somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্যাম্ব্রিয়ানের একটি বড়ধরনের দুর্নীতি

০৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্যাম্ব্রিয়ান। এর স্কুল কলেজ দিয়ে অনেক পপুলার হয়ে গিয়েছে। ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুল এবং কলেজ নিঃসন্দেহে ভালো। কিন্তু তারা একটি নতুন জালিয়াতি শুরু করেছে যা কিনা এখনও সবার জানা হয়নি। আজকে আমি সেই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবো। তাদের এই কর্মকাণ্ড ঘটছে তাদের মেইন ক্যাম্পাস যা গুলশান ২ তে অবস্থিত। তারা একটি কোর্স চালু করেছে যার নাম ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশন প্রোগ্রাম। তাদের ভাষ্য মতে এইচএসসি 'র ২ বছরের প্রোগ্রাম সংক্ষিপ্ত করে ১ বছরে এইটা করা হয়েছে। এই কোর্সটি মালয়েশিয়ান একটি ইউনিভার্সিটির কোর্স। তারা বলতেছে কোর্সটির বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই কোর্সের কোন স্বীকৃতি নেই। অনেক ছাত্র এখানে ভর্তি হয় ১ বছরে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার জন্য। কিন্তু এই কোর্স করার পর তারা কোন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবে না। কারণ বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন নাই। হয় তাদের অন্য কোথাও আবার কলেজে ভর্তি হতে হবে, এতে করে তার জীবন থেকে এক বছর নষ্ট হয়ে গেল। ক্যাম্ব্রিয়ান তাদের জন্য আরেকটা পথ খোলা রাখছে। সেটা হল ক্যাম্ব্রিয়ানে মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া।
'ইউনিভার্সিটি ফাউন্ডেশন প্রোগ্রাম' তথা ইউএফপি করার জন্য তারা ছাত্রদের থেকে ১৫০,০০০৳ থেকে ১০০,০০০৳ নিয়ে থাকে। কোন নির্দিষ্ট রেট নাই। যার থেকে যা নিতে পারে। ভর্তি করানোর সময় বলে তাদের সাথে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিসহ আরও অনেক ইউনিভার্সিটির সাথে যোগাযোগ আছে। এই কোর্স করার পর তারা যেকোন জায়গায় ভর্তি হতে পারবে। একজন ছাত্র সরল মনে তা বিশ্বাস করে ভর্তি হয়। অভিভাবকরাও মনে করে এক বছর বেঁচে যাবে। কিন্তু এটা শেষ করার পর যখন তারা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে যায় তখন তারা বুঝতে পারে কতবড় ভুল করেছে তারা। এই ভুলের মাশুল দিতে তাদের নতুন করে কোন কলেজে ভর্তি হতে হবে। অথবা ক্যাম্ব্রিয়ানের ইউনিভার্সিটিতে ৪৫০,০০০৳ - ৫০০,০০০৳ খরচ করে ভর্তি হতে হবে। তারা ইউনিভার্সিটির জন্য যে সার্টিফিকেট দিবে তাও বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন নেই। জনাব বাশার সাহেব কিভাবে এগুলা করতেছেন আমি ভেবে পাচ্ছি না।

এবার উক্ত কোর্স এবং ইউনিভার্সিটির মান নিয়ে কিছু কথা বলি। ইউএফপি কোর্সের বিষয়বস্তু খুবই বেসিক। যা পরানো হয় তা এসএসসি তেই পরানো হয়ে থাকে। এই এতটুকু জ্ঞান নিয়ে কোথাও ভর্তি না হতে পারাটাই স্বাভাবিক। যেইসব শিক্ষক ক্লাস নেয় তারাও খুব একটা অভিজ্ঞ না। তারা শুধু বলে মুখস্থ করো। তাদের ইউনিভার্সিটি লেভেলেও একই শিক্ষক। এরকম শিক্ষক এবং নিম্মমানের সাবজেক্ট নিয়ে তারা ভালো একটা অনার্স সার্টিফিকেট দিবে। আমার কথা হল এই সার্টিফিকেটের দাম কি? তারা নিজেদের মত একটা কোর্স চালু করেছে, নিজেদের মত করে টাকা নিচ্ছে, বাইরের ইউনিভার্সিটি বলে চালিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু পরিক্ষার খাতা দেখছে যারা ক্লাস নেয় তারাই। পরীক্ষার নাম্বার তাদের উপরই নির্ভর করে। অনেক সময় একেবারে নতুন শিক্ষক নেয়। তখন দেখা যায় শিক্ষকই ঠিকমত বুঝতেছে না। সে ছাত্রদের কি বুঝাবে? ইউএফপি'র ক্লাস নেয় যারা ইউনিভার্সিটিরও ক্লাস তারাই নেয়।

ক্যাম্ব্রিয়ানের চেয়ারম্যান জনাব বাশার সাহেব এই কাজ কেন এই কাজ করতেছেন বুঝতেছি না। তিনি ভালো করে জানেন এটা বাংলাদেশে অনুমোদিত না। কিন্তু তারপরেও তিনি এই কাজটা করে যাচ্ছেন। টাকা কামানোর চিন্তায় কি তিনি সবকিছু বিসর্জন দিচ্ছেন? তিনি অননুমোদিত একটি কোর্স চালু করেছেন যেটা বাংলাদেশ শিক্ষাবোর্ড অনুমোদন দেয় নি। ছাত্রদের কাছথেকে অনেক টাকা এর মাধ্যমে নষ্ট করাচ্ছেন। যখন ছাত্ররা ইউএফপি শেষ করে দেখে কোথাও ভর্তি হতে পারবে না তখন তারা বাধ্য হয়ে ক্যাম্ব্রিয়ানেই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। এই ইউনিভার্সিটিও মালয়েশিয়ান বলা হয়ে থাকে। এখান থেকেও বাশার সাহেব ৫০০,০০০৳ ইনকাম করছেন। তারমানে একটা ছাত্রের থেকে সর্বমোট ৬৫০,০০০৳ টাকা নিচ্ছেন তিনি। তার বদলে দিচ্ছেন ২টা সার্টিফিকেট। যা কিনা শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদনহীন।

আমার দেখা একটা ব্যাচে সর্বমোট ২২জন স্টুডেন্ট এইটা শেষ করেছে। তাদের কিছু সংখ্যক ক্যাম্ব্রিয়ানেই ভর্তি হয়েছে। বাকীরা চাচ্ছে না আবার ক্যাম্ব্রিয়ানের ফাঁদে পা দিতে। তাই তারা স্থির করতে পারছে না কি করবে, কোথায় ভর্তি হবে। বাশার সাহেবের এই বুদ্ধিটা শুধুই টাকা কামানোর একটা উপায় মাত্র। কিন্তু এতে করে অনেক স্টুডেন্ট অকালে ঝরে পরবে, পর্যাপ্ত শিক্ষা পাবে না।
সুতরাং বাশার সাহেবকে আমি বলব টাকাতো অনেক কামিয়েছেন, এখনও কামাচ্ছেন। টাকার দিকে না তাকিয়ে ছাত্রদের ভবিষ্যৎও একটু দেখেন। ওদের ভবিষ্যৎ এভাবে নষ্ট করে দিয়েন না। এই দিকে জনাব বাশার সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা সকলেই আশা করবো এরকম একটা জালিয়াতি, ভণ্ডামি, দুর্নীতি তিনি বন্ধ করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৪:১৫
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×