০১
রপ্তানীমূখী তৈরি পোষাক শিল্প খাতে জড়িত হওয়ার পূর্বে আমি ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলাম। জীবনের তিনটি মূল্যবান বছর এই পেশায় ব্যয় করেছি। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সময়টাতে ঢাকার মিরপুর, আশুলিয়া এবং সর্বশেষ মতিঝিল এলাকায় কাজ করেছি।
যারা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সাথে জড়িত আছেন তাদের সবার প্রতি আমার ব্যক্তিগত দূর্বলতা রয়েছে। সমাজের দরিদ্রশ্রেনীর স্বল্প শিক্ষিত মানুষদের নিয়ে কাজ করার কারনে তাদের নানামূখী চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়। যে শ্রেনীর লোকদের নিয়ে তারা কাজ করেন তারা মাঠকর্মীদের খুব একটা সন্মানের চোখে দেখেন না। বিভিন্ন নামে সম্ভোধন করেন যেমন, কিস্তিআলা, সমিতিআলা ইত্যাদি।
ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যার এর বিষয়ে অনেকের অনেক রকম মতামত থাকতে পারে কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাঁকে শ্রদ্ধাকরি। ডঃ ইউনূস স্যার যখন ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্রবিমোচনের জন্য যৌথভাবে গ্রামিন ব্যাংকের সাথে শান্তিতে নোবেল পুরুষ্কার পেলেন তখন জাতি হিসাবে আমরা সবাই গর্বিত হয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি সন্মানবোধ করেছি কারন তার কারনে আমরা যারা ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সাথে জড়িত তারা সবাই মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছি।
পরবর্তী সময়ে পেশাগত ক্ষেত্র পরিবর্তন হলেও ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যার এর প্রতি আমার শ্রদ্ধাবোধ আজও অটুট রয়েছে। জাতি হিসাবে বাঙ্গালী খুব দূর্ভাগা কারন আমরা যোগ্য ব্যক্তির সন্মান দিতে জানি না। নিজ দেশের কৃতি সন্তানকে অবহেলা করে আমরা অন্যদেশের নোবেল লরিয়েটকে আমন্ত্রন করে ডেকে আনি, সন্মান জানাই। কিন্তু যে যোগ্য তাকে আমরা সন্মান না দিলেও সারা বিশ্ব ঠিকই তার প্রাপ্য সন্মান দিচ্ছে। সর্বশেষ উদাহরন অলেম্পিক গেমসের মশাল ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যার এর হাতে প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে।
০২
আজ বন্ধু দিবস। আমার সকল বন্ধুরা যে যেখানে আছেন সবাইকে বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। অফিসের কাজে আজ গুলশান গিয়েছিলাম ফেরার পথে মহাখালি হয়ে গাড়ি চলছিলো। তিতুমীর কলেজের সামনে আসার পর আমি নিজের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। ড্রাইভারকে বললাম গাড়ি কলেজের ভিতরে প্রবেশ করাতে। দীর্ঘ ১০ বছর পর আজ সেই প্রিয় ক্যাম্পাসে আবার গেলাম। এতগুলো বছরের ব্যবধানে কলেজের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে, আমাদের বানিজ্য ভবনের রুমগুলো ঘুরে ঘুরে দেখলাম আর পুরানো স্মৃতিগুলো যেন চোখের সামনে ফিরে ফিরে আসলো। আমরা বন্ধুরা কলেজের যে সব জায়গায় আড্ডা দিতাম এখন সেই জায়গাগুলোতে নতুন ছেলে-মেয়েরা আড্ডা দিচ্ছে। মান্না দের সেই কালজয়ী গানের মত কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই। কোথায় হারিয়ে গেছে সোনালী বিকেল গুলো সেই।
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু
উত্তরা, ঢাকা।
০৭/০৮/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৯