আহাদ বিয়ে বাড়িতে মনোযোগ দিয়ে মুরগীর রোস্ট চাবাচ্ছে। যেন তেন বিয়ে নয়। প্রেমিকা মিলির আজ শুভবিবাহ, ২-২-২০১৩।
মিলি নিজে জিগাতলার মেসে কার্ড নিয়ে হাজির। মেসের বাকী সদস্যদেরাও আহাদের সাথে দাওয়াত খেতে এসেছে। তারা ঠিকমত খেতে পারছেনা। বন্ধুর মন খারাপ কত ডিগ্রী সেলসিয়াস তাই নিয়ে ভাবছে। এদিকে আহাদের কোন বিকার নেই। ইতোমধ্যে চার গ্লাস বোরহানী শেষ করলো। খাওয়ার পর মোরব্বা দেয়া জর্দাও খাবে।
মিলির বড় আপা আহাদকে চেনেন। এই বেয়াদব ছেলেটা নিউমার্কেটের গেটে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিল।
“এই ছেলে তুমি পাবলিক প্লেসে সিগারেট খাচ্ছ কেন?- স্যরি আপু, আর জীবনেও সিগারেট খাবোনা। ওর দিকে এমন করে তাকাচ্ছ কেন? - আমি মিলিকে চিনি। মিলি তুই একে চিনিস?
- হ্যাঁ আপু। হাসছিস কেন? - ওর স্যরির কোন ভ্যালু নেই।
যে ছেলের স্যরির কোন ভ্যালু নেই তার সাথে মিলির কী করে বন্ধুত্ব হলো এ বিষয়ে তিনি অনেকবার ভেবেছেন। ভেবে কুল কিনারা পাননি। পরে দেখলেন শুধু বন্ধুত্ব নয়, তলে তলে জল অনেকদূর গড়িয়েছে। এ ছেলেকে নাকি মিলি ভালোবাসে! তার ছোট বোনের মেধা নিয়ে ফুল ফ্যামিলি গর্বিত। অংকে এ প্লাস পাওয়া মেয়ে। অথচ সে কিনা থার্ডক্লাস বজ্জাত একটা ছেলের প্রেমে পড়েছে!
মিলি একবার হাসিমুখে আরেকবার লজ্জিতমুখে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছে। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই এই মেয়ে একটুপর কমিউনিটি সেন্টারের ছাদে উঠবে। আহাদকে ফোন করবে। দুজন মিলে একটা সিগারেট খাবে। সিগারেট শেষ হলে আহাদের হাতে একটা চিঠি গুঁজে দিবে। দুঃখের ভাষায় লেখা চিঠি নয়। পরিষ্কার অক্ষরে লেখা আছে-
চাকরির ইন্টারভিউটা দাও। আমার মন বলছে এবার তুমি টিকে যাবে। চাকরি হয়ে গেলে প্রথম একবছর আংকেল আন্টিকে টাকা পাঠাবে। পরের বছর একটা সুন্দর দেখে বাসা ঠিক করবে। দুইবছর ঐ বাসায় একা একা থাকবে। যেদিন দেখবে একা থাকায় অনেক ঝামেলা হচ্ছে সেদিন বিয়ে করে ফেলবে। তোমার সাথে দুঘন্টা কথা বললে যে কোন মেয়েই বিয়ের জন্য রাজী হবে। তবে তুমি যে কোন মেয়েকেই বিয়ে করবেনা। যে মেয়ের চেহারা দেখলে আমার কথা মনে পড়বেনা তাকে বিয়ে করবে। যে কোন মূল্যে বিয়ে করবে। এরপর আমার জামাইয়ের গাড়িতে চড়ে একসাথে কক্সবাজার ট্যুরে যাবো। আমার ভালো লাগবে।
ইতি আমার আহাদ
বিয়েতে আসার জন্য তোমায় ফুলেল ধন্যবাদ।