দিন পাল্টাচ্ছে, আমরা সিরিয়াস হচ্ছি। সঠিকভাবে বলতে গেলে ডিজিটাল এবং মডার্ন হচ্ছি। রিলেশনশিপ, ডেট,রুমডেট এগুলো এখন সিম্পল।অনেকটা ছেলের হাতের মোয়ার মত। অহরহ রিলেশনশিপ হচ্ছে,ব্রেকআপ হচ্ছে, অনেকটা লিভ টুগেদারের মতই। আমার মনে হচ্ছে আমি পুরনো গল্প টেনে অযথা সময় নষ্ট করছি কারণ এসব এখন সস্তায় এভেইলএভেল ঠিক যেন শীতের শেষ সময় বাজারে বিক্রি হওয়া মূলার মত,ক্রেতা নিতে না চাইলে ও বিক্রেতা জোর করে ব্যাগে ঢুকিয়ে দেয়। থ্রি-ফোরের বাচ্চারা ও এখন ফেসবুক চালায় এবং ইন এ রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেয়! ব্যাপার না,একবিংশ শতাব্দীর চালিকাশক্তি বলে কথা।
.
এখন যেটা নতুন ট্রেন্ড সেটা হচ্ছে মানবজীবনের জৈবিক চাহিদাগুলো যেগুলো কে একসময় কনফিডেনসিয়াল আর টপ সিক্রেট ব্যাপার মনে করা হতো সেগুলো কে ফার্মগেটের ফুটপাতে হকারদের মত আয় একশ,আয় একশ বলে খোলা বাজারে সেল করা! কয়েকদিন আগে তো ফেসবুক ব্যবহার করছি না পিরিয়ডবুক ব্যবহার করছি আমি বুঝতে পারি নি। এই ব্যাপারটা সম্পর্কে এর আগে আমার কোন জ্ঞানই ছিল না। ফেসবুকের বদৌলতে অনেক কিছু জানলাম। কারন অনেক ভাই ও বোনেরা দেখেছি ডাক্তার না হয়ে ও ব্যাপারটা একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের মত বিশ্লেষণ করে আমাদের সামনে অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। এখন যতটুকু জানি এ সম্পর্কে তা নিয়েই সিম্পলি ভেবেছি এবং লিখছি। এটা অত্যন্ত পার্সোনাল একটা ব্যাপার,এটা নিয়ে ছেলেদেরই বা মাথা ঘামানোর কি আছে আর মেয়েদেরই বা স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ করার কি আছে! অবশ্য ফেসবুকের কথা কি বলবো স্বয়ং টিভি চ্যানেলগুলো খুললে সারাদিন তো বিভিন্ন কোম্পানির প্যাডের এডভার্টাইজ দেখতে দেখতে ভুলেই যাই যে এটা কি মেয়েদের প্যাড এর এডভার্টাইজ নাকি বসুন্ধরা টিস্যুর এডভার্টাইজ,ব্যাপারগুলো একদম খোলা বাজারের পাম্প অয়েলের মত হয়ে গেল না! মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে ভালো কথা,বাসায় তাদের মায়েরা আছে,আশেপাশে হসপিটাল আছে,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে,সচেতনতা সৃষ্টি তো কতভাবেই করা যায়। আচ্ছা আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগে যখন আমরা জন্ম নিয়েছি তখন কি ছিল এই প্যাড? মনে তো হয় না। কই আমরা তো কেউ অস্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহন করি নি। এখন তাহলে সমস্যা হবে কেন? বাই দ্য ওয়ে অন্য রাস্তায় চলে যাচ্ছি,এটা নিয়ে অন্য একদিন বলবো। এখনকার ব্যাপারটা হচ্ছে যেহেতু আমরা মডার্ন হচ্ছি সেহেতু মায়ের সাথে মেয়ের একটা ডিসট্যান্ট বাড়ছে। যদি নাই বাড়ে তাহলে মেয়ের এই সমস্যাগুলোর কথা মা জানছে না কেন? এর সলিউশন করছে না কেন? মেয়েরা কেন চক্ষুলজ্জা কে উপেক্ষা করে স্টেজে দাড়িয়ে এ সম্পর্কে করনীয় জানতে চাইছে?!
.
হয়তো মনে মনে অনেকে ভাবছেন কাম অন ডুড এসব কি বলছো তুমি?! এগুলা কমন ব্যাপার,তুমি ক্ষেতের মত কথা বলো কেন?!
তাদের এই প্রশ্নে আমি নিরুত্তর। না, আমি এই কারণে নিরুত্তর নই যে তাদের এই প্রশ্নের উত্তরে আমার বলার কিছু নেই। বরং আমি এই কারণে নিরুত্তর যে আমি গভীরভাবে একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত। আচ্ছা একন এর "I just had sex" গানটা যেই হারে মার্কেট পেয়েছে আর আমরা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলো যেভাবে পাব্লিক করে যাচ্ছি,আমার তো মনে হয় না সেদিন বেশি দূরে যেদিন এক বন্ধু তার অপর বন্ধুকে কিংবা বান্ধবী তার অপর বান্ধবীকে বলবে, "দোস্ত আমার নিউ ভিডিও ক্লিপ টা আসছে ইউটিউবে একটু দেখিস,শেয়ার করে লাইক দিস প্লিজ!"
.
তখন কে কার ভিডিও স্ক্যান্ডাল দেখবে ম্যান?! সবাই তো ফেসবুক স্ট্যাটাসের মত নিজের ভিডিও নিজে আপলোড করায় বিজি থাকবে,অন্যের টা দেখে লাইক দিয়ে শেয়ার করার সময় কই?!