জাতীয় স্বার্থে আমাদের ব্লগারেরা সবসময়ই সোচ্চার অবদান রেখেছে। শত দ্বন্ধ বিবাদ থাকা সত্বেও তারা কখনোই কল্যাণকামীতা থেকে পিছিয়ে থাকেনি। তারই পরম্পরায় আবারো এসেছে তার ভূমিকা নেয়ার আহ্বান। আমরা সব ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সরব শ্লোগান সমেত উপস্থিতি আশা করছি আগামিকাল লং মার্চের সূচনা লগ্নে। ২৮ অক্টোবর ,২০১১ সকাল ৯ টা ৩০ এ দলে দলে হাজির হয়ে আপনারা আপনাদের পরিবর্তণের আশা অন্যায়ের প্রতিবাদ ও প্রতিবাদকারীদের প্রতি সমর্থন জানাতে পারেন।
আমরা আপনাদের বিশাল জমায়েত আশা করছি। সেইসাথে যারা পুরো লংমার্চ বা আংশিক যেতে চান তারা আমাদের সাথে সেখান থেকেই যাত্রারাম্ভ করতে পারেন।
void(1);
অবিলম্বে জাতীয় সংস্থার মাধ্যমে ‘সুনেত্র’ ও রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন, কনোকো ফিলিপসের সাথে চুক্তি বাতিল, ‘পিএসসি ২০১১’ প্রক্রিয়া বন্ধ, এবং ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়নসহ ৭ দফা দাবিতে
২৮-৩১ অক্টোবর ২০১১ ‘ঢাকা সুনেত্র লংমার্চ’
লং মার্চ-এর রুট
২৮ অক্টোবর - সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে যাত্রা শুরু > দুপুরে টঙ্গী >
সন্ধ্যায় গাজীপুর রাজবাড়ী মাঠে জনসভা ও রাত্রিযাপন >
২৯ অক্টোবর সকাল ৯টায় গাজীপুর থেকে যাত্রা > দুপুরে ভালুকা >
বিকেলে ময়মনসিংহে জনসভা ও রাত্রিযাপন >
৩০ অক্টোবর সকাল ৯টায় ময়মনসিংহ থেকে যাত্রা > দুপুরে শ্যামগঞ্জ >
বিকেলে নেত্রকোনায় জনসভা ও রাত্রিযাপন >
৩১ অক্টোবর সকালে নেত্রকোনা থেকে যাত্রা > দুপুরে মোহনগঞ্জ >
বিকেলে ধরমপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জে জনসভার মাধ্যমে সমাপ্তি
সরকার নির্বিশেষে, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতের উপর বিদেশি কোম্পানি ও দেশি কমিশনভোগীদের আধিপত্য বজায় আছে। সেজন্য জ্বালানী খাতের সংকট উত্তরণে সহজ কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপগুলো নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্যই দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরা বর্তমান কোন বৃহৎ দলের উপর ভরসা করতে পারি না। কারণ তারা সাম্রাজ্যবাদের স্থানীয় দফতর মার্কিন দূতাবাসের নেতৃত্বে ক্রিয়াশীল দুর্বত্ত বিশ্বজোটের কাছে বাঁধা। তাই জনগণের সজাগ ভুমিকাই একমাত্র বাঁচার পথ। দেশের সম্পদ বিদেশি ডাকাত বা দেশি কমিশনভোগীদের হাত থেকে রক্ষা করে দেশের কাজে লাগাতে জনগণকেই পাহারাদারের ভূমিকা নিতে হবে। সেজন্যই আমাদের এই লংমার্চ কর্মসূচি।
জাতীয় সম্পদ তথা দেশের উপর জনগণের মালিকানা ও কর্তৃত্ব নিশ্চিত করবার জন্য আয়োজিত এই লংমার্চের প্রধান দাবিসমূহ:
X অবিলম্বে জাতীয় সংস্থার মাধ্যমে ‘সুনেত্র’ ও রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু কর। কোন বিদেশি কোম্পানিকে এর সাথে যুক্ত করা চলবে না।
X স্থলভাগের অবশিষ্ট গ্যাসক্ষেত্রগুলি বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেবার জন্য আরেকটি ভয়ংকর জাল ‘পিএসসি ২০১১’ প্রক্রিয়া বন্ধ কর। অবশ্যই আর কোন পিএসসি নয়।
X রফতানিমূখী পিএসসি ২০০৮ ও কনোকো ফিলিপসের সাথে চুক্তি বাতিল কর।
X ‘ফুলবাড়ী চুক্তি’র পূর্ণ বাস্তবায়ন কর। ‘উন্মুক্ত না, বিদেশি না, রফতানি না’ এই শর্তের ভিত্তিতে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবার জন্য জাতীয় সংস্থা গঠন কর।
X বড়পুকুরিয়ার কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ নেবেন, কিন্তু বিদেশি কোম্পানি আর লুটেরাদের কাছে জমিঘরবাড়ি ছেড়ে দেবেন না।
X গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে ‘খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধ আইন’ পাশসহ জাতীয় কমিটির ৭ দফা অবিলম্বে বাস্তবায়ন কর।
জাতীয় কমিটির ৭ দফা দাবি"
১) যেহেতু ৫০ বছরের জ্বালানি চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশের স্থলভাগে ও সমুদ্রে তেল-গ্যাস-কয়লা মজুদ অনেক কম, সেহেতু কোনোভাবেই তেল-গ্যাস-কয়লা খনিজদ্রব্য নিয়ে কোনো রপ্তানিমুখী চুক্তি করা যাবে না। কোনো চুক্তি বা সমঝোতা হয়ে থাকলে তা বাতিল করতে হবে। জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত ‘খনিজ সম্পদ রপ্তানি নিষিদ্ধকরণ আইন’ অবিলম্বে পাশ করতে হবে।
২) রপ্তানিমুখী ‘মডেল পিএসসি ২০০৮' বাতিল করে শতভাগ দেশীয় মালিকানার শর্ত রেখে নতুন নীতিমালার ভিত্তিতে তেল-গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য সীমানা নির্দিষ্টকরণ ও এই এলাকায় সার্বভৌম কর্তৃত্ব নিশ্চিত করবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩) আবাদি জমি-পানি সম্পদ-খাদ্য নিরাপত্তা ও মানুষ বিনাশী কয়লা উত্তোলনের উন্মুক্ত খনন পদ্ধতি নিষিদ্ধ এবং এই পদ্ধতির পক্ষে দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং প্রতারণামূলক অপতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত এশিয়া এনার্জিসহ বিভিন্ন ব্যাক্তি ও গোষ্ঠীকে অবিলম্বে বহিষ্কারসহ জনগণের সঙ্গে সরকারের স্বাক্ষরিত ৬ দফা ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। উন্মুক্ত পদ্ধতি অনুমোদনের চেষ্টায় কয়লানীতি ঝুলিয়ে না রেখে ‘উন্মুক্ত না, রপ্তানি না, বিদেশি না’ নীতিমালার ভিত্তিতে পরিবেশ অনুকূল পদ্ধতি গ্রহণ করে দ্রুত কয়লা সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। এই বিষয়ে জাতীয় সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৪) স্থলভাগের ১২টি সমৃদ্ধ গ্যাস ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য চুক্তি করার পর সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কর্তৃক অনুসৃত নীতি তথা বর্তমান তীব্র গ্যাস সঙ্কটের সুযোগে দেশকে জিম্মি করে দীর্ঘসূত্রিতা, প্রতারণা ও অনিয়ম অবলম্বনের নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সকল অসম পিএসসিসহ বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী সব চুক্তি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় ও দেশীয় সংস্থার কর্তৃত্বে বা নিয়ন্ত্রণে খনিজ উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে। মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলার দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশের প্রাপ্য অন্তত ৩৫ হাজার কোটি টাকা আদায় করে বিদ্যুৎ সঙ্কট নিরসনে ব্যয় করতে হবে। স্থলভাগে আর কোনো পিএসসি করা যাবে না, আবিষ্কৃত সকল ক্ষেত্র উন্নয়ন ও উৎপাদন বাপেক্সসহ জাতীয় সংস্থাগুলোর দায়িত্বে হতে হবে।
৫) পেট্রোবাংলা, বাপেক্স, জিওলজিক্যাল সার্ভে আণবিক শক্তি কমিশন জ্বালানিখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে পঙ্গু করবার নীতি ত্যাগ করে, এই খাতকে দুর্নীতিবাজ ও বিদেশি কোম্পানির রাহুমুক্ত করতে হবে এবং জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬) জ্বালানি সম্পদ নিয়ে এ যাবতকালে বিভিন্ন সরকারের আমলে যেসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং এগুলোসহ যেসব অপতৎপরতার কারণে বাংলাদেশে জ্বালানি নিরাপত্তা বিপর্যস্ত ও ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলার জন্য দায়ী দুর্নীতিবাজ জাতীয় স্বার্থবিরোধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭) ২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সংগঠিত জাতীয় কমিটির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশি হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আরো দেখুন:
1. তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১:৪৯