somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate )
জীবন একটা কৌতূহলী যাত্রার নাম- স্রষ্টা, সৃষ্টি, উদ্দেশ্য এবং এই সব কিছুর সত্যতা কে ঘিরে... আর আমি সেই পথের একজন সাধারণ যাত্রী। নিজের জায়গা থেকে সব স্থান, কাল, পাত্রে আপন অস্তিত্বকে কল্পনা করতে ভালোবাসি আর সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটা কাজ করে যাই...

ডেথ- মৃত্যু!

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে কম বেশি সবাই মৃত্যুভয়ে আতংকিত হয়েছেন। ভূমিকম্প কে যে পরিমাণ আমরা ভয় পাই, তার চেয়ে বেশি ভয় যদি ভূমিকম্পের স্রষ্টা কে পেতাম, তবে নিজেদের ই ভালো হতো। মৃত্যুকে আমরা সবাই ভয় পাই, তাই বলে অধিকাংশ মানুষ মৃত্যু চিন্তা বা এর সংশ্লিষ্ট সব কিছু এড়িয়ে যেতে পছন্দ করি। কেনোনা, মৃত্যু চিন্তা বা মৃত্যু ভয় আমাদের ভোগ বিলাসে পরিপূর্ণ জীবনে পাপাচার করতে এক ধরণের বাধা প্রদান করে, যেই বাঁধা আমরা ইচ্ছে করেই মানতে চাইনা।

আজ না হয় রেহাই পেয়েই গেলাম, তবে যদি আজই সব শেষ হয়ে যেতো, এতক্ষণে হয়তো পরকালের হিসেব নিকেশ শুরু হয়ে যেতো। হয়তো অনন্তকালের পথে জান্নাত বা জাহান্নামের যাত্রী হয়ে যেতাম। এই জীবনের সব আনন্দ, উল্লাস, চাওয়া পাওয়া, ভোগ, বিলাস এর ইতি ঘটে যেতো।

কিন্তু না, এখনো আমরা বেঁচে আছি আল্লাহর রহমতে। তবে মৃত্যু অনিবার্য সত্য, তা আসবেই, এবার যেভাবেই, যখনই আসুক না কেনো। সবাই কে যদি প্রশ্ন করা হয় " কিভাবে মৃত্যুবরণ করতে চাও? তবে সকলেরই উত্তর থাকে- সৃষ্টিকর্তার নাম নিতে নিতে, কালেমা পড়তে পড়তে। কিন্তু বাস্তবতা কি তাই বলে? না, বাস্তবতা এতো সহজ নয়। কারণ মৃত্যু বলে কয়ে আসে না!

সারাজীবন আল্লাহর অবাধ্য হয়ে জীবনযাপন করে, আল্লাহর দেয়া নিয়ম কানুন কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে যার জীবন পার হয়, তার মৃত্যু কালে হঠাৎ আল্লাহর ভক্তি এসে যাবে এমন চিন্তা করা বোকামীর চেয়েও বড় কিছু।

দীর্ঘ ৪০০ বছর আল্লাহর অবাধ্য থাকার পর, যখন মৃত্যু এসে পৌছালো ফেরাঊন এর দ্বারে, সেও চেষ্টা করেছিলো কালেমা বলে পার পেয়ে যেতে, কিন্তু না তা সম্ভব হয়নি। একবার এক দাবাড়ু তার মৃত্যুক্ষণে উপস্থিত হলো, যে সারাজীবন দাবা খেলাকেই ধ্যান জ্ঞান মনে করে কাটিয়েছে। তাকে বলা হলো- কালেমা পড়ার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য- মৃত্যুকালেও সে "চেক মেইড, চেক মেইড" বলতে বলতে মারা গেলো। আরেক লোক এর মৃত্যুকালে জোরে গান বাজছিলো। এক হুজুর এসে বল্লো - এক টা লোক মারা যাচ্ছে, আর তোমরা গান বাজনা নিয়ে ব্যস্ত? তখন তারা গান বন্ধ করে 'কোরআন তেলাওয়াত চালু করে দিলো" । কিন্তু হায়, মৃত্যপথযাত্রী লোকটি ছিলো সেই গানের ভক্ত। তাই কিছুক্ষণ পরেই সে বল্লো- " কি চালু করেছো, আমার "অমুকের" গান দাও। অতঃপর তার কথামত গান দেয়া হলো- সেই গান শুনতে শুনতেই লোকটি মারা গেলো!

সারাটা জীবন আমরা যেভাবে কাটাই, আমাদের মৃত্যু যে সেভাবেই হবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ হয়তো শিরক, কুফরি করতে করতে মারা যায়, কেউ মদ, জুয়া, নারী, অশ্লীলতা, আর কেউ হয়তো সেই মহান স্রষ্টার ইবাদত করতে করতে। তাই সত্যি ই যদি আমরা সৃষ্টিকর্তা কে বিশ্বাস করে থাকি, এবং পরকালে বিশ্বাস রাখি, তবে আমাদের কি উচিত নয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর দেয়া নিয়ম কানুন অনুযায়ী চলা। ভূমিকম্পের সময় আমাদের মনের অবস্থা যেমন থাকে, তেমন অনুভূতি সারাজীবন কাজে লাগাতে পারলে মৃত্যুকে গ্রহণ করা যেমন সহজ হবে, তেমনি আমরা পরকালেও সফল হতে পারবো ইনশা আল্লাহ।

মৃত্যু কে ভয় না পেয়ে, সর্বদা গ্রহণ করার মত প্রস্তুতি গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কিছুদিন আগে "রেইন্ড্রপ্স মিডিয়া" থেকে মৃত্যু এবং এর পরবর্তী জীবন নিয়ে একটি অডিও সিরিজ শুনেছিলাম। যারা নিজেদের ভুল শুধরে পরিবর্তন আনতে ইচ্ছুক নিজেদের জীবনে, তাদের অনুরোধ করবো অবশ্যই নিন্মোক্ত সিরিজ টি শোনার জন্য। আশা করি, অনেক উপকৃত হবেন।

যতই এড়িয়ে যাই না কেনো, এটাই বাস্তব এটাই সত্য- এই দুনিয়ার জীবন পরীক্ষা ছাড়া কিছুই না, এখানে কেউই চিরদিন থাকবো না। পরকাল ই আসল আবাসস্থল। একদিন প্রত্যেকের ই এই রঙ- তামাশা- অহংকার- ভোগ- বিলাসের জীবন শেষ হবে, হিসেব দিতে হবে প্রতিটি কাজের। তাই, প্রস্তুতি নেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। আর যদি এই জীবন ই কারো কাছে ধ্যান জ্ঞান মনে হয় তবে তার বিশ্বাস এবং পরিণতির প্রতি রইলো শুভকামনা।

যারা সিরিজ টি শুনতে চান- তাদের জন্য লিংক- http://www.raindropsmedia.org/audio/hereafter/
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:১০
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×