somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেখ খলিফা বিন যায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল আবুধাবী (পর্ব ১)

০৩ রা এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্কুলের প্রধান একাডেমিক বিল্ডিং ২০০৪-৫ সালে সংস্কারের পর।

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে, আবুধাবীর বুকে বাংলাদেশ কমিউনিটির ছেলে মেয়েদের কোয়ালিটি শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুলের বীজ বপিত হয় ১৯৮০ সালের ২৩ আগস্ট। বাংলাদেশ অ্যাম্বাসী এবং কমিউনিটির নিঃস্বার্থ সমাজ সেবকদের প্রচেষ্টায় আবুধাবী শিক্ষা মন্ত্রনায় থেকে স্কুল পরিচালনার অনুমতি গ্রহণ করা হয়। অনুমতি প্রাপ্তির পর মদিনা যায়েদ রাশেদিয়া গভ: স্কুলের ছুটি হওয়ার পর ইভিনিং শিফ্টে ক্লাশ ওয়ান থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ক্লাস শুরু হয়। স্কুলটি পরে আল কারামা রোডে স্থানান্তরিত হয়ে দশম শ্রেনী পর্যন্ত উন্নীত হয় এবং ১৯৮৮ সালে প্রথম বারের মতো ঢাকা মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এস,এস,সি পরীক্ষায় অংশ নেয় ছাত্র-ছাত্রীরা। এভাবে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে।

সানাউল করীম(মরহুম) নামের চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার এক ভদ্রলোক ব্যাংক অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন আবুধাবীতে। ওনার স্ত্রী মিসেস সাবেরা করীম (বর্তমান আমেরিকা প্রবাসিনী) শেখ যায়েদ পরিবারের গৃহশিক্ষিকা হিসাবে কাজ করতেন। উক্ত সানাউল-সাবেরা করীমের মধ্যস্থতায় তৎকালীন ইউ.এ.ই প্রেসিডেন্ট শেখ যায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নিকট স্কুলের জন্য একটি জমি বরাদ্ধের আবেদন করলে মহামান্য শেখ যায়েদ(আল্লাহ ওনার প্রতি রহম করুন) আবুধাবী সিটির মুরুর এলাকায় ৮০,০০০ (আশি হাজার) স্কয়ার ফুট এর একটি জমি দান করেন। শেখ যায়েদের বড় ছেলে এবং বর্তমান ইউএই প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন যায়েদ আল নাহিয়ান উক্ত জমিতে বিল্ডিং তৈরীর সমস্ত খরছ দান করেন। এভাবে ১৯৯০ সালে স্কুলটি নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়।

বাংলাদেশের তৎকালীন পেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সাহেব স্কুলটি উদ্ভোধন করেন। কে.জি থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত ইংরেজী এবং বাংলা উভয় মাধ্যমে শিক্ষা দান শুরু হয় এবং ১৯৯১ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সাথে অ্যাফিলিয়েশন হয়। তখন থেকে জাতীয় শিক্ষাক্রমের আওতায় ইংলিশ এবং বাংলা উভয় মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এখানে বোর্ডের পরীক্ষা সমূহ বাংলাদেশ অ্যাম্বাসীর তত্বাবধানে অ্যাম্বাসীর নিজস্ব হলে আনুষ্ঠিত হয়। স্কুলটির প্রায় ৫/৬শ জন ছাত্র ছাত্রীর জন্য রয়েছেন প্রায় ৫০জন শিক্ষক শিক্ষিকা। আরো আছেন অফিস স্টাফ, নার্স, আয়া, সিকিউরিটি গার্ড, পিয়ন, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কর্মী, দফতরী এবং ৫জন হেভী এবং লাইট ড্রাইভার।

এই স্কুলটিতে রয়েছে নিজস্ব মসজিদ, বিশাল খেলার মাঠ, অডিটরিয়াম, কম্পিউটার, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি ল্যাব, দশ হাজার বইয়ের বিরাট লাইব্রেরী এবং নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। টিউশন ফি থেকে টিচার্স কর্মচারীদের বেতন এবং যবাতীয় খরচ সমাধা করা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, স্কুলের প্রাথমিক অবস্থায় যারা শিক্ষকতা করেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই বেতনের চিন্তাও করেননি। মরুর বুকে একটি বাংলাদেশী ফুল ফোটানোই ছিল তাদের মূল স্বপ্ন। ভিন দেশের বাতাসে লাল সবুজের বাংলাদেশী পতাকা ফত্ ফত্ করে ওড়ানোর মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম এই এসকেবিজেড বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল, আবুধাবী। অন্য দু'টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- বাংলাদেশ আ্যাম্বাসী এবং বাংলাদেশ সমিতি, ইউ এ ই।

স্কুলটি পরিচালনার জন্য একটি গঠনতন্ত্র প্রণীত হয়। উক্ত গঠন তন্ত্রের ধারা মোতাবেক ১৫জন প্রতিনিধি প্রতি দুই বছরের জন্য স্কুল পরিচালানার ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে থাকেন। সমকালীন মান্যবর রাস্ট্রদূত থাকেন পেট্রোন ইন চীপ। উক্ত ১৫ জন ইসি মেম্বার যেভাবে ক্ষমতা পেয়ে থাকেন : স্কুলের অভিভাবকদের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ৫ জন প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। উক্ত নির্বাচিত পাঁচজন সদস্য আরো তিন জনকে মনোনয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্ত করেন। বাংলাদেশ অ্যাম্বাসীর পক্ষ থেকে ১জন কাউন্সিলর এবং ১জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, বাংলাদেশ সমিতি থেকে ২জন, মহিলা সমিতি থেকে ১জন, জনতা ব্যাংক আবুধাবী শাখা থেকে ১জন এবং পদাধিকার বলে স্কুলের প্রিন্সিপাল। এই ১৫জন প্রতিনিধি মান্যবার চীপ পেট্রোনের অনুমোদন ক্রমে দুই বছর তাদের রুচী মোতাবেক স্কুল পরিচালনার ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে থাকেন।
চলবে.......
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×