somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের ভারত শিক্ষা এবং জাতিসংঘের মানবিক করিডোর !

২৯ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা তো কিছু থেকে কিছু হইলেই আগে ভারতকে ২-৩ বার গালি দিয়ে নিই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ভারত আমাদের আদর্শ হতে পারে—যেমন ধরুন, ক্রিকেট। গতকাল ১৪ বছরের সূর্যবংশীর খেলা দেখে মনে হলো, ওরা এখন যে লেভেলে আছে, সেখানে যেতে আমাদের আরও ২০-৩০ বছর সময় লাগতে পারে। ওদের ক্রিকেট কাঠামো যেমন গঠিত, যেমন প্রতিযোগিতামূলক, সেটা আমাদের জন্য একটি দিকনির্দেশনা হতে পারে

আসলে মূল আলোচনা সেটা না। আলোচনা হচ্ছে—দেশের এখনকার প্রধান টপিক, রাখাইনের জন্য বাংলাদেশের ‘মানবিক করিডোর’। এই আলোচনায়ও ভারতকে উদাহরণ হিসেবে আনতে হচ্ছে। দেশের সামগ্রিক স্বার্থে ঐকমত্য গঠনের ক্ষেত্রেও ভারত আমাদের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে। এখানে অবশ্য একটা অদ্ভুত উদাহরণ দিতে হবে, সেটা হচ্ছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাকে যখন ভারত আশ্রয় দিয়েছিল, তখন কিন্তু সে দেশের সরকার এবং বিরোধী দল একসাথে ঐক্যমতের জায়গায় চলে এসেছিল।

আমার তো মনে পড়ে না বাংলাদেশে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আমরা এক হতে পারি। ভারতের যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছিল, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পরপরই এই ইস্যু নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেছিলেন লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে। এরপর তিনি সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করেছিলেন। হাসিনা ইস্যু হোক বা এখনকার পাকিস্তান ইস্যু—দেশের জাতীয় স্বার্থে ওরা এক হয়ে যায়।

অন্যদিকে আমাদের অবস্থা দেখুন। আমাদের ‘প্রিয়’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিসংঘের সহযোগিতায় মিয়ানমারে মানবিক করিডোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অথচ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করেনি। আমাদের প্রবণতাই এমন—অন্যকে বাতিল করে দেওয়ার সংস্কৃতি, অন্যকে পাত্তা না দেওয়ার সংস্কৃতি। যেমন ২০১৭ সালে যখন রোহিঙ্গা ঢল নামলো, তখন কি শেখ হাসিনা কারো সাথে আলোচনা করে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছিলেন? না, এটা তিনি একদিকে তার ব্যক্তিগত 'হ্যাডম' এবং অন্যদিকে তিনি কত ভালো মানুষ—সেই বার্তা দিতে ব্যবহার করেছেন।

ফলাফল? যাই হোক, আপনাদের জানিয়ে রাখি—আজকের সমকাল পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গত দেড় বছরে নতুন করে ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে গত বছরের মে-জুনের পর। শুধু গত সপ্তাহেই রাখাইন থেকে এসেছে ১ হাজার ৪৪৮টি পরিবার। এ ছাড়া আলাদাভাবে এসেছে আরও ৫ হাজার ৯৩০ জন।

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কি এই তথ্য জানে? সরকার যে নতুন করে এক লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে—এই সিদ্ধান্ত কার সাথে আলোচনা করে নেওয়া হয়েছে? সাধারণ জনগণ তো দূরের কথা, খোদ কক্সবাজার-উখিয়ার মানুষ, যাদের এলাকায় এই রোহিঙ্গাদের রাখা হচ্ছে, তারাই কি এতে একমত?

তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব সিদ্ধান্ত কি কাউকে জানিয়ে নিচ্ছে? ওই যে বললাম, অন্যকে পাত্তা না দেওয়ার সংস্কৃতি আমাদের রক্তে মিশে গেছে। এখন আবার ‘মানবিক করিডোর’ দেয়ার বিষয়টা। জাতিসংঘ চাইলেই কি আমাকে দিতে হবে? আমার নিজের নিরাপত্তার বিষয় আছে না?

সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা না করে কিভাবে নেওয়া হয়?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৫
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×