somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উদয়ের পথে শুনি কার বাণী, "ভয় নাই, ওরে ভয় নাই

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর।কলিংবেল বেজে উঠল ডা. ফজলে রাব্বির বাসায়।

বাবুর্চি ঘরে ঢুকে ফিসফিস করে বলল, ‘ সাহেব বাড়ি ঘিরে ফেলেছে '


তিনি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালেন। দেখলেন একটা কাদা মাখানো সাদা মাইক্রোবাস আর একটি জিপ দাঁড়িয়ে আছে তাঁর বাসার সামনে। নিচু গলায় পেছন না ফিরেই তিনি বললেন, 'টিঙ্কুর আম্মা, ওরা আমাকে নিতে এসেছে।' তিনি দারোয়ান ইদ্রিসকে ডেকে সদর দরজা আর সিঁড়ির দরজা খুলে দিতে বললেন। দারোয়ান দরজা খুলে দিল। পাঁচ-সাত জন সশস্ত্র সৈন্য চারপাশ দিয়ে তাঁকে ঘিরে ফেলল। তিনি ওদের সঙ্গে হাঁটতে শুরু করলেন। স্ত্রী জাহানারা বাধা দিতে চেষ্টা করলেন। ওদের মধ্যে থেকে দুজন এগিয়ে এসে জাহানারার বুকে বন্দুক চেপে ধরল। জাহানারা স্থানুর মতো স্থির দাঁড়িয়ে গেলেন।

ডা. ফজলে রাব্বি মাথা নিচু করে গাড়িতে উঠে গেলেন। সেই যাওয়াই ছিল ডা:রাব্বির শেষ যাওয়া।
রায়েরবাজারে পাওয়া গিয়েছিল তার লাশ।ছিলেন পেশায় কারডিওলজিস্ট ,,মানে হার্টের ডাক্তার। বেপারটা মনে রেখেছিল পাকিস্তান আর্মি,, লাশের বুকে ছিল বিশাল এক গর্ত,বুক চিড়ে ওনার হৃদপিন্ড বের করে আনা হয়ে ছিল..................
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফজলে রাব্বী হলটা ওনার নামেই | একজন বীর বাঙ্গালিকে মনে রাখার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রয়াস।



আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস তারা নিজেদের মেধা, মনন ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগঠকদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। পথ দেখিয়েছেন মুক্তির। উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ে। আর সেটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাদের জন্য।
পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে হত্যা কাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল মেজর জেনারেল রাও ফারমান আলী ।

আর তার বাস্তবায়ন করে জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ক্যাডার গ্রুপ কুখ্যাত আলবদর ও আল শামস । ডিসেম্বরের ১০ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত সে তালিকা ধরে বুদ্ধিজীবী হত্যার ইতিহাসের ঘৃণ্যতম অপকর্মটি করে এই ঘাতক চক্র |
স্বাধীনতার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত বঙ্গভবন থেকে রাও ফারমান আলীর হাতে লেখা ডায়েরী পাওয়া যায় , যাতে ছিলো অনেক নিহত ও জীবিত বুদ্ধিজীবীর নাম পাওয়া যায়।এছাড়া আইয়ুব শাসন আমলের তথ্য সচিব আলতাফ গওহরের এক সাক্ষাৎকার হতে জানা যায় যে, ফরমান আলীর তালিকায় তার বন্ধু কবি সানাউলহকের নাম ছিল। আলতাফ গওহরের অনুরোধক্রমে রাও ফরমান আলি তার ডায়েরীর লিস্ট থেকে সানাউল হকের নাম কেটে দেন। এছাড়া আলবদরদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা তিনিই করেছিলেন বলে তার ডায়েরীতে একটি নোট পাওয়া যায়।
এছাড়া তার ডায়েরীতে হেইট ও ডুসপিক নামে দুজন মার্কিন নাগরিকের কথা পাওয়া যায়। এদের নামের পাশে ইউ.এস.এ এবং ডি.জি.আই.এস লেখা ছিল। এর মধ্যে হেইট ১৯৫৩ সাল থেকে মিলিটারী ইন্টিলিজেন্সে যুক্ত ছিল এবং ডুসপিক ছিল C.I.A এজেন্ট। বোঝাই যায়, ঘটনার পরিকল্পনায় সিআইএ'র ভূমিকা ছিল।
যে আমেরিকা আমাদের শায়েস্তা করতে সপ্তম নৌবহর পাঠালো , পাকিস্থান কে মুফতে কামান,গুলি,গ্রেনেড পাঠালো আমাদের মারতে, আমাদের বুদ্ধিজীবিদের তালিকা করে হত্যা করল , আমাদের জাতীর পিতাকে হত্যার পিছনেও যাদের সহযোগিতা - তারপরো আমাদের এদেশীয় বেইমান-দালালরা মার্কিনীদেরই উজির নাজির মেনে নালিশ নিয়ে যায় |
ইচ্ছে করে , যে সব রাজাকাররা সে দিন বাড়ি বাড়ি পাক আর্মিদের পথ চিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো,, ওদের হ্রৃদপিন্ড গুলো আজ ওভাবে বের করে আনি|
আর আজ যারা মিন মিন ' করে নয়া মানবতাবাদী ভাবসম্প্রসারন করে,সব জেনে বুঝেও তোমরা যারা ছাত্রশিবিরের পতাকা ওড়াও - তোমাদের জন্যও অনুভুতি একই.. সম্পূর্ণ অভিন্ন।


উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,
"ভয় নাই, ওরে ভয় নাই--
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।'

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×