যখন আফগানিস্তানে অ্যামেরিকা হামলা চালায় তখন প্রায় শুক্রবারেই জুম্মার নামজ শেষ এই ধরনের স্লোগান হতো ,
( আমরা সবাই তালেবান বাংলা হবে আফগান ) আফগানিস্তানে তালেবানের পক্ষ হয়ে প্রায় ১২ হাজার মানুষ যুদ্ধে গিয়েছিল বাংলাদেশ থেকে , তারা এখন কোথায় ?
সৌদি আরবে আমার ১০ বছর প্রবাসী জীবনে যায় দেখলাম তায় বললে হয় তো ছাগুরা বলবে সৌদি আরব নাস্তিক , তালেবান নামটা শুনলেই সৌদি প্রশাসন এবং সৌদি সরকারের মথায় মনে হয় আগুন ধরে যায় , ২০০৪ বা ২০০৫ এর দিকে হবে দাম্মামে একটি বিল্ডিং এ ১০০ বেশি তালেবান অবস্থান করেছিল , সৌদির প্রশাসন নিশ্চিত হয়ে এই যে গুল্লি মারা শুরু করলো ্যায় বলে বুঝানো যাবেনা , এতো গুলা অস্ত্রের গুল্লি দিয়ে বোধ হয় ১ কোটি মানুষ মারা যেতো , এক সময়ে দেখা গেলো বিল্ডিং এর রড গুলা ছাড়া আর কিছুই নাই , শুধু কংকাল হয়ে দাড়িয়ে আছে রড গুলা , তার পর শুরু হলো সেই ভাঙা স্তুপের মধ্যে বিমান দিয়ে বোমা হামলা , বিল্ডিং এর ইট বালি সিমেন্ট মনে হয় পাউডার হয়েগিয়ে ছিল , তার পর সেই গুলা গাড়িতে ভরে মরুভূমির মাঝে নিয়ে গর্ত করে ইট বালি সিমেট সহ তালেবানদের তো তখন কোন অস্তিত্বই ছিলনা , সেই গুলা মরুভূমিতে মাটি চাপা দেওয়া হলো , এই থেকেই সৌদির মানুষ বুঝে গেলো তালেবান প্রসঙ্গে সরকার কতটা কঠোর ।
এই তো আরেকটা ঘটনা মাস দুই এক আগের কথা , রিয়াদ থেকে দাম্মাম আসতেছিলাম , আমাদের গাড়ির পাশ দিয়ে আরেকটা গাড়ি গেলো , মনে হলো গাড়িটা ২৫০ মাইল স্পীডে চলছে , আর আমাদের গাড়িও তখন ১৫০ স্পীডে চলছিল , আর সেই গাড়িটা লক্ষ করে তার উপর দিয়ে দুইটা হেলিকাপ্টার যাচ্ছে, পেছনে ৪-৫টা পুলিশের গাড়ি ধাওয়া করছে , তায় দেখে বুঝলাম কোন কাহিনী তো আছে , হেলিকাপ্টার থেকে ধুরুম ধুরুম বোমা ফেলা হচ্ছে , আমাদের গাড়ি সহ রাস্তায় যেতো গাড়ি ছিল সবাই গাড়ি বন্ধ করে সেই দৃশ্য দেখছিল , তার পর গাড়িটা হলিউডের মুভির মতন দ্রুম করে আগুন জ্বলে ২০-২৫ ফুট উপরে উঠে গেলো , মানুষের কাছে প্রশ্ন করে জানতে পারলাম গাড়িতে তালেবান ছিল ।
সৌদি আরবের বাদশা আবদুল্লাহ ২০০৮-৯ দিকে বলেছিলেন তারা ইসরাইলকে নয় হামাস এবং হিজবুল্লাহ কে বেশি ভয় পায় , এই কথার জন্য তিনি অনেক সমালোচিত হয়েছিলেন , কিন্তু যখন ইয়ামানের ইসলামী জঙ্গলিরা সৌদি সীমান্তে প্রায় ২০ হাজার বর্গমাইল এলাকা দখন নিয়েছিল তখন সমালোচক কারীরা বোতামুখ হয়ে বসে ছিল ।
আফগান যুদ্ধে পাকিস্তান থেকে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ গিয়েছিল , আর পাকিস্তান সরকার তাতে বাধা দেয়নি বরং তারা আরো উৎসাহ দিয়েছিল , ফলাফল এখন কি হলো ? প্রতিদিনই বোমা হামলায় পাকিস্তান শতশত মানুষ মারা যাচ্ছে , মাঝে মাঝে কিছু হামলা দেখে অবাক হই মানুষ এতো বড় অমানুষ হয় কিভাবে , প্রায়ই দেখা যায় মসজিদে বোমা হামলা হচ্ছে , আইচ্ছা মসজিদে বোমা হামলা মেনে নিলাম , কিন্তু সেই নিহতদের জানাযাও বোমা হামলা হায়রে মানুষ , এরা কারা যারা পাকিস্তানকে তালেবান রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে , সেই আফগানিস্তান থেকে ফেরত গাজীরা , ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার জন্য তারা জানাযায় , মসজিদে্ , খেলার মাঠে , হাট বাজারে বোমা হামলা করে , তারা কোন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায় তায় আমার জানা নাই , ইসলাম তো শান্তির ধর্ম , তাহলে ইসলামের নাম দিয়ে কারা বোমাবাজি করছে ? আমি এক কথাই বলবো আফগান ফের যুদ্ধারা ! যারা নিজেদের গাজী বলে পরিচয় দিচ্ছে , আর তাদেরকে বসানো হয়েছে দেশের ইসলাম রক্ষার কাজে , তারা কোণ ইসলাম রক্ষা করবে ? শান্তির ধর্ম ইসলাম না বোমাবাজির ধর্ম ? মাঝে মাঝেই তাদের হুমকারে কেপে উঠে দেশ , কিছু না বুঝেই জবাই করার ঘোষণা দিয়ে বসেন তারা । পাকিস্তানে তো ৯৯ ভাগ মানুষ মুসলমান সেখানে আবার কি আছে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার ? সেখানে ধর্মের নামে কেন বোমাবাজি করা হয় , কেন মানুষের জীবনের মুল্য নাই , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকতেও সেখানে কোন আইন কানুন নাই , তালেবান এবং ধর্মান্ধতার ফল পাকিস্তান ইয়ামান হাড়ে হাড়ে পাচ্ছে ।
বাংলাদেশও পাবে , আর তখনই পেতো যদিনা ২০০৫ জেএমবি কে কঠোর হাতে দমন না করা হতো , এখন হয় তো পাকিস্তানের পরিস্থিতি থাকতো বাংলাদেশের ।
কিন্তু তার পরেও কেন আফগান ফেরত তালেবানদের কোন রকমের সাজা হলোনা , গতকাল মাওলানাদের হুমকার দেখে আমার আত্মায় পানি শুকিয়ে গেছে , মনেহয়েছিল বাংলাদেশে গৃহ যুদ্ধ লেগে গেছে , তাই মনে মনে বলেছি দরকার হলে আমাকে সহ সকল ব্লগারদের ফাসি দিয়ে হলেও তাদের হুমকার বন্ধ করা হোক , তাদের শান্ত করা হোক , তাদের হুমকার দেখে আমার মনে হয়েছে আমার সামনে আজরাই দাঁড়াইয়া রইছে , তাই সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি দরকার হলে দেশের সব ব্লগারদের ফাসি দিয়ে হলেও এই উত্তেজিত মাওয়ানাদের ঠাণ্ডা করেন । তারা ইচ্ছা করলে অনেক কিছুই করতে পারে , এতে আমার বিন্দু মাত্র সন্দেহ নাই ।
তাই দয়াকরে দেশ শান্ত রাখার ব্যবস্থা করেন , তায় না হলে এই সোনার বাংলা পাকিস্তানের মতন তালেবান দেশ হবে ।
দেশের অধিকাংশ মাওলানা মনে করে ব্লগ মানে নাস্তিক , ব্লগ মানে নাস্তিকের কাঁরখানা , তাই সব ব্লগারই নাস্তিক তাদের ফাসি দেওয়া হোক
আমার এই লেখাটা পড়ে হয় তো অনেকেই নাস্তিক ট্যাগ লাগাবেন জানি , তার পরেও তাদের বলি , আমি দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সৌদি আরব আছি ৩ বার ওমরা হজ্জ করার সুভাগ্য হয়েছে , ভবিষ্যতে আশা আছে আব্বা আম্মাকে এনে বড় হজ্জ করে একবারে তাদের সাথে দেশে ফিরে যাবো , জানিনা সেই আশা কত টুকু পূর্ণ হবে , তাই নাস্তিক ট্যাগ লাগালে লাগাতে পারেন , কারণ আল্লাহ সবই দেখছেন , নাস্তিকি করে থাকলে তিনি অবশ্যই সাজা দিবেন ।
ধর্ম নিয়ে কুটউক্তি করলে অবশ্যই নাস্তিকদের শাস্তি হওয়া উচিৎ । তবে আমার মনে হয় নাস্তিকদের শাস্তি আইনের মাধ্যমে দেওয়া যেতে পারে এবং এই জন্য সরকারের প্রতি চাপ প্রয়োগ করা যেতে পারে , কিন্তু মাওলানারা যেই ভাবে জবাই করার ঘোষণা দিলেন এতে করে দেশে অশান্তি সৃষ্টি হবে , পাকিস্তানের রূপ নিবে । গতকালের মাওয়ানাদের ভিডিওটা দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে আজরাইল আমার সামনে দাড়াইয়া রইছে , তাই দাঙ্গা হাঙ্গামা না করলে সরকারকে চাপ দিয়ে নাস্তিকদের বিচার করা হোক ।