ষড়যন্ত্রতত্ত্ব, ভারত, আমাদের জাতিমানস এবং বার্গেইনিং টুলস-১
ষড়যন্ত্রতত্ত্ব, ভারত, আমাদের জাতিমানস এবং বার্গেইনিং টুলস-২
ষড়যন্ত্র জুজুর রূপ ও বাস্তবতা
বরাবর আমাদের গারমেন্টসের দূর্ঘটনা, সংঘাতগুলোতে ভারতের জুজুর কথা শুনি। কিন্তু দেখি, যারা এসব করছে তারা এদেশেরই মানুষ, জুজুঅলারা ভারত পায় কই? ভারত যদি করেই থাকে তবে আমাদের লোকজনদের দিয়েই করিয়েছে, আমরা এত সহজে, সস্তায় বিক্রি হয়ে যাই কেন? আমরা কে কত কম দামে সার্ভিস দিতে পারব সেই নিলামে বিক্রি হয়ে যাই। যে ক্রেতা, তার কী দোষ?
আমাদের জনশক্তি রফতানি, শ্রমবাজার ভারত দখল করে নিচ্ছে। দৈনিক সংগ্রাম রিপোর্ট করল, মক্কা-মদিনাতে সব মেথরদের চাকরি ভারত ষড়যন্ত্র করে বাগিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশিদের হটিয়ে দিয়ে। বাঙ্গালি যে ভিনদেশে গিয়ে নানা আকাম-কুকাম করে দেশের সুনাম চান্দে তুলে রেখেছে,সেটা চোখে পড়ল না! বাকিরা মিডেলইস্ট যায় ৬০ হাজারে, বাঙ্গালি যায় তিন লাখে, ঐ টাকা ভারতীয়রা নিয়ে যায়? ভারতীয়রা যায় প্রশিক্ষণ নিয়ে, আমাদের যায় ভিসা নিতে প্রথম ঢাকা আসা মুর্খ-অযোগ্যরা। বাঙ্গালিদের ভারতীয়রা আটকে রেখেছে প্রশিক্ষণ নিতে? সরকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে না, আর আদম দালালসহ সবাই রক্ত শুষায় ব্যস্ত, তাদের মানুষ ঠকিয়ে পাচার ব্যবসা যতটা তীব্র, প্রশিক্ষণ দিয়ে কমপিটেন্ট করে আদম পাঠাতে ততই অনিহা। অন্য সব মর্য়াদার পেশা যে ভারতীয়রা আগেই নিয়ে বসে আছে সেটা চোখে পড়ছে না, মেথরামি নিয়ে হল্লা… এই না হলে আমরা বাঙ্গাল!
ভারতীয়রা কুটনৈতিক ও অন্যান্য প্রাতিষ্ঠানিক লিন্কে দেশের স্বার্থ দেখাশোনা করে, বাংলাদেশের দূতাবাস কী করে? মিডেলইস্টের বঙ্গালিরা নিজেরাও কি নিজেদের স্বার্থ নিয়ে কিছু করেছে? তারা আছে বিদেশে বসে লীগ-দল করে মারামারি করায় ও নিজেদের আবাস ভয়াবহ নোংরামিতে নরক করে রাখায়; কবে কোন গঠনমূলক কাজটা করেছে বা নিজেদের স্বার্থরক্ষায়ই কী করেছে? তো,এসবও কি ভারতীয়রা ষড়যন্ত্র করে করিয়ে নিয়েছে? ক’বছর আগে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশীদের দূর্দশা দেখে ব্যথিত হয়েছিলাম। পরে দূতাবাসে বেড়ানোর সুযোগ পেয়ে রাষ্ট্রদূতকে প্রথম সুযোগেই শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ে তাদের আন্তরিকতার অভাবের অভিযোগ তুলেছিলাম। তিনি স্বাভাবিকভাবেই আত্মপক্ষ সমর্থন করেছিলেন, নানান উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, আদম ব্যবসায়ীরা ও শ্রমিকরা নিজেরা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট দিয়ে পরিস্থিতি এমন করে রেখেছে যে বাস্তব কিছু করা কতটা দুঃসাধ্য। তার এই বক্তব্য একেবারে মিথ্যা ছিল না।
আত্মসমালোচনার স্থান ও প্রয়োজনীয়তা (আগামি পোস্টে)
ন্যূনতম রাজনৈতিক ঐক্যমত্য – একমাত্র উপায় (আগামি পোস্টে)