somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপিকা , দ্বিতীয় পর্ব ।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অসমাপিকা , শুরুর অধ্যায় Click This Link

লীনা অনেক দূরে যতটা দূরে দৃষ্টি দেয়া যায় ততটা দূরে তাকিয়ে থাকে , দেখে না কিছু । তার চোখ কিছু দেখতে পায় না , বোধশক্তিহীন হয়ে অসাড় বসে থাকে চেয়ারে । সামনে পড়ে আছে দীপুর কাপ চা ভরা , নিজেরটাও শীতল । সময়ের সাথে সাথে সব কিছু কি শীতল হয় ! হঠাৎ দূরে চোখ পড়ল একটা রিকশার দিকে , একা দীপু যাচ্ছে ! পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখে রবি , শান্ত , মিজান আছে তাদের টেবিলে । পরের ক্লাস আরো আধ ঘন্টা পর ।
ব্যাগটা টেনে নিয়ে ওদের টেবিলে বসে খালি চেয়ারটা টেনে নিয়ে । টেবিলের ওপর পড়ে আছে দীপুর নোটবুক , ক্লাসে ব্যবহার করে । রবির দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় লীনা , ' কি ব্যাপার , দীপুকে মনে হয় দেখলাম রিকশায় যাচ্ছে কোথাও , ক্লাস করবে না ও '?
রবিকে দেখে মনে হল কথা বলতে চাইছে না লীনার সাথে । ক্ষুদ্ধস্বরে বলল , ' তোমারই তো জানবার কথা কেন যাচ্ছে কোথায় কি হয়েছে ওর । কিছু বোঝ না তুমি ? ' শ্লেষ ঝরে পড়ে রবির কথায় ।
শান্ত বলে , ' তুমি পার মেয়ে , তোমরা সব পার ; জাহান্নামে যাক দীপু তাতে তোমার কি ; কেন জানতে চাইছো '?

লীনার কান্না পেয়ে যায় , পরিস্তিতি ওকে অনুমতি দেয় না কাঁদবার । সুযোগ পেয়েছে ওরা কথা শোনাবার । মিজান চুপ করে ছিল এতক্ষন । নীরিহ শান্ত-শিষ্ট ছেলে মিজান ভার্সিটিতে ঢুকে ফার্স্ট ইয়ারে একটা ডায়রী গিফট করেছিল লীনাকে । সেখানে শুভেচ্ছা বাণী হিসেবে যা লিখেছিল সেটা অন্যরা জানে নাই কোনদিন । মিজান যে লীনাকে পছন্দ করতো সেটাই বা কে জানে লীনা ছাড়া । লীনা বরাবর মিজানের সাথে এমন আচরন করেছে যে মিজান নিজেও অবাক হয়েছে । যেন কিছুই হয়নি কোথাও ।
লীনা মিজানের দিকে তাকিয়ে জানতে চায় দীপু কোথায় গেছে , কি বলেছে ।
মিজান যা জানায় তার সারমর্ম হল দীপু লীনার ডেকেছে জেনে উচ্ছ্বসিত হয়ে গিয়েছিল । সেই দীপু লীনার টেবিল থেকে ওদের কাছে
ফিরে মেজাজ দেখাচ্ছিল । তারপর ওদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিল যার যা ছিল কাল কক্সবাজার যাবে বলে হঠাৎ করে । রবি জানতে চেয়েছিল একা যাবে কিনা । উত্তরে বলেছে তার নিজের সাথে বোঝাপড়া আছে , একাই যেতে চায় সে । আরো নাকি বলেছে , ওর যেদিন ইচ্ছা ফিরবে কেউ যেন খোঁজ না করে । বন্ধুরা এ সময়ে হঠাৎ ওর ক্লাস ফেলে যাওয়াকে সমর্থন করছিল না দেখে নাকি বলেছে ওর মাথায় কিছু ঢুকছে না । আরো কি যেন বলতে চাইছিল মিজান । হঠাৎ রবি রেগে ওঠে । মিজানকে ধমক দিয়ে বলে , ' তোর এত কথা বলার দরকার কি ? কাকে বলছিস ? বাদ দেয় '।

লীনা উঠে দাড়িয়ে মিজানকে ডাকে । ক্যান্টিনের দরজার বাইরে গিয়ে দাড়ায় । মিজানকে কিভাবে কি বলবে গুছিয়ে নিতে সময় নেয় । মিজান বলে , ' দীপু তোমাকে অনেক পছন্দ করে , ও খুব ভাল একটা ছেলে তুমিও জান । তোমার কোথায় সমস্যা ? কেন তুমি দীপুর মনটাকে বুঝতে চাইছো না । আমরা বন্ধু হয়ে কতটা ভূমিকা রাখতে পারি ? তবু বলব তুমি দীপুকে ভালবাসলে ঠকবে না । বরঞ্চ ফিরিয়ে দিলে সারাজীবন আর নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না । বলে , লীনা আমি তোমাকে অনেক পছন্দ করি তবু বুঝতে পারি দীপুর মত করে না '।

লীনার কোন কথা নাই , যা আছে সে সব ধোপে টিকবে না এখন । মিজানকে বলে , ' তুমি আমার হয়ে দীপুকে বলবে এ সময়ে তার
কক্সবাজার যাওয়া হবে না আমার বিশেষ অনুরোধ । কাল সকালে নয়টার ক্লাসের পরে যেন আমার সাথে দেখা করে এখানে । আজ রাতে আমাকে ফোন করতে বলবে '।
মিজানের সেল নম্বর চেয়ে নেয় লীনা । দীপুরটাও । নিজেরটা মিজানকে দিয়ে বলে , ' তুমি কথা বলবার পর বলবে আমাকে যেন একটা ফোন করে সে , আমি অপেক্ষা করবো ওর ফোনের '।

মিজান সম্মতি জানায় লীনার কথার , সেই সাথে রবি আর শান্তর হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেয় । বলে দীপুকে সবাই এত ভালবাসে , ছেলেটা কষ্ট পাচ্ছে দেখে ওরা অমন করেছে ।
লীনা কিছু বলে না , কি বলবে ?
ও কি কষ্ট পাচ্ছে না ! নিজেকে নিজের কাছে অসহায় লাগে , এক একবার উপদ্রব মনে হয় ।
কোনভাবে ও চায় না দীপুর কোন কষ্ট হোক , ক্ষতি হোক , অমঙ্গল হোক ।
কেউ না জানে ওর মন জানে দীপু কে , কতখানি তার কাছে ।

চলবে....
পরের অধ্যায় Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৪৫
১৪টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাতে লাগে ব্যথা রে, কোক ছাইড়া দাও সোনার দেওরা রে…

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৩২

"কোকাকোলার লোগো প্রতিবিম্বিত করলে তা আরবি বাক্য 'লা মুহাম্মদ, লা মক্কা' সাদৃশ্য হয়। যার অর্থ দাঁড়ায় 'না মুহাম্মদ, না মক্কা' (No Muhammad, No Mecca)।" এই ইস্যুতে একবার মুসলিম বিশ্বে বয়কটের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরফমানব এবং ইভের সাত কন্যা

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

১৯৯১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের এক সকাল বেলা। আল্পস পর্বতমালার ইতালী অস্ট্রিয়া সীমানায় এরিকা এবং হেলমুট সাইমন নামের দুইজন অভিজ্ঞ জার্মান পর্বতারোহী তাদের হাইকিংয়ের প্রায় শেষ সময়ে এসে পৌঁছেছেন। গতরাতে আবহাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোকাকোলা সহ সকল কোমল পানীয় বর্জন করুন। তবে সেটা নিজের স্বাস্থ্যের জন্য, অন্য ব্যবসায়ীর মার্কেটিং কৌশলের শিকার হয়ে না।

লিখেছেন নতুন, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

মার্কেটিং এর ম্যাডাম একবার বলেছিলেন, "No publicity is bad publicity." প্রচারের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের মনে ব্র্যান্ডের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া। কিছুদিন পরে মানুষ ভালো কি মন্দ সেটা মনে রাখে না,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওরা আমাদের ঐতিহ্যের পোশাককে নোংরা পোশাক হিসেবে পরিচিত করতে চায়। ওরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে চায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০


"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।"

এক মৌলভী পোস্ট দিয়েছেন
"শাড়িকে একটি নোংরা পোশাক বানিয়ে দিয়েন না।
শরীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৬

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯



ছবি তোলার স্থান : মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×