝতে পারছি। বাবুর জন্য আমার ছটফটানি ও একদম সহ্য করতে পারত না। বেশী বাড়াবাড়ি দেখলেই ধমকাত।
গীতা--- ওরকম সব সময় বাবু বাবু কোরনাতো। এতে ওরা বিরক্ত হয় বোঝনা।
স্বামী--- কেন, এতে আবার বিরক্ত হওয়ার কি আছে?
গীতা--- আছে, আছে। চিরদিনই ছিল এখন একটু বেশী-ই এই যা।
স্বামী--- কেন, তোমার চিন্তা হয় না?
গীতা--- হবেনা কেন? ------ তবে?------ নাঃ, আমি তোমার মত ওরকম হাঁকপাঁক করে বেড়াই না। চিন্তা হচ্ছে হোক, নিজের ভেতর। তাবলে কারুককে ডেকেডেকে শোনালে কি কমবে?
স্বামী--- আমি তোমার মত অমন নিশ্চিন্ত থাকতে পারিনা।
গীতা--- আমি পারি। আসলে কি জান, আমি যে বড় ভীতু। আমার চিন্তাক্লিষ্ট মনকে বাবু যদি কখনও অবহেলা করে, অশ্রদ্ধা করে? সে আমি কিছুতেই সইতে পারব না। তাই যতটা পারি নিজেকে আড়ালে রাখতেই ভালবাসি। মনে নেই সেই যে মনসা মঙ্গলের সনকা তাকেওতো লক্ষীন্দরের মুখে শুনতে হয়েছিল,--- " কি ? জন্ম দিছ দিকি কি একেবারে সত্ত্ব কিনি নিছ নাকি? সর্বদা ইরকম লখা-লখা শুনতে ভাল লাগে না।-" তখন সনকা বলছিল---"হ্যাঁরে লখা, আমার চিন্তা তোরে যে এত কাতর করে, এত ক্লিষ্ট করে এতো আগে জানতাম না?"-------------
স্বামী--- বাব্বা, তুমি যে দেখছি একেবারে লক্ষীন্দরকেও টেনে আনলে।
গীতা--- হ্যাঁ তাইই। আমরা মুখে যতই নিজেদের আধুনিক, আধুনিক বলি না কেন, আসলে আমরা সেই মনসা-মঙ্গলের যুগ থেকে এক চুলও এগিয়েছি কি?
স্বামী--- নাঃ, ওকে কেউ, কোনদিন, আজ আমার মত এমন অবজ্ঞা করার সুযোগই পায়নি।

( আট )
সকাল গড়িয়ে দুপুর, আবার রাত হয়। একা একা বসে থাকি। মনটা বড় চঞ্চল। এরই মাঝে রনিটা কখনও সখনও দলছুট হয়ে পালিয়ে আসে। শিশুতো, আমার গলা জড়িয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দেয়। আর চগবগ করে এদিক-ওদিক লক্ষ্য করে। বাবা-মা দেখছে কিনা। হয়ত বাবা-মায়ের এ ব্যাপারেও নিষেধ আছে । কিছুক্ষন হলেই বৌমা অথবা ছেলে এসে টানতে টানতে নিয়ে যায়। আমি বারণ করিনা।------------------ আচ্ছা, এরা আমায় ভাবেটা কি? অচ্ছুৎ? টি,বি রুগী? কিজানি? চোখেতো ঘুমও নেই। যে চোখ বুজে পড়ে থাকব। অথচ এই ঘুমের জন্যও বৌমার কত না অশ্লীল মন্তব্যও আমার কানে এসেছে। আমি নাকি রোজ নেশা করে বাড়ী ফিরি তাই বালিশে মাথা দিলেই নাক ডাকতে শুরু করি। গীতাও আমায় একা ফেলে চলে গেল। এবার ঘোষও চলার পথে। যাও, যাও। যাচ্ছ যাও, কিন্তু পার্টনার ছাড়া তোমারই বা চলবে কি করে? যায়গা রেখো, আমিও আসছি। তুমি ছাড়া আমার যে আর কোথাও যাওয়ার যায়গা নেই, সেকি তুমি জাননা ঘোষ?
সকালের পর অপেক্ষা করেছি আবার বিকেল আসবে। আর আমি সকালের অপেক্ষায় থাকিনা, বিকেলের প্রতীক্ষাও করিনা।---- রাত্রি! ঘন অন্ধকার রাত্রি, আমায় এবার আচ্ছন্ন করে দাও।

( নয় )
---------------------------- দার্জ্জিলিং হোটেল -----------------------------
স্ত্রী--- কি, কি হোল কি, তোমার বাবাকে ফোন করেছিলে?
স্বামী--- কোরব, কোরব।
স্ত্রী--- আর কবে করবে? পরশু সকালেইতো পৌঁছে যাব। জলটা ধরে রাখতে বোল। আর এক প্যাকেট দুধ আর কিছু বাজার যেন করে রাখে। "--- সন্ধ্যের দিকে ম্যালে ঘুরতে বেরিয়ে আবার ফোনের কথাটা মনে করিয়ে দেয় রীতু। সামনেই একটা টেলিফোন বুথ দেখে ঢুকে পড়ি।
ছেলে--- হ্যালো, হ্যালো, কে বাবা?
----- না আমি তোমার জ্যাঠা বলছি।
ছেলে--- ভাল, ভাল তুমি কখন এলে? তা বাবা কোথায়?
ল্যাঠা--- বোধহয় একটু বাইরে গেছে।
ছেলে--- আচ্ছা, বাবাকে বোল, আমরা পরশু সকালে ফিরছি। বাবা যেন অবশ্য জলটা ধরে রাখে আর এক প্যাকেট দুধ আর বাজারটা করে রাখে। কারণ নাহয় আমরা গিয়ে জল পাবনা।
জ্যাঠা--- ঠিক আছে, ঠিক আছে।
স্ত্রী--- কি হোল, কার সঙ্গে এতক্ষন বকবক করছিলে?
স্বামী--- জ্যাঠামশাই।
স্ত্রী--- ও বেরোতে না বেরোতেই বুঝি দল বেঁধে এসে বসা দিয়েছে? এর জন্যই আগে থেকে কারুককে খবরটা পর্য্যন্ত দিনি। ঘুরে গিয়েই কি শান্তি আছে? গিয়েই সেই গুষ্টির পিন্ডি সেদ্ধ করতে হবে।
স্বামী--- ওঃ, তুমি এমন করছ যেন জ্যাঠামশাই কোন কালে আমাদের খোঁজ-খবর নিতে আসেন না। হয়ত এতক্ষনে খবর নিয়ে চলেও গেছেন।
স্ত্রী--- হ্যাঁ, গেছেন? দেখ গিয়ে খালি বাড়ী পেয়ে আঁটঘাট বেঁধে গেঁড়ে বসেছে। তার ওপর তোমার বাবারতো দাদাকে দেখলে একেবারে দরদ উপচে পড়ে।----- হঠাৎ সোনু কি বুঝতে পেরে কিজানি, হাততালি দিয়ে বলে ওঠে------- "কি মজা, কি মজা বাড়ী গিয়ে জেঠু-দাদুকেও আমার সব জিনিস দেখাতে পারব।"

( দশ )
মোটামুটি পাড়ায় ঢুকতে না ঢুকতেই দুঃসংবাদটা পেয়ে যায়। সোনুটা কাঁদতে কাঁদতে একেবারে অস্থির হয়ে পড়ে। ওর যে কি গেছে, সে শুধু ও-ই বোঝে। তাই ওরই যত কষ্ট। ছেলে-বৌ কালিমাখা নত মুখে ঘরে ঢোকে।
জেঠামশাই--- নাও তোমাদের অপেক্ষাতেই এ কদিন বাড়ী আগলে বসে আছি। চোখের সামনে ছোট ভাইকে বিদায় দিলাম। আস্তে আস্তে সব খবরই পাবে। আমার পক্ষে আর বেশীক্ষন বসা সম্ভব নয়। তবে একটা কথা না বললে সত্যের অপলাপ হবে। তোমাদের প্রতিবেশীরা দেখলাম খুবই হৃদয়বান। আর "তরুণ-সংঘের" ছেলেদের তো তুলনাই হয়না। এত ভাল ভাল ছেলে যে আজও আমাদের ঘরে ঘরে জন্ম নেয়, এ যেন ভুলেই গেছিলাম। তবে সবার মূলেই সেই তোমার বাবার বন্ধু দত্ত বাবু। জানিনা উনি সেদিন না এলে যে কি হোত? ` যাক, তোমরা এখন পরিশ্রান্ত ও কাতর এখন আর এসব কথা বলে লাভ নেই। এই রইল তোমাদের ঘরের চাবি। জল তোলা আছে। ফ্রিজে দুধের প্যাকেট রেখেছি। থলেতে কিছু কাঁচা সব্জিও আছে। যদি পার বাকি কটাদিন নিরামিষ আহার কোর। সুখে থেকো, ভাল থেকো, যাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১:৩৫
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×