আস্তিকতা-নাস্তিকতা-প্রগতিশীলতা-গোঁড়ামি-সুশীলতা-রক্ষনশীলতা সম্পর্কিত হাজারো পোস্ট পড়ার পরে একটি বিষয় বুঝতে পারলাম যে, সকলেই মুখোশধারী । মুক্তমন-ধার্মিকতার ধ্বজাধারী বঙ্গসন্তানেরা যুক্তি-আবেগ-যুক্তিখন্ডন-আবেগ-যুক্তিখন্ডন এরকম একটি ধারায় আলোচনা চালান, অবশেষে গালাগালির আশ্রয় নেন । খুব কম পোস্টই পেলাম, যেখানে গালাগালি নেই । কেউই নিজের ভিত্তি সম্পর্কে প্রমাণ হাজির করতে পারেন না । কিছুক্ষন কাদা ছোড়াছুড়ি করে অবশেষে অশ্লীল গালির বহর বইয়ে দেন ।
যারা আস্তিক, তাদের পক্ষে কোনদিনই সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্যের প্রমাণ দেখানো সম্ভব নয় । আর যারা নাস্তিক, তারাও কখনই শুধুমাত্র বিজ্ঞানের মাধ্যমে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুজে পাবেন না । কারন বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত নতুন দিক উন্মোচন করছে এবং এই নতুন দিকগুলোর সাহায্যে অতীতের বিভিন্ন বিষয়কে নতুন ভাবে পরিমার্জিত করছে ।
ঈমানের মূল কথা হল বিশ্বাস । যারা প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করেন, এবং পরবর্তীতে বিশ্বাসের সাথে বিজ্ঞানের মিল খুজে পেতে চান, তারা এটি করতেই পারেন । হয়তোবা মনে শান্তি পান, সৃষ্টিকর্তার মহিমায় মুগ্ধ হয়ে আরও গভীরভাবে তাঁর উপাসনা করেন ।
অপরদিকে যারা প্রমাণ ও ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে নিজের জ্ঞানকে সমুন্নত করেন, তারা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্যের প্রমাণ খোঁজেন । কিন্তু তারা এটি লক্ষ্যই করেন না যে, আস্তিক ব্যক্তির ধ্যান ধারনার মূল ভিত্তি হল বিশ্বাস, যার সাথে প্রমাণের কোন সম্পর্কই(আমার দৃষ্টিতে) নেই । তবে কেন তারা আস্তিকদের বিভিন্নভাবে হেয় করেন ? তাঁদের বিশ্বাস নিয়ে কেন তারা খেলা করেন ? হাঁ আপনাদের কাছে ধার্মিকদের অনেক রীতিনীতিই হয়তোবা অচল, নিষ্ঠুর , অশ্লীল বলে মনে হয় । আপনি এসবের বিরোধিতা করতে পারেন, চেষ্টা করতে পারেন তাদেরকে বিজ্ঞানের আলোর পথে আনতে । কিন্তু সবকিছু জেনে,শুনে ও বুঝে যদি আস্তিক ব্যক্তি আস্তিকই থাকতে চান, তাহলে কেন তাকে গালিগালাজ করবেন ? আদৌ দরকার আছে কি ? গাধা না হয় গাধাই থাকুক । গাধা ছাড়াও তো মানবজাতির অগ্রযাত্রা বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে । তাদের গাধাই( এ ব্লগে এদের ছাগু বলা হয়) থাকতে দিন । আপনারা সভ্যতার উন্নয়নের কাজ করতে থাকুন, বাধা এলে রুখে দাঁড়ান । ভ্যা ভ্যা ম্যা ম্যা থেমে গেলে আবার নিজেদের কাজে লেগে পড়ুন । ব্যস । ল্যাঠা চুকে গেল । যে আস্তিকেরা নিজের গণ্ডির মাঝে ধর্মালোচনা করেন, একে অপরকে ধর্মের ভাল দিক দেখানোর কাজ করেন, তাদের কে কেন অনর্থক খোঁচাবেন ?
আর অনেক আস্তিক আছেন যারা ধর্মের আলোকে বিজ্ঞান ব্যাখা করেন, নাস্তিকদের কে ধর্মের পথে, শান্তির পথে আনার জন্য চেষ্টা করে যান । হয়তোবা তাদের মাঝে জিঘাংসা থাকে না, তারা সুধুই ধর্মের বিধি মানার জন্য এই কাজ করেন । আচ্ছা করতে দিন । যদি নাস্তিকরা ধর্মের পথে আসতে না চান, তাহলে কেন তাদের ধরে টানাটানি করেন ? তারা থাকুক তাদের মত । আপনি তো আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন ঠিকমতই ।
তবে, কথা আছে । নিজেদের ধ্যান ধারনা অন্যদের মাঝে ছড়ানোর সময় যদি কেউ অন্যদের গালাগালি করে, জ্ঞান বুদ্ধি ইত্যাদি নিয়ে অসম্মানমূলক কথা বলে ( যে কাজটি নাস্তিকরা অতি অতি অত্যধিক মাত্রায় করেন ) তাহলে তাদের ছেড়ে দেবেন না । এদের শাস্তি পাওয়ার দরকার আছে । অসভ্যকে ভদ্র বানানোর জন্য প্রথমে ভাল ব্যবহার করতে হয়, তাকে বুঝাতে হয় । যদি না বোঝে, ছেড়ে দিলেই ঝামেলা শেষ । কিন্তু ওই অসভ্য যদি আপনাকে বিনা উস্কানিতে আক্রমন করে, তবে ছেড়ে দেবেন কেন ? অসভ্যকে বুঝিয়ে দেবেন, যে সে নিম্নমানের কীট । তাকে পিষে ফেলুন ।
আস্তিক-নাস্তিক, সুশীল-কুশীল,আওয়ামী-বিএনপি-জামাত
( জামাতিদের খেদানোই উচিত। তাহলে আস্তিকদের সওয়াব হবে, নাস্তিকরা দেশের উপকার করবে) সবার ক্ষেত্রেই এসব প্রযোজ্য । তবে, আমার পর্যবেক্ষন যা বলে, তা থেকে দেখে যাচ্ছি যে, সুশীল-প্রগতিশীল, বিজ্ঞানমনস্করাই অতি আক্রমন করেন, নিজেদের জাহির করেন, অন্যদের ছাগু-গাধা-সেকেলে এবং উচ্চারণের অযোগ্য সব শব্দের ব্যবহার তুলনামুলকভাবে বেশী করেন ।
এই পরিস্থিতির পরিবর্তন একান্ত কাম্য । এসব দেখতে একটুও ভাল লাগে না ।
অতি সাম্প্রতিক একটি পোস্টেই এর প্রমাণ পাওয়া যায় । বাংলার দামাল ছেলেরা কু-হাওয়াকে সু-বাতাস দিয়ে পরিবর্তনের ইতিহাস গড়তে জানে
এখানে কি বিষয়ে কথা বলা হয়েছে, আর ২-১ টি মন্তব্যে কোথায় চলে যাওয়া হয়েছে । কেনরে ভাই ? কি দরকার ?
অফটপিকঃ আমি মুসলিম এবং ইসলামের নিয়মনীতি মেনে চলার চেষ্টা করি
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৩৩