somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপির কনসার্ট রাজনীতি ও তারুণ্য

২৭ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুধুমাত্র কনসার্ট আয়োজন করেই যদি তরুণদের সমর্থন পাওয়া যেত, তাহলে জয় বাংলা কনসার্ট এবং তাপসের বিভিন্ন উদ্যোগই আওয়ামী লীগের জন্য যথেষ্ট হতো।

আজকের খবর অনুযায়ী আগামী ১১ এপ্রিল বিএনপি একটি কনসার্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে। ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়েও তারা তরুণদের জন্য কনসার্ট আয়োজন করেছিল। আমার মনে হচ্ছে, বিএনপি কনসার্ট আয়োজনকেই তরুণদের আকৃষ্ট করার মূল উপায় মনে করছে, কারণ বাইরে থেকে দেখা যায় যে তাদের তরুণদের সঙ্গে সংযোগ মূলত এসব আয়োজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

এ ছাড়া, ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপি এমন কোনো কার্যক্রম করেনি, যা তরুণদের, বিশেষ করে ১৫-৩৫ বছর বয়সীদের, আগ্রহ তৈরি করবে। বরং, এই সময়ে তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তরুণদের কাছে প্রতিক্রিয়াশীল বলে মনে হয়েছে।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে, যেখানে তথ্য সহজলভ্য, তরুণরা খুব সহজেই দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে পারে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোন দলের নেতাকর্মীরা কী করছে, তা মুহূর্তেই সবার কাছে পৌঁছে যায়। একই সঙ্গে, এসব ঘটনা নিয়ে তরুণরা প্রতি মুহূর্তেই প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। কথাচ্ছলে এক তরুণী আমাকে বলেছিল, "আমরা শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে তাড়িয়েছি, আর এমন কী আছে যেটাকে আমরা পরোয়া করবো?"

আওয়ামী লীগের ওপর থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাদের কর্তৃত্বপরায়ণ, দখলদারমূলক এবং উগ্র আচরণের কারণে। বিএনপির কিছু নেতা-কর্মীর কর্মকাণ্ডও প্রশ্ন তুলছে—তারা কি আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে? যদি তাই হয়, তাহলে তরুণরা আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিকেও প্রত্যাখ্যান করবে।

তবে, ছাত্রদল তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে আছে বলে মনে হয়। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে, তাদের সভাপতির বক্তব্য এবং বিভিন্ন কার্যক্রমে বোঝা যায় যে তারা এখনো বড় কোনো বিতর্কিত ইস্যুতে নিজেদের জড়ায়নি। কিন্তু সামগ্রিকভাবে বিএনপি তরুণদের আরও কাছে যাওয়ার বদলে তাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

সামনে নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপি হয়তো উত্তীর্ণ হবে, সরকারও গঠন করতে পারে, তবে যদি তারা তরুণদের কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আগামী ৫-১০ বছরে তারা ভয়াবহ সংকটে পড়বে। শুধু বিএনপিই নয়, এটি বাংলাদেশের অন্যান্য পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলোরও সমস্যা। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই উচিত নতুন প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা। কারণ, আজকের তরুণরাই আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে ভোটার এবং রাজনীতির মূল শক্তি হয়ে উঠবে। যে দল তরুণদের আকৃষ্ট করতে পারবে, তাদের চাহিদা ও প্রত্যাশা বুঝে পদক্ষেপ নেবে, সেই দলই রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবে।

বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের রাজনীতিবিদদের মধ্যে, তর্কসাপেক্ষে তরুণদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি হচ্ছেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। পার্থ বিএনপির কেউ নন, এবং বিএনপি এখনো এমন একজন ডায়নামিক ব্যক্তিত্ব বা তরুণদের কাছে আকর্ষণীয় কোনো নেতা তৈরি করতে পারেনি। ২০ বছর আগের বাবরের ভিডিও ক্লিপের মিম বানানো আর বাবরের জন্য কেন্দ্রে যাওয়া বা ভোট দেওয়া কিন্তু এক জিনিস না।

এই কারণেই বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে "ফ্রেশ ব্লাড" বা নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি যুক্ত করা জরুরি। এমন নেতৃত্ব দরকার, যারা বর্তমান তরুণদের মনস্তত্ত্ব বোঝে, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং সেই অনুযায়ী কার্যকর পরিকল্পনা নিতে সক্ষম। যদি এই প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে বিএনপির জন্য রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৩
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×