somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইহা বিরহ নহে...ভালবাসার শুরু......... B-) B-) :P B-) B-)

২৯ শে জুলাই, ২০১১ বিকাল ৫:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজিকে এক বালকের গল্প বলিব।বালকের নাম নবীন কুমার (সম্ভবত আসল নাম নহে)!তাহার পিতা দেশের এক নামকরা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা!!তাহার মাতা গৃহিনী।তাহার এক ভগ্নী রহিয়াছে।সেই ভগ্নী তাহার জেষ্ঠ্য!তাহারা ফি-বৎসর তাহাদের পিতার সহিত দক্ষিনা যাত্রায় যায়।সে এক ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা!

নবীনকুমার সেবার নবম শ্রেনীতে পড়িত।সবে মাত্র তাহার ভগ্নীর বাগদান হইয়াছে।তাহার দুই ননদী হরিয়াছে।তাহাদের সহিত নবীনকুমারের বড়ই মধুর সম্পর্ক!!যাহাই হোউক...নবীনকুমারের ভগ্নীর বাগদান হইবার দিন কয়েক পরই তাহারা তাহাদের পিতার সহিত সমুদ্র দর্শনে বাহির হইল!তাহাদের পিতার কর্মস্থল হইতে যাইতেছিলো তাহারা।তাহাদের সহিত তাহাদের মাতাও যাইতেছিলো।

দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে তাহারা সমুদ্রতীরে পৌছাইলো।সেইখানে থাকিবার স্থান পুর্বেই ঠিক করিয়া রাখা হইয়াছিলো!নবীন কুমারের মনে বেজায় আনন্দ!কারন হইল,সে গিয়াই খবর পাইয়াছে যে,তাহার পিতার কর্মস্থলের আরো মানুষ আসিয়াছেন।এই খবর পাইয়া কিন্তু সে এত আনন্দিত হয় নাই!!সে আনন্দিত হইয়াছে এই শুনিয়া যে,তাহার পিতার সহকর্মীর এক কন্যাও আসিয়াছে।সে আরও শুনিয়াছে যে,সেই কন্যা বেজায় সুন্দরী।তাহার নাম কুসুম কুমারী (ইহাও সম্ভবত আসল নাম নহে)!নবীনরা আর কুসুমরা একই বাটীতে থাকিবে।

নবীন কুমার উত্তেজনায় কাপিতেছে।কাপিতে কাপিতে সকলের সহিত সে বাটীতে প্রবেশ করিল।বসিবার কক্ষে ঢুকিয়াই তাহার চক্ষু স্থির।তাহারই বয়সী এক কিশোরী বসিয়া আছে।আশ্চর্য সুন্দর সে।তুষার শুভ্র গাত্র বর্ন।অদ্ভুত ভঙ্গিমায় বসিয়া বেলকুনীর কোনা দিয়া বাইরের আকাশ দেখিতেছিলো।কপালে একগুচ্ছ চুল পড়িয়া আছে।তাহা যেন তাহার রুপ শতগুনে বাড়াইয়া দিতেছিলো।নবীনদের আগমন দেখিয়া কুসুম উঠিয়া দাড়াইল।কুসুম নবীনের দিকে চাহিতেই নবীনের সমস্ত শরীরে কাঁটা দিয়া উঠিলো!!
সকলে কক্ষে প্রবেশ করিয়া আসন গ্রহন করিল।কিন্তু নবীনের চক্ষু তখনো কুসুমের রুপের পানে চাহিয়াছিলো!!সে কুসুম কে দেখিতেছিলো আর ভাবিতেছিলো..."ইহাকেই আমার চাই!যে করিয়াই হোক এর মন জয় করা চাই-ই চাই!!"
সকলের পিতা মাতারা চারিপার্শে বসিয়া রহিয়াছেন।নবীনের চক্ষু সরাইয়া নেওয়া প্রয়োজন।কিন্তু সে যে তাহা পারিতেছে না!!এ যেন হঠাৎ এক নেশা হইয়া গিয়াছে তাহার কাছে!
নবীনের নেশা কাটিলো কুসুমের পিতার ডাকে।কুসুমের পিতা কুসুমকে ডাকিতেছে।কুসুম কাছে আসিতেই সেঁ নবীনকে দেখাইয়া নবীনের পরিচয় বলিল!কুসুম নবিনের দিকে চাহিয়া ঠোট বাকা করিয়া হাসিল।সেই বাকা হাসি নবীনের হৃদয়ে দাগ কাটিয়া মিলাইয়া গেলো!!কুসুম নবীনকে তাহার কুশলাদী জিজ্ঞাসা করিল।নবীন বাধ্য বালকের ন্যায় সকল কিছুর সদুত্তর দিলো।সকলের কথা শেষ হইয়া গেলে যার যার নির্ধারিত কক্ষে চলিয়া গেল।

নবীন ভাবিয়া পায় না,কি করিয়া কুসুমের মন জয় করিবে!তাহার রুপ,তাহার হাসি,তাহার চাহনী,তাহার বচন সমস্তই নবীনকে মুগ্ধ করিয়াছে!!মানুষ কি করিয়া এইরুপ সুন্দর হইতে পারে?কি করিয়া পারে এমন করিয়া হাসিতে?বিধাতা কেন মানুষকে এইরুপ চক্ষু দেয় যাহা দিয়া চাহিলেই মন কাড়িয়া লওয়া যায়?এমন বচন ভঙ্গী কি কাহারও হইতে পারে?
ভাবিতে ভাবিতে সময় চলিয়া যায়।রাত্রি পার হইতে থাকে...নবীন জাগিয়া থাকে...।।

এই দিকে নবীনের ভগ্নী নবীনের ভাব সমস্তই খেয়াল করিতেছে।কুসুম কে দেখিবার পর যে তাহার ভ্রাতা অন্য মানুষ হইয়া গিয়াছে তাহা সে ছাড়া আর কেউ বুঝিতে পারে নাই!!সে সর্বদা ভ্রাতার সহিত রহিয়াছে।কি হইতে কি হইয়া যায়...সমস্তই তাহার প্রত্যক্ষ করিতে হইবে!!



দীর্ঘ এক রজনী কাটাইতে কাটাইতে নবীন কোন এক সময় ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলো এবং তাহা সে বুঝিল তাহার মাতার ডাকে ঘুম ভাঙ্গিবার পর।
ঘুম ভাঙ্গিবার সঙ্গে সঙ্গে তাহার মনে এক আনন্দ আসিয়া ভর করিল।আজই সে তাহার মনের কথা কুসুম কে বলিবে।খাইবার সময় আজিকে কুসুমের সহিতই বসিতে হইবে!সেইখানেই সুযোগ পাইলে বলিয়া ফেলিবে সে তাহার মনের সমস্ত কথা!
যথাসম্ভব দ্রুত সকল কাজ সারিয়া সে খাইবার কক্ষে গেলো।তখনো কুসুম সেইখানে আসে নাই।সে আর বসিল না,ফটকের নিকট দাড়াইয়া থাকিল।যেন কয়েক যুগ পরে কুসুম আসিল।কুসুম একটা কেদারা টানিয়া বসিতেই নবীন গিয়া তাহার পার্শ্বের কেদারায় বসিলো!
তাহারা খাইতেছে।নবীনের খাইবার রুচি নাই।।তাহার মনের কথা খুলিবার পুর্বে তাহার মুখে কিছুই রুচিবে না!!
খাওয়া শেষ হইয়া গেলেও নবীন কিছু বলিতে পারিল না।



ঘুরিতে ঘুরিতে হঠাৎ নবীন যেন সোনার হরিণ পাইলো।কুসুম দাড়াইয়া আছে।তাহার চারি পার্শে মানুষ রহিয়াছে ঠিক...কিন্তু কুসুমের দিকে খেয়াল নাই কাহারোই!!
নবীন কাছে যাইয়া কুসুম কে কোন ভুমিকা ছাড়াই তাহার মনের কথা খুলিয়া কহিলো!!
নবীনের কথা সবে শেষ হইয়াছে...ঠিক এই সময় কুসুমের পিতা আসিল।
কুসুমের কথা আর শোনা হইল না.........



নবীন কুসুমের উত্তর জানিবার আশায় ঘুড়িতেছে।জানিতে পারিতেছে না।কারন সর্বদাই কুসুমের সহিত কেহ না কেহ থাকিয়া যায়!!
সুর্য আস্তে আস্তে পশ্চিম দিকে ঢলিয়া যায়...আর নবীনের উদ্বেগ যেন শত গুনে বাড়িয়া যায়!!
রাত্রি হইলো।আবার সেই দীর্ঘ রাত্রি!!
সমস্ত রাত্রি সে অপেক্ষা করিতে পারিবে না।যা হইবার হইবে...কুসুমকে টেলিফোন করিয়াই জানিয়া লইবে সে তাহার উত্তর।
ওইদিকে টেলিফোনে রিং হইতেছে।টেলিফোনের সঙ্গে সঙ্গে যেন নবীনের অন্তরেও কিছুর মাঝে রিং হইতেছিলো...যদি কুসুমের পিতা টেলিফোন ধরে?কি করিবে সে?কিছু কি বলিবে?নাকি কাটিয়া দিবে?কাটিয়া দিলে যদি কুসুমের পিতা কুসুম কে সন্দেহ করিয়া বসে?নাহ সে কথাই কহিবে...যেই ফোন ধরুক না কেন!

অনেকক্ষন রিং হইবার পর কেউ টেলিফোনের রিসিভার তুলিলো।নবীনের বুক ধুক ধুক করিতেছে।
ওইপাশ থেকে কেউ বলিল,
"হ্যালো?"
নাহ...ইহা কুসুম!!যাক কুসুম ধরিয়াছে ফোন।
"কুসুম?আমি নবীন!"
"কি হইয়াছে?"
"সকালে তোমাকে যাহা বলিয়াছিলাম তাহা মনে আছে?"
"কি বলিয়াছিলে?"
"ওই যে খাইবার ঘরে!!"
"ওহ...মনে পড়িয়াছে।"
"তোমার মতামত জানিবার জন্যে আমি উদ্গ্রিব!!"
"নবীন...সেই সময় তো সেই কক্ষে অনেক ভীর ছিলো...তাই তোমাকে কিছু বলিতে পারি নাই!!"
"এখন বলিয়া ফেলো।এখন তো আমি ছাড়া কেউ শুনিবে না...যদি তোমার পার্শ্বে কেহ না থাকিয়া থাকে!"
"নবীন...আমার আর তোমার যেহেতু একই বয়স...আমরা ফ্রেন্ড থাকি?ওই সব ঝামেলায় আমরা আমাদের না জড়াই!!"


নবীনের মাথায় যেন আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়িলো!!সে তাহার চক্ষুতে অন্ধকার দেখিতে লাগিলো।


তাহার পরের ঘটনা জানা গিয়াছে নবীনের ভগ্নীর মুখে,
নবীন সেই রাত কাঁদিয়া কাটাইয়াছে।
সেই রাত্রে সে মুখে কিছুই দেয় নাই!!



আর নবীনের মুখে এখন শোনা যায়...
"সে সব তো শুধুই অতীত........."
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×