কোন এক রাত ১২:০০টা। সারা দেশ অন্ধকারে ডুবে আছে।
বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছিলাম। ঠিক এমনি সময় তাদের সাথে দেখা হয়ে গেল; চিরকালের সেই পথিকরা…।
দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এতটাই ক্লান্ত যে সামান্য পরশ বুলিয়ে দেবার শক্তিটুকুও আর অবশিষ্ট নেই.. । অথচ শুরুতে কত বিপুল শক্তি আর তথ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল সুকান্তের ‘রানার’ এর মতো। এখন সে বিপুল শক্তি না থাকলেও আজও ঠিক তথ্য বিলিয়ে যাচ্ছে। আর ক্লান্তি?
ক্লান্ত হবেই বা না কেন? জন্ম থেকে সেই যে চলা শুরু করেছে, থামার কোন উপায় নেই। আমার কাছে এই যে ৮৬০ বছরের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিযে আসল, তাও থামার সময় কই?? মৃত্যুহীন এ জীবনে ছুটে চলাই তার একমাত্র অবলম্বন…
যেখান থেকে সে আসছে, তাকে এক বিকট জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড বললেও কম বলা হবে!! আমাদের এই প্রখর, প্রদীপ্ত সূর্যের চেয়ে মাত্র (?) ৭৯ গুণ বড়, বিরাট এ দৈত্যের পেটে অবিরাম চলছে নিত্যনতুন মৌল গঠনের কাজ, যার ফলে এর বাইরের পৃষ্ঠেই বিরাজ করে ১২১০০ কেলভিন তাপমাত্রা। স্বভাবতই সূর্যের চেয়ে ১২০০০০ গুন বেশি উজ্জল এ দৈত্য প্রতি সেকেন্ডে সূর্যের চেয়ে ১২০০০০ গুন বেশি শক্তি ছড়িয়ে দেয় আলোকরূপে; যারই অংশবিশেষের সাথে চলছে আমার এই খোশালাপ…
সবচেয়ে মজার কথা যা কিছু তথ্য সে দিল, সবই আসলে ৮৬০ বছর আগের কাহিনী। ওখানকার বর্তমানকে জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আরও ৮৬০ বছর। মানে হলো সেই দৈত্য যদি আজ ধ্বংসও হয়ে যায়, সেটিও জানতেও পারব ৮৬০ বছর পর, ততদিন ধ্বংসপ্রাপ্ত সেই তারা আমাদের চোখের সামনে ঠিকই বিরাজ করতে থাকবে মূর্তিমান অবাস্তব হয়ে!!!!
(** আলোচ্য তারাটি আকাশের ৭ম উজ্জল তারা রিগেল(rigel), সুপরিচিত কালপুরুষ (orion) মণ্ডলে পৃথিবী থেকে ৮৬০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।)