somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজা

১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি বিশ্ব রোড এর ফ্লাই ওভার ধরে হাঁটছি ৷ আজকে কোনও কারণে traffic jam নাই ৷ ঢাকা শহর, মাঝে মধ্যে আমাদের সাথে রসিকতা করে ৷ আজকে মনে হয় এমন একটা দিন ৷ আমি যে পথ ধরে হাঁটছি এ পথ ধরে মানুষ তেমন হাটে না ৷ বিশ্ব রোড বলে কথা ৷ মানুষ সাই সাই করে গাড়ি ছুটিয়ে যাচ্ছে আর অবাক করে আমার দিকে তাকাচ্ছে ৷ আমি যদিও বুঝলাম না তার কারন কি ৷ আমার বিপরীত দিক থেকে একজন লোক আসছে ৷ তার পড়নে সাদা পাঞ্জাবী পায়জামা তার উপর উনি বেশ দামী একটা সোয়েটার পড়েছেন ৷ দেখতে খুব জ্ঞানী লাগে ৷ মাথায় কাঁচা পাকা চুল ৷ মোচ গুলোও কাঁচা পাকা ৷ কাল ফ্রেম এর চশমা পড়েছেন৷ তিনি আমার কাছে আসতে আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম

- uncle
- - জী আমাকে বলছেন ?
- জি জি , এখানে তো আর কেউ নাই
- ওহ, হ্যাঁ বলেন ৷
যদিও আমার ইচ্ছা ছিল, তাকে রিফাত এর কথা জিজ্ঞেস করব কিন্তু আমি বললাম
- আচ্ছা আপনি কি scientist ?
লোকটা মোটেও বিরক্তি দেখাল না
- কেন বল তো ?
- আমি একটা research করছি ৷ মানুষের appearance এর সাথে তার পেশা ও কাজ কর্মের কদ্দুর relation আছে তাই নিয়ে ৷
- আচ্ছা আচ্ছা তাই নাকি, দারুণ তো ৷ বেশ ৷
- তো, আপনি কি scientist ?
- না না তেমন কিছু না, আমি সাহিত্যিক, গল্প উপন্যাস লিখি ৷
Scientist আর সাহিত্যিক দের মাঝে কি পার্থক্য আমি তা আজও বুঝতে পারি নাই , আমার কাছে এরা একই৷
- আচ্ছা আসল কথা বলি, আপনি কি রিফাত কে দেখেছেন ?
লোকটা মোটেই অবাক হল না,
- তুমি কোন রিফাত এর কথা বলছ?
- কে আবার আমার বন্ধু রিফাত
- তাকে কি আমি চিনি ?
- আপনি চিনেন কিনা আমি কি জানি , চেনার দরকার কি, তাকে রাস্তা ঘাটে দেখেছেন?
- আমি সম্ভবত দেখি নাই, তুমি কি তাকে খুঁজছ?
- না খুঁজলে আপনাকে জিজ্ঞেস করব কেন ?
- আমি সম্ভবত দেখি নাই ৷ তুমি কি তার কোনও ছবি দেখাতে পারবে ?

তাকে ছবি দেখানোর মত ধৈর্য আমার নাই ৷ আমি আমার পথে হাটা শুরু করলাম ৷ এখন দুপুর ৩ টা বাজে ৷ ৩ টা কি দুপুর ? নাকি বিকেল ? আমি এবার অপু কে ফোন দিলাম ৷ অপু রিফাত এর undergrad এর বন্ধু ৷ অপু আগে নিকুঞ্জ থাকত ৷ এখন অবশ্য কই থাকে কেউ জানে না ৷ অপু মারাত্মক briliant student ৷ ওর কাছে গেলে নিজেকে বোকা বোকা লাগার কথা যে কোনও মানুষের ৷ আমার অবশ্য যে কারো সামনেই নিজেকে বোকা বোকা লাগে ৷

- অপু
- কে বলেছেন ? (কোনও ভদ্রতা নাই ফোন ধরেই কে বলছেন!)
- অপু তুমি আমাকে চেন না, কিন্তু তুমি রিফাত কে চেন , আমাকে না চিনলে ও হবে ৷ রিফাত কে কি তুমি দেখেছ ?
- আরে বন্ধু তুমি ! কেমন আছিস,
- রিফাত কে দেখেছিস ?
- না রে, কেন কি হ

কথা শেষ হওয়ার আগে আমি ফোন কেটে দিলাম ৷ একজন পত্রিকা ওয়ালা আমার পাস দিয়ে যাচ্ছে ৷ পত্রিকা ওয়ালাদের হকার বলে কেন আমি বুঝি না ৷ যে বাদাম বেচে সে বাদাম ওয়ালা ৷ যে চানাচুর বেচে সে চানাচুর ওয়ালা ৷ কিন্তু যে পত্রিকা বেচে সে হকার ৷ পত্রিকা ওয়ালা কিছু marketing activity সম্পন্ন করল৷ কিন্তু আমি পত্রিকা না কেনায় সে ভীষণ হতাশ ৷ আমি পত্রিকা পড়ি না ৷ কিন্তু এই লোক আমার পিছু ছাড়তে নারাজ ৷ সে আমার কানের পামে ঘেন ঘেন করছে আর আমার সাথে হাঁটছে ৷
একটা গল্প বলি ৷ একবার আমি ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছি ৷ এক পিচ্চি আমার পা ধরে বসে পড়ল ৷ আমি নিজেকে রাজা মহারাজা ভাবতে শুরু করলাম ৷ আমার পাশের বসা চাচা ভীষণ ক্ষেপে উঠলেন ৷ উনি নিশ্চয়ই jealous feel করছিলেন ৷ পাশের লোক রাজা হয়ে গেল ৷ কেন তার পা ধরে বসে পড়ল না, রাজা আর রাজত্বের অনুভূতি দারুণ ৷ তিনি বেশ কয়েকটা ঝাড়ি দিতেও ছেলেটা আমার পা ছাড়ল না ৷ প্রায় ১০ মিনিট আমার পা ধরে ছেলেটা বসে আছে ৷ আর একটু পর পর আমার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে কি যেন বলছে ৷ আমি ভাবলাম নিচ্ছই আমার প্রজা কোনও অন্যায় করেছে ৷ আমার কাছে ক্ষমা চাইছে ৷ আমি আমার হাতটি তুলে তার মাথায় রাখলাম ৷ রাজা মহা রাজার মত গম্ভীর করে বললাম যা ক্ষমা করে দিলাম ৷
দুঃখের বিষয় ছেলেটা আমার কথা কি বুঝল আমি জানি না , সে একই ভাবে নির্বিকার হয়ে আমার পা ধরে ফেল ফেল করে তাকিয়ে থাকল ৷ একটু পড় দেখলাম আমার পাসে বসা বুড়ো টা ২ টাকার একটি নোট বের করে ছেলেটাকে দিতেই সে টাকা টি লুফিয়ে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল ৷

আমি মনে মনে ভাবলাম হায়, যতই টাকা বিলাও তুমি রাজা মহারাজা হতে পারবে না হে বুড়ো ৷ টাকা দিয়ে রাজ্য কেনা যায় না ৷ রাজত্ব বড় অদ্ভুত জিনিস ৷ দেখা যাবে সারা জীবন যে রাজা, প্রজাদের জন্যে করে যাবে, যাদের জন্যে জীবন বিলিয়ে দিবে, দিনের শেষে তারাই তোমাকে ভুল বুঝবে ৷ এক দল তোমাকে শূলে চড়াতে ও তারা পিছ পা হবে না ৷ আরেক দল ভীতু কাপুরুষ এর মত তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে ৷ দিন যাবে, বছর যাবে, যুগ পেরিয়ে যাবে ৷ কাপুরুষ দের মনে জমে থাকা তুষের অগ্নি স্ফুলিঙ্গ গুলো আস্তে আস্তে দাবানলে পরিণত হবে ৷ হবে কি ?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×