somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বান্দরবান ভ্রমন নিয়ে মেগা ছবিব্লগ।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিনের প্লান ছিলো বান্দরবান যাবো। যাবো যাবো করেও যাওয়া হচ্ছিলো না। অবশেষে গত শুক্রবার রাতে শ্যামলী পরিবহনের বাসে চড়ে বসলাম বান্দরবানের উদ্দেশ্য। সাথে স্ত্রী, কন্যা। সারারাত বাস চললো তুফান মেইলের মত। সকাল ৭ টায় বান্দরবান শহরে পৌছে গেলাম। বান্দরবান যাওয়ার আগে বান্দরবান সংক্রান্ত অনেক ব্লগ পড়েছি। ওখানকার কয়েকটা হোটেলের নাম্বার যোগার করেছিলাম। শহরে পৌছে রিক্সাওয়ালাকে বললাম কয়েকটা হোটেল এর সামনে নিয়ে ঘুরিয়ে আনতে। ২/৩ টা হোটেল ঘুরে প্লাজা বান্দরবান হোটেলটিই ভালো লাগলো। সেখানে একটা রুমে উঠে গেলাম। ডাবল বেডের এসি রুম। ১৫০০ টাকা। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে নাস্তা খেতে বের হলাম। এবার ও রিক্সাওয়ালার সাহায্য নিলাম। রিক্সাওয়ালাকে বললাম ভালো একটা হোটেলে নিয়ে যেতে। সে বাজারের "আদর্শ ভাত ঘর" হোটেলে নিয়ে গেল। দারুন মজাদার পরোটা সাথে গরুর মাংশ। চা টা ও ভালো ছিলো। খাওয়া দাওয়া করে হোটেলে ফিরেই দিলাম টানা ঘুম। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে গোছল করে আবারো হোটেল থেকে চা পান করে একটা ব্যাটারী অটোরিক্সা নিলাম স্বর্ন মন্দিরের যাবার জন্য। ভাড়া ৮০ টাকা। স্বর্ন মন্দিরে উঠতে হলে বেশ খানিকটা সিড়ি বেয়ে উঠতে হয়। আমার আবার হাটুতে সমস্য। তারপরেও সাহস করে উঠে গেলাম।

ছবিগুলো ক্যানন ৫৫০ডি ও ১৮-৫৫ লেন্স দিয়ে তোলা। লেন্সের সাথে একটা HOYA CPL FILTER লাগানো ছিলো। যার কারনে আকাশের ছবি বেশ নীলচে এসেছে। আমার ব্লগের সব ছবিতেই আকাশ চলে এসেছে। আকাশ আমার আগে থেকেই অনেক প্রিয় ছিলো, CPL FILTER কেনার পর আকাশের প্রতি ভালোলাগা একেবারে স্হায়ী হয়ে গেল।

সামু সার্ভারে আপলোড করে ৫০ টা ছবি দিয়ে ব্লগ দেওয়া অনেক কষ্টকর। তাই ছবিগুলোকে ফ্লিকারে আপলোড করে এখানে এড করা হয়েছে। আমার অতীত অভিজ্ঞতায় বলে, অন্য সাইটে ছবি আপলোড করে সামুতে এড করলে লোড হতে সময় লাগে। তাই ছবি লোড হতে সময় লাগতে পারে।

১> এবার শুরু ছবি ব্লগ। প্রথমেই বেশ খানিকটা দূর থেকে তোলা স্বর্ন মন্দিরের ছবি।



২>



৩>



৪>



৫> আগেই শুনেছিলাম বান্দরবানে প্রায়ই রংধনুর দেখা পাওয়া যায়। আমাকেও হতাশ হতে হয় নি।



৬> ফিরে আসার পথে সান্গু নদীর উপর ব্রীজ থেকে তোলা।



স্বর্নমন্দির থেকে ফিরে আবারো রিক্সাওয়ালাকে বললাম শহরটাকে একটা চক্কর দিতে। সে বাজারে পূর্বপাশে উপজাতী অধ্যুষিত এলাকাতে ঘুরিয়ে নিয়ে এল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে একটা ফাষ্টফুডের দোকানে মিষ্টি পরোটা ফ্রুট কেক আর চা খেলাম।

পরের দিন নীলগীরি যাবো। সকাল সকাল যেতে হবে তাই আগের দিন গাড়ী ঠিক করে রাখাটাই ভালো কাজ হবে মনে করে বাস স্ট্যান্ডে গেলাম । সেখানে গিয়ে একটা ছোট টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ভাড়া করলাম ৪০০০ টাকা। প্যাকেজ এভাবে, সকালে সরাসরি লীলগিরি, সেখান থেকে আসার পথে চিম্বুক, তারপর শৈলপ্রপাত। বিকালে আবার মেঘলা ও সন্ধ্যায় নীলাচল ভ্রমন। এই সময় পরেরদিন রাতে ঢাকায় আসার টিকেট কেটে রাখলাম শ্যামলী পরিবহনের। ভাড়া ৫৫০ টাকা জন প্রতি।

শহর ছেড়ে বের হতেই এক পাহাড়ীকে দেখলা কলার ছড়ি নিয়ে যাচ্ছে। একদম পাকা কলা। এইমাত্র গাছ থেকে কেটে নামানো হয়েছে। ২ ডজন কলা কিনলাম ৫০ টাকা দিয়ে। সারা রাস্তায় সেই কলা আমি আর আমার মেয়ে খেলাম।

নীলগীরি যাওয়ার পথের স্বর্পিল পথ। আকাবাকা পথের দুপাশে যাই দেখি চোখ জুড়িয়ে যায়। এটি দূর থেকে তোলা পাহাড়ের চুড়ায় নীলাচলের ছবি।
৭>



নীলগিরিতে ঢুকতে ১০০ টাকার টিকেট কাটতে হয়। সাথে পার্কিং ফি ১০০ টাকা।

৮> স্বপ্নের নীলগীরি রিসোর্ট।



৯>



১০>



১১>



১২> দূরবীন, ট্রাই করিনি



১৩> হেলিপ্যাড।



যেমনটা ব্লগ পড়ে, লোকমুখে শুনেছি। ওখানে মেঘ ছোয়া যায়। নীলগীরি যাওয়ার উদ্দেশ্যও ৯০% এমনটাই ছিলো। কিন্তু ওখানে গিয়ে কাছকাছি কোন মেঘ দেখতে পাচ্ছিলাম না। হটাৎ দক্ষিন দিকে দেখলাম কালো মেঘ এগিয়ে আসছে।

১৪> মেঘ আর কাছে আসলোই না। এই মেঘকে আর ছুতে পারলাম না। এই নিয়ে আমার বউয়ের কিযে আফসোস।



১৫>



১৬> কি আর করা। আশেপাশে ভয়াবহ সুন্দর দিগন্তের ছবি তুলতে লাগলাম।



১৭>



১৮>



১৯>



২০>



২১>



২২>



২৩>



২৪>



২ ঘন্টা সেখানে ঘুরাঘুরি করে এখন ফিরে আসার পালা। সর্পীল আকাবাকা রাস্তার কথা আগেই বলেছি। রাস্তাটা বেশ ভালো। খানাখন্দ খুব কম। যাও কিছু আছে, দেখলাম সেনাবাহিনীর লোকজনের তত্বাবধানে মেরামত করা হচ্ছে। এবার সেই রাস্তার কিছু ছবি।

২৫>



২৬>



২৭>



২৮>



২৯>



৩০>



৩১>



৩২> পিক ৬৯। এই পিচঢালা পথটুকু বাংলাদেশের সর্ব উচু গাড়ী চলা পথ।



চিম্বুক পাহাড়ে উঠার আগে গাড়ি থামিয়ে গাছে পাহাড়ী পাকা কলা, পেপে আর কমলা খেলাম। পেপের রং লালচে। আমরা যেরকম হলুদ দেখি, সেরকম না। অনেক মিষ্টি।

৩৩> নিচের ছবিগুলো চিম্বুক পাহাড়ের উপর থেকে তোলা।



৩৪>



হটাৎ করেই চিম্বুক পাহাড়ের পশ্চিম দিকে মেঘ জমতে শুরু হলো। হটাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হলো। আমার থেকে বেশী হলে ২০০/৩০০ গজ দুরে বৃষ্টি হচ্ছে।

৩৫>



৩৬> বৃষ্টি পশ্চিম থেকে দক্ষিনে চলে গেল।



৩৭> চিম্বুক থেকে নেমে আসার পথে চোখে পড়লো বিশাল এক মাকড়শা। এত বড় কালারফুল মাকড়শা আমি আগে দেখিনি।



৩৮> পাহাড়ের গায়ে আশ্চর্য এক লতা গাছ দেখতে পেলাম। ফুল আসার আগে এর পাতা ধবধবে সাদা হয়ে যায়, তারপর অদ্ভুত সুন্দর গোলাপী ফুল বের হয়।



৩৯> চিম্বুক থেকে নেমে আসার পর রাস্তা বৃষ্টিতে পিচ্ছিল হয়ে গিয়েছিলো। এই বৃষ্টিভেজা রাস্তায় গাড়ি চালানো অনেক বেশী ঝুকিপৃর্ন।



৪০> শৈলপ্রাপাতের ছবি। যদিও পানি পরিষ্কার থাকে, কিন্তু বৃষ্টি হলে পাহাড়ি মাটি ভেন্গে পানি নেমে আসে, ফলে পানি ঘোলাটে হয়ে যায়।



৪১>



৪২> মেঘলা লেকের উপর ঝুলন্ত সেতু।



৪৩>



৪৪> লেকের উপর ক্যাবল কার।



৪৫> আমাদের ভ্রমনের শেষ স্পট নীলাচল।



৪৬> নীলাচলের উপর থেকে তোলা বান্দরবন শহরের দক্ষিন দিকের ছবি।



৪৭> পাহাড়ের পাদদেশে জমতে থাকা মেঘ।



৪৮> গোধুলী বেলা



৫০> চিম্বুকের উপর থেকে পৃর্বদিকের একটা প্যানোরমা ভিডিও তুলেছি। সেটা ফ্লিকারে আপলোড করে দিলাম। ভালো লাগতেও পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৭
৪৮টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×