somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জানা আপুর মেয়ে 'কিন্নরী' ও তার পরিবারের সাথে কাঁটানো কিছু সময় (অবিস্মরনীয় পোস্ট)

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সন্ধ্যায় রংপুর বিভাগীয় বাংলা ব্লগদিবস আয়োজনের ব্যাপারে 'জানা' আপুর সাথে ফোনে কথা হচ্ছিলো আমি পরিচয় দিলাম 'রংপুর থেকে মাহতাব'। তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বললেন ও 'সমুদ্র?' আমি হেসে বললাম 'জ্বি' আমাদের আয়োজন, আমাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে তার উচ্ছ্বাস সত্যিই আমাকে বিমুগ্ধ করছিলো। বিভিন্ন আলাপের ফাঁকে জানা আপুর পারিবারিক কিছু কথাবার্তা চলে আসে। তিনি পরিবারের কথা বলতে গিয়ে জানান তার এক মেয়ে আছে নয় বছর বয়স। আমি আগ্রহ বাড়িয়ে জিজ্ঞস করি তার মেয়ের নাম। তিনি বললেন 'কিন্নরী'। আমি এই নাম শুনে থমকে যাই। এরপর জানা আপুকে থামিয়ে আমি কথা বলতে শুরু করি। আমি বলি 'আপু আপনি একবার রংপুরে এসেছিলেন' জানা আপু বললেন 'হ্যাঁ' আমি আবার বলি 'আপনি আপনার পরিবারসহ এসেছিলেন, সাথে আপনার হাসবেন্ড, আপনার বড়বোন, বড়ভাই, আপনার মা।' জানা আপু সহজে অবাক হওয়ার মত মানুষ নন, তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠেই বললেন 'হ্যাঁ' আমি আবার বলতে শুরু করি 'আপনারা এসেছিলেন আপনার বড় ভাইয়ের স্মৃতি বিজড়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হোস্টেল দেখতে' তিনি জানালেন 'হ্যাঁ'। 'আপনাদের একটি একজন আবাসিক বর্ডার গোটা হোস্টেল ঘুরিয়ে দেখায়, যার কিনা আপনার বড় ভাইয়ের সীটে তার বর্তমান অবস্হান ছিলো, সেই ছেলে একে একে হোস্টেলের ডাইনিং, বাথরুম এলাকা, হোস্টেলের বাইরে বিশাল বটগাছ ঘুরিয়ে দেখায়, হোস্টেল এবং ক্যাম্পাসের বিশদ বর্ণনা দিচ্ছিলো, আপনার মেয়ে কিন্নরী কে কোলে নিয়ে আদর করেছিলো, কাঁধে নিয়ে ক্যাম্পাসের কিছুটা পথ ঘুরে বেড়িয়েছিলো ' জানা আপু আমার কথা শুনে 'টাস্কিত' বুঝলাম। জানা আপুর সব মনে পড়ে। এরপর আমি বলি আমিই সেই বর্ডার আপনার পরিচিত 'মাহতাব সমুদ্র' জানা আপুর উচ্ছ্বাসের কাছে আমি পরাজিত। আমার সালটা মনে ছিলো না, জানা আপুই মনে করিয়ে দিলো ২০০৯সাল। বিকেলে হোস্টেলের সামনে দুটো গাড়ী পর পর এসে থামার শব্দ পাই। আমি রুম থেকে করিডোরে এসে দেখি বেশ কয়েকজন পুরুষ মহিলা এবং একজন বিদেশি মাইক্রোবাস থেকে নেমে আমার হোস্টেলের ভিতর প্রবেশ করছিলেন। আমি এগিয়ে কথা বলতেই একজন মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক জানালেন তিনি এখানে পড়াশোনা করেছেন এবং এই হোস্টেইলেই ছিলেন এরপর তিনি তারপর তার রুম খুঁজতে লাগলেন এবং পেয়েও গেলেন। যে রুমটা পেলেন সেটা ছিল আমারই রুম। তিনি তার পরিবার কে দেখিয়ে দিলেন যে বেড সেটা বর্তমানে আমারই বেড। আর একজন অল্প বয়স্কা মহিলা সেটা ইংরেজি আর অন্য ভাষায় সেই বিদেশিকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। তাদের সাথে ছিলো ফুটফুটে তুলতুলে এক বাচ্চা যাকে কোলে নেয়ার লোভ আমি সামলাতে পারি নি। পরে তাদের সাথে পরিচিত হই, সেই মধ্যবয়স্ক লোক সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন, সাথে সম্ভবত তার মা ছিল, তার অন্যান্য বোন, অল্পবয়স্কা মহিলাও তার ছোটবোন এবং ছোটবোনের স্বামী সেই বিদেশি। এরপর আমি আমার দুএকজন বন্ধুকে নিয়ে গোঁটা হোস্টেল ঘুরিয়ে দেখিয়েছি অনেক কথা বলেছি। এও জেনেছি যে ষাটের দশকে সেই ভদ্রলোক এখানে ছিলেন। অনেক কথা গল্পের মাঝে তাদের বিদায় দিয়েছি। তাদের সবার সাথে পরিচিত হওয়ার পরও সবার নাম ভুলে গিয়েছি। শুধু একটি নাম মনে ছিলো, মাথায় গেঁথে গিয়েছিলো 'কিন্নরী'। মনে ছিল এজন্য যে একজন বিদেশিকে বিয়ে করার পরও তাদের মেয়ের নাম এত সুন্দর বাংলায় কিভাবে রাখে? তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমার মেয়ের নামও রাখবো 'কিন্নরী'। আজ জানা আপুর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হলাম সেই অল্পবয়স্কা ভদ্রমহিলাই আমাদের 'জানা' আপু, সেই বিদেশি (তখন শুনেছিলাম নরওয়েজিয়ান এবং আইটি বিষয়ক কি যেন করে) আরিল তার হাসবেন্ড এবং মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক সৈয়দ আব্দুল মতিন জানা আপুর বড় ভাই। হোস্টেলে তো অনেকেই আসে, আসাম থেকে আসে, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি থেকে আসে। ১৯১৬ সালে কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এখানের শিক্ষার্থীদের বিশাল অংশই ছিল ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্হানের। জীবনের শেষ বয়সে স্মৃতিকাতর হয়ে কিংবা অকারনে অকারনেই অনেকেই আসে। কারো নামতো মনে থাকে না। ভাগ্যিস 'কিন্নরী' আমার মেয়ের নাম রাখতে চেয়েছিলাম। আসলেই আমি ভাগ্যবান। জানা আপুর নাম এতবার শুনেছি অথচ তার সাথে আমার দেখা হয়েছিলো সেটাই জানা ছিল না। আজ জানা আপুর সাথে কথা না বললে সেটাও জানা হত না!
[জানা আপুকে বলেছিলাম এই ব্যাপারে রাত্রে পোস্ট হবে, তিনি হেসে বললেন দিও][yt|]
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৩:২৯
৬০টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×