somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমুদ্রসীমা লংঘন: ভারত ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বাংলাদেশ

২০ শে অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ১১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সমুদ্রসীমা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে। কিন্ত এ আইন বাস্তবায়ন না হওয়ার কারনে বাংলাদেশের স্থলসীমারও প্রায় দ্বিগুন সমুদ্রসীমা প্রতিবেশী দু’টি বৃহৎ দেশ ভারত ও মিয়ানমারের দখলে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আর এ সীমানার মধ্যেই লুকায়িত থাকা বিপুল পরিমানের তেল-গ্যাসের মত প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ আহরণ থেকে বন্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। এরই প্রেক্ষাপটে সমুদ্রসীমা আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিলম্বে হলেও জাতিসংঘে সালিশের জন্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই ভারত ও মিয়ানমারকে সালিশ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দু’দেশের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে সালিশ প্রসঙ্গে অবহিত করা হয়েছে বঙ্গোপসাগর ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও শ্রীলংকা-এ চারটি দেশের উপকূল ছাড়িয়ে বিশাল এলাকাব্যাপী বিস্তৃত এবং এ সাগরের গভীরতা প্রায় এক শ’ মিটার থেকে চার হাজার পর্যন্ত। তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রমে সমুদ্রের পানির গভীরতা ৪০০ মিটারের বেশি হলে তা গভীর সমুদ্র বলে গণ্য করা হয়। আর এ অনুসন্ধান কার্যক্রম দু’হাজার মিটার পর্যন্ত চালানো হয়ে থাকে।সম্প্রতি সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কোনকো ফিলিপস ও তাল্লোকে বঙ্গোপসাগরের ৫, ১০,ও ১১ নম্বর ব্লক তিনটি অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করে। কিন্তু ভারত ৫ ও ১০ এবং মিয়নমার ১১ নম্বর ব্লকের বিষয়ে আপত্তি তুলে জানিয়েছে,এতে তাদের সমুদ্রসীমায় ওভারল্যাপিং ঘটেছে।সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সংগে এ দু’টি দেশের নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত এখান থেকেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৭ই অক্টোবর জাতীয় সংসদে দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, যত বাধা আসুক না কেন, আমাদের সমুদ্রসীমায় গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে সরকার অনড় থাকবে। একই সাথে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের ঠিক একদিন পরেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গোপসাগরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য জাতিসংঘে সালিশে যাওয়ার কথা জানায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বাংলাদেশই প্রথম ১৯৭৪ সালে সমুদ্রসীমা আইন প্রণয়ন করে। তারপর ১৯৭৬ সালে মিয়ানমার এবং সর্বশেষ ১৯৭৭ সালে ভারত এ আইন প্রণয়ন করে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এ ধরনের বিরোধে বিরোধপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে চুক্তিপত্র রয়েছে। কিন্তু ভারত ও মিয়ানমারের সংগে বাংলাদেশের এখনো পর্যন্ত কোন চুক্তি হয়নি।ফলে দু’দেশ অনেকটা জোরপূর্বক আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা আইন লংঘন করছে। একই সংঘে আইন লংঘন করে তারা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা দখল ও ব্যবহারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ৩৫ বছর ধরে প্রতিবেশী দেশ দু’টির সংগে সমুদ্রসীমা নিস্পত্তির বিষয়ে আলোচনা চললেও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সংগে ৩৫ বছরে তেমন আলোচনা না হলেও বর্তমান সরকার দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে এবার খুবই সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান সরকারের সংগে ভারতের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে বাংলদেশ সরকার ইচ্ছে করলে দ্বিপাক্ষিক অনেক সমস্যারই সমাধান করতে পারে। অপরদিকে মিয়ানমারের সংগে ভালো সম্পর্ক রয়েছে চীনের সাথে। বাংলাদেশের সংগেও চীনের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সম্পর্কের এ সুযোগ ধরে বিষয়টিতে চীনের মধ্যস্থতার প্রস্তাবের কথাও ভাবছে সরকার। এ প্রসঙ্গে সরকারের একজন উপদেষ্টাও বক্তব্য রেখেছেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি চীনের মধ্যস্থতার বিষয়টি নাকচ করে দেন। তিনি বলেছেন, আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি উত্থাপন করেছি। সমুদ্রসীমা নির্ধারনে সালিশের আবেদনের ফলাফল পেতে ৪ থেকে ৫ বছর সময় লাগে। আমরা দু’দেশের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরানোর জন্য জাতিসংঘে যাচ্ছি না। বরং এর মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দেশ তিনটির সমুদ্রসীমা নিয়ে চলমান বিরোধের শান্তিপূর্ণ অবসান হবে। পাশাপশি এ বিষয়ে সমঝোতার আলোচনাও অব্যাহত থাকবে। গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমার বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের দাবিকৃত অন্চলে রিগ নিয়ে কোরীয় দাইয়ু কোম্পীর মাধ্যমে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করে। এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হলে কূটনৈতিক পর্যায়ে এবং সামরিক হস্তক্ষেপে মিয়ানমার রিগ প্রত্যাহার করে নেয়। এর পরপরই ডিসেম্বরে ভারতও একইভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে গেলে বাংলাদেশের তীব্র আপত্তির মুখে তা বন্ধ করে দেয়। আমাদের বিশ্বাস, দু’দেশের সাথে সমঝোতা আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া সম্ভব।


[চীনা ওয়েবসাইট]
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×