somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ আলআমিন ( Auspicious Fate )
জীবন একটা কৌতূহলী যাত্রার নাম- স্রষ্টা, সৃষ্টি, উদ্দেশ্য এবং এই সব কিছুর সত্যতা কে ঘিরে... আর আমি সেই পথের একজন সাধারণ যাত্রী। নিজের জায়গা থেকে সব স্থান, কাল, পাত্রে আপন অস্তিত্বকে কল্পনা করতে ভালোবাসি আর সেই অনুযায়ী প্রত্যেকটা কাজ করে যাই...

সৌন্দর্যের আত্মপূজায় যখন নারী...

২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই বলে নেই, এই লেখাটি কাউকে ছোট করার উদ্দেশ্যে যেমন নয়, তেমনি জেন্ডার ক্রিটিসিজম এর জায়গা থেকেও নয়। মানুষ হিসেবেই "তাদের" মানসিক অপরিপক্কতার অসহায়ত্ব ব্যাপারটি আফসোসময় মনে হয় বলেই লিখতে যাওয়া...

আধুনিক সমাজে একশ্রেণীর নারী/রমণী/মেয়েরা রয়েছে যারা সারাজীবন আত্মপূজায় ব্যস্ত থেকেই কাটিয়ে দেয়। ভোগবাদী সমাজের চোখে এদেরকে ছোট বেলা থেকেই বুঝিয়ে দেয়া হয়, তুমি অনেক সুন্দর, তোমার দেহ তোমার সম্পদ। এই দৈহিক সৌন্দর্য কে সর্বোচ্চ উপায়ে ব্যবহার করার এক অবচেতন মানসিকতা খুব ছোট বেলা থেকেই তার মাঝে পরিবার, সমাজ থেকে শুরু করে বিশেষ করে "মিডিয়া এবং লোলুপ লম্পট পুরুষসমাজের" মাধ্যমে শিখিয়ে দেয়া হয়। ফেয়ার এন্ড লাভলির এড দেখে বড় হওয়া এই সমাজের মেয়েটি ধরেই নেয়, আর যাই হোক, তার সৌন্দর্য তার প্রধান অস্ত্র। এই সৌন্দর্যের অস্ত্র ব্যবহার করে নিজের যত চাহিদা পূরণের শখ রয়েছে তা মিটিয়ে নেয়া যায় অনায়াসেই।

"উত্তরাধিকার সুত্রে" প্রাপ্ত উক্ত অস্ত্রখানার সঠিক প্রয়োগের জন্য আপন দেহের আকর্ষণ দিয়ে গুণগ্রাহী দর্শকদের নিজের চৌম্বকীয় আবেশে জড়িয়ে রাখার জন্য এমন কিছু নেই যা সে করা থেকে নিজেকে বিরত রাখে! নিজের প্রাকৃতিক রূপ কে একটু আলগা মাত্রা প্রদানের উদ্দেশ্যে চুল স্ট্রেট করা থেকে শুরু করে পার্লারের সকল প্রয়োগবিধি পর্যন্ত, ঠোঁটের গাঢ় লিপ্সটিক থেকে হাই হিল অথবা দেহ অবয়ব ফুটিয়ে তোলা পোশাক পর্যন্ত সব কিছু নিয়ে এরা এতো ব্যস্ত থাকে যে আর অন্য কোন কিছু নিয়ে ভাবার মত সময় এদের হয়ে উঠে না। এই গোত্র মনে করে থাকে যে, উক্ত দেহখানা তাদের নিজের হাতেই তারা বানিয়ে এনেছেন, অথবা সৃষ্টিকর্তা তার উপর বিশেষ খুশি হয়ে উক্ত সুন্দর দেহখানা দান করেছেন। ব্যস, আর কোন কিছুর যোগ্যতা অর্জন, জীবন এর বাস্তবতা উদ্দেশ্য, কিছুই তাদের জীবনে আর প্রাধান্য পায় না। যেনো নিজের দেহই নিজের পুজো ঘর।

রাস্তায় বের হলে এমন ভাবে তারা বের হয়ে থাকেন যেনো "আপন স্বামীর সাথে বাসরঘরের" প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়েছেন। এদিকে চুল টা সরে গেলো কিনা, লিপ্সটিক মুছে গেলো কিনা, জামা টা সামান্য জায়গাচ্যুত হলো কিনা, মুখের মেকআপ ঘেমে গেলো কিনা এইসব নিয়ে এতোই বেশি তাদের কে অযথা টেনশন করতে হয় যে আশেপাশের কেউ মরে পরে থাকলেও তাহার চেতন মনে কিছুই ধরা পড়ে না। বরং তার লিপ্সটিক এর দাম, মরা মানুষটির রক্তের চেয়ে যেনো দামী।
নিজের শারীরিক যন্ত্রখানার পুঙ্খানুপুঙ্খ উপস্থাপনের এই অস্বস্তিকর সচেতনতা তাকে আত্মপুজায় এতোই নিমগ্ন রাখে যে, কখনোই বুঝে উঠতে পারে না, আত্মঅহংকারের এই পরিণতি তাকে একজন উচ্চমাপের শরীর বিক্রেতায় পরিণত করে যার দরদাম করা হয় লোলুপ লম্পট সমাজের আড্ডার মাঝে।

তাদের আপন দেহের আত্মপূজার ফলাফল আসলে কেমন হয়? নিজের দেহ কে নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে মানুষকে নিয়ে ভাবার মত, তাদের মানসিকতা বোঝার মত সময় তাদের হয়ে উঠে না, ফলে তারা ধরা ই পড়ে লম্পটদের হাতে পণ্য হিসেবে চাহিদা ক্রেতা হিসেবে। বিভিন্ন লম্পটদের হাতবদল হয়ে যখন সৌন্দর্যের অস্ত্রখানা "পন্ডস এজ মিরাকেল" দিয়েও ঠিক রাখা যায়না তখন তাদের ছুড়ে ফেলা হয় অনুগ্রহের আস্তাকুড়ে। এই এরাই একদিন পরিণত হয় এক একজন নারীবাদী সুশীল হিসেবে।

সৌন্দর্যের এই আত্মপুজার অহংকার এদের এতোই অন্ধ করে রাখে যে, এরা কখনো জানতেও চায়না, ভাবতেও চায়না, চিন্তা তো করতেই চায়না জীবনের অস্তিত্ব আসলে কেনো, কি জন্য এরা পৃথিবীতে এসেছে, কেনো এদের এই সৌন্দর্য দেয়া হয়েছিল এবং এর স্বেচ্ছা ব্যবহার এর পরিণতি কতটা ভয়াভহ হতে যাচ্ছে। এই এরাই লম্পটদের দ্বারা স্বেচ্ছায় এবিউজ হয়ে বলে বেড়ায়, "সব পুরুষ অমুক, পুরুষজাতি অমুক"

সকল নায়িকা, মডেল এবং তাদের আদর্শ ধারণকারী রমনীগণ সাধারণত উক্ত গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। মস্তিষ্কের বোধগত জায়গা থেকে তাদের এই অসহায়ত্ব সত্যি ই আফসোসের বিষয়!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:২০
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×