somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার না থাকা গুলো...

২৪ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তরুন রা তাদের ভাবনায় নিজের সাথে সমগ্রকেও রাখে।
সুশিক্ষিত মানুষ কখনো অন্যের ক্ষতি চিন্তা করেনা। আর আর ...
রিমির ঘ্যাস ঘ্যাস করে মাথা চুলকানো দেখে আমি হাসি আর আটকে রাখতে পারলাম না। ওকে রেহাই দিতেই বললাম,আর আর করছিস কেন? বল বলে ফেল। আর আমার সময় নষ্ট করিস না বুঝলি?
মুখ টিপে বললাম বলতে না পারলে আমার কবিতা শোন!
সামনের ছোট করে কাটা চুল গুলো এক ঝাকিতে পেছনে পাঠিয়ে রিমি মিষ্টি করে হাসলো। তারপর চোখ ছোট ছোট করে বলল, তা তো বলবাই, আমি কিছু বলতে গেলে তোমার সময় নষ্ট হয় , আর তোমার ছাতার কবিতা যে দিন রাত আমাকে শোনাও!

এই রাক্ষসনীর মত মুখ করবিনা বলে দিচ্ছি।
রিমি এগিয়ে এসে বুকের কাছে ছোট্ট একটা বেড়াল ছানার মত গুটলি পাকিয়ে শুয়ে বলল, হু বল কবিতাটা। শুনি এবার কি লিখেছিস!

''কখনো কখনো আমি থাকিনা,
আমার না থাকা গুলো তবু
তোমার সাথেই থাকে প্রতিদিন!''

এই থাম থাম না থাকাগুলো কিভাবে তার সাথে থাকে? এসব কি লিখিস! বলেই ঠোঁট বাকিয়ে একটা ভেংচি কাটলো রিমি।
রিমির দিকে ঘোর লাগা চোখে তাকাতেই সে বলল, আচ্ছা আচ্ছা তারপর?

''না থাকাগুলো ঝুর ঝুর করে ভাংতে থাকে
পোকায় খাওয়া পান্ডুলিপির মত!
তোমার শেভিং কিটের ফেনায় আমার না থাকাগুলো,
না থাকা গুলো চিরুনীর ফাঁকে
আয়নার ওপার থেকে তাকিয়ে থাকে।
যদিও তুমি কদাচিৎ ওমুখো হও।
ব্রাশের ফেনায় মুহুর্মুহু চমকানো তারা,
তুমি জানো সেসব আমার না থাকাগুলো।''

কি রে কোথায় হারালি?
আচমকা আমার কথায় সম্বিত ফিরে পায় রিমি। বলে, কি শেষ?
উহু, এখনো শেষ হয়নি। তুই ঠিকমত শুনছিস কিনা তাই ডাক দিলাম। হি হি
হাসবিনা খবরদার। তারপর বল। আমি অনেক মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম।

''দীর্ঘ পরিশ্রমের শেষে
যখন তুমি বড় বড় শ্বাস নিতে থাকো,
ভুলেও ভেবনা আমার না থাকা গুলো তোমাকে ছেড়ে গেছে।
একটা দিনের প্রতিটি সময়
না থাকা গুলো তোমার সাথেই ছিল, আছে!''

আমার মুখে হাত চাপা দিয়ে থামিয়ে দেয় রিমি। তুই কিভাবে এমন লিখেছিস? যেখানে কাছে থাকার মুল্য থাকেনা সেখানে না থাকাগুলো এত গুরুত্বপূর্ণ কি করে হয়?
করুন মুখ করে আমি বলি আমাকে শেষ করতে দে রিমি!
গম্ভির হয়ে সে বলে ওক্কে বল।

''তোমার একলা থালার হাত ধোয়া জলে
আমার না থাকা গুলো বড় বিষন্ন!
জুতোর ভেতর পা ঢোকাতে গিয়ে
তোমার আনমনা হওয়া,
সেল ফোনটা বেজে ওঠার বিরক্তিতে
তোমার কুঁচকে ওঠা ভুরু!
তোমার গায়ের ঘামে আমার না থাকাগুলো জমতে থাকে।
থাকেই!
প্রতিদিন তো এসব না থাকা নিয়েই তুমি ঘুমুতে যাও।''

শ্বাস ভেতরে টেনে যখন খাতাটা বন্ধ করে দিলাম, রিমি আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ও এখন কাঁদবে। একটু আগে খিল খিল করে হেসে গড়িয়ে পড়া মেয়েটি কান্না চেপে স্বাভাবিক হবার চেষ্টা করছে। আমার খারাপ লাগতে থাকে। এ অনুভূতিটা ওর। আমি কেন তার অনুভূতিকে এভাবে সামনে নিয়ে এলাম! কেন তাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলাম তার না থাকাগুলো !
নরম চুলে থুতনি চেপে তাকে জড়িয়ে আছি। সে কাঁদতে থাকবে এখন। আমি জানি আমি তাকে থামাবোনা।


অ:ট: আমার একটা বড় আপু আছে আর একটা ছোট আপু আছে। দুটাই খারাপ। খুব খারাপ। শয়তানের একশেষ। বদের বদ। আমাকে কম ভালবাসে আর বাইরের মানুষদের বেশি ভালবাসে। রিমঝিম আপু আর অসবা র জন্য এই লেখাটা।




সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৫১
৬৮টি মন্তব্য ৬৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×