ভূমিকাঃ
ব্লগ এ নাম লেখালাম। কি লিখব কি লিখব ভেবে ভেবে একটা বিজ্ঞান-কল্পকাহিনি লেখা শুরু করলাম।
শেষবার যখন পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে গেল তখন রুনের বাবা এক অজ্ঞাত অসুখে হটাৎ করেই মারা যান। রুনের বাবা ছিলেন বসতির দলপতি। বসতিটি খুব একটা বড় নয়। নামও নেই। কদিন আগেও সংখ্যা দিয়ে বুঝানো হতো। ইদানিং ত্রিনার বলে গ্যালাকটিক মানচিত্রে দেখানো হচ্ছে। জনসংখ্যায় মাত্র একশত সায়ত্রিশ। এ-রকম কয়েক হাজার বসতি সৌরজগতের এই প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ইউরেনাস ও নেপচুনের মধ্যবর্তী একটি অ্যাস্ট্ররয়েডকে নিয়্ন্ত্রনে নিয়ে প্রায় অর্ধশতাব্দী পূর্বে এই বসতিটি স্থাপনের উদ্যোগ করেন রুনের দাদা। যদিও বসতিটি কেন্দ্রীয় কমিশন কতৃক নিয়ন্ত্রিত, তারপরও এরকিছু নিজস্ব নিয়মকানুন রয়েছে। আর সেকারনেই বসতির পরবর্তি দলপতি রুন। বয়স কম, তাই রুনের পরিবর্তে রুনের মা লিহা আপাতত নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর মাত্র দুই সৌরবছর পর রুন বসতির দায়িত্ব নিয়ে নেবে।
লিহা একজন সাধারন মহিলা, তাই প্রথমে সবাই ভেবেছিল তিনি হয়ত বসতির নিয়্ন্ত্রন নিতে পারবেন না। কিন্তু যখন সবাই দেখল শুধু নিয়্ন্ত্রনই নয় বরং লিহা সবার মন জয় করে ফেলেছেন তখন অবাক না হয়ে পারেনি।
নিয়্ন্ত্রনহীন একটি অ্যাস্ট্ররয়েডকে বসতিতে রুপান্তর করার জন্য রুনের বাবা কেন্দ্রীয় কমিশনের কাছে দূর্লভ সম্মান লাভ করেছিলেন। মহাকাশে ছন্নছড়া অনেককিছুর প্রতিই তার ছিল অকল্পনীয় আকর্ষণ। লিহারও কম ছিল না। অবশ্য এটা কেউ জানত না। লিহা ঝামেলা এড়িয়ে চলতে পছন্দ করেন।
দিনের শেষে যখন দুই গ্রহ ইউরেনাস আর নেপচুন তাদের দলবল নিয়ে রুনের আকাশে হাজির হয় তখন রুন বিশ্ময়ে তাকিয়ে থাকে। অনন্ত নক্ষত্রের রহস্য তাকে অদ্ভুতভাবে টানে। তার দুচোখ কিছু একটা খুঁজে ফেরে। সেতা কী সে নিজেও জানে না।
“রুন?” লিহার ডাকে রুনের ভাবনায় ছেদ পড়ে। রুন তার মায়ের দিকে তাকায়।
“কিছু ভাবছিস বাবা?” লিহা জিজ্ঞেস করেন।
ছোট বাচ্চারা কোন অপরাধ করে ধরা পড়লে জেভাবে বলে ওঠে, রুনও সেভাবে বলে উঠল, “কিছু না মা।”
“তাহলে ঘরের ভিতর আয়। একটা গ্যালাকটিক মেইল এসেছে।”
“গ্যালাকটিক মেইল!” রুন অবাক হয়, “কার?”
ছোট্ট এই বসতিতে সাধারনত খুব একটা গ্যালাকটিক মেইল আসে না। বসতির কেন্দ্রীয় তথ্যকেন্দ্রে মাঝে মাঝেই পৃথিবী থেকে নির্দেশনা আসে।
“মহামান্য দ্যুমার।” লিহা বলে চলেন, “দলপতি অ্যালানের নাম শুনেছিস না? বিজ্ঞানী জেডনের সাথে নোরা নক্ষত্রের শেষ সীমানার প্রায়শূণ্য মহাকর্ষবলীয় এলাকায় অভিযানে ছিলেন?”
“যেখানে একইসাথে পাউলির বর্জননীতি আর হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তারনীতি দুটোই অকার্যকর?” রুন বলে।
“মহামান্য দ্যুমা জানিয়েছেন,” লিহা বলে চলেন, “অ্যালান এখণ ছুটিতে বৃহস্পতির এক বিনোদন কেন্দ্রে সময় কাটাচ্ছেন। আমাদের এখানে নাকি আসতে চান। তোর বাবা তার সম্পর্কে আমাকে অনেক গল্প বলেছিলেন। ইন্টার গ্যালাকটিক পোর্টালে অ্যালানের নেক আর্টিকেল আছে।”
রুনের সবে আঠারো। বয়সে তরুণ। উদ্যমী। অণুসণ্ধিৎসু। বিজ্ঞানী জেডন, প্রায়শূণ্য মহাকর্ষবলীয় এলাকা- এসব নিয়ে তার আগ্রহের সীমা নেই।
“বিজ্ঞানী জেডনের সঙ্গে ছিলেন?” অবিশ্বাসের ভজ্ঞিতে রুন বলে ওঠে। “মা তাকে আমাদের বসতিতে আসতে বলো। প্রায়শূণ্য মহাকর্ষবলীয় এলাকা পাড়ি দিয়েছে এমন মানুষ হাতেগোনা। যেভাবেই হোক তিনি যেন আসেন।”
“আমি জানতাম বিজ্ঞানী জেডনের কথা শুনলে তুই খুশি না হয়ে পারবি না।”
ত্রিনার থেকে বৃহস্পতির দূর খুব বেশী না। লিহা তার সম্মতির কথা অ্যালানকে জানিয়ে দিলেন। অ্যালান জানালেন ঠিক সাত সৌরদিন পর ত্রিনারে আসবেন।
আমাদের কাহিনিটার শুরু ঠিক এখান থেকেই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




