এক সহকর্মীর আন্তরিক অনুরোধ এবং দাওয়াত রক্ষার জন্য তার পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। সম্প্রতি দূর্গা পুজার সময় সেই কলিগের শ্বাশুড়ি পরলোক গমন করেন। মৃত আত্নীয়ের আত্মার শ্রাদ্ধ-শান্তির জন্য আজ বহু লোক সমাগম হয় তার বাড়িতে। এলাকার লোকদের সাথে অফিসের অনেক ব্যক্তিকে বলা হয়।
আমাদের সহকর্মীটি বেশ স্বচ্ছল ব্যক্তি। প্রায় হাজার খানেক বিভিন্ন ধর্মের লোককে দুপুরের খাওয়ার দাওয়াত করা হয়েছিল। নিরামিষ আয়োজন ছিলো। লুচি, তরকারি, ডাল, দই এবং মিষ্টি।
উপস্থিত সবাই খুব তৃপ্তিসহকারে খেয়েছেন। অনেকে অফিসে ফেরার পর আলোচনা করেছেন কে কয়টি লুচি, মিষ্টি আত্নস্থ করতে পেরেছেন। যাহোক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুষ্ঠানে খুব একটা যাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই তাই হয়তো আমার ভুল হতে পারে। শ্রাদ্ধ-শান্তি অনুষ্ঠানটি আমার কাছে মনে হলো দুই ভাগে বিভক্ত। ১. সাধারন অতিথি আপ্যায়ন এবং ২. ব্রাক্ষণ ভোজন।
ধর্মীয় গ্রন্থে কি আছে জানি না তবে সাধারন জ্ঞান দিয়ে এটুকু বুঝি যে শ্রাদ্ধ-শান্তির মূল থিম হচ্ছে, সাধারন অতিথি এবং ব্রাক্ষণদের আপ্যায়নের মাধ্যমে তুষ্ট করলে স্রষ্টা খুশি হবেন এবং পরলোকগত আত্না শান্তি পাবে।
ইদানিং দেখি আমাদের মুসলমানদের মধ্যেও এই প্রাক্টিস চালু হয়েছে। কোনো মুসলিম ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর চল্লিশ দিন গত হলে তার আত্নীয়স্বজনরা ভোজের আয়োজন করেন। ব্যাপকসংখ্যক মানুষ ডেকে আপ্যায়ন করেন। এটাকে অনেকে বলেন চল্লিশা আবার অনেকে বলেন খরচা।
যারা স্বচ্ছল ব্যক্তি তারা বেশ কিছুদিন আগে থেকে এই চল্লিশা বা খরচার অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি গ্রহন করেন। কি কি আইটেম রান্না হবে। কত বেশি মানুষকে দাওয়াত করা হবে ইত্যাদি। এরপর খুব সংক্ষেপে একটি মিলাদ বা দোয়ার আয়োজন করে শুরু হয় ভোজ সভা। সবশেষে আগত ব্যক্তিরা ভোজ শেষে নিজেদের মধ্যে খাবারের ভালো মন্দ নিয়ে চর্চা করতে থাকেন। মূল যে বিষয় মৃত ব্যক্তির আত্নার শান্তি তা নিভৃতেই থেকে যায়।
আমি সঠিক জানি না আমাদের ধর্মে এ ধরনের চল্লিশা বা খরচা জাতিয় কোনো অনুষ্ঠান করার বিধান আছে কি না। যারা জানেন তারা এ সম্পর্কে শেয়ার করবেন আশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০