একটা মানুষের জীবনে সবগুলো উপলক্ষ কি একদিনে আসতে পারে? আর কারো জীবনে হোক আর না হোক, খালিদের জীবনে এই দিনটা অদ্ভুত এক অধ্যায়। শুরুটা হয়েছিল ওর জন্মের মাধ্যমে, ওকে জন্ম দিতে গিয়ে ওর মা মারা যান। ওর বাবা বিয়ে করেন তার আগের স্ত্রীর ছোট বোনকেই। খালিদকে কখনোই অবহেলা সহ্য করতে হয়নি, কিন্তু ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখ, ওর জন্মদিনের দিন কেন যেন বাসার সবাই একটু অন্যরকম হয়ে যেত। বাসায় ওর মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ হত, আর রাতের বেলা বাবা মা তার রুমে কোন একটা গিফট লুকিয়ে রাখত।
বন্ধুদের সাথে বইমেলায় ঘুরতে গিয়েই একবারের জন্মদিনে দেখা হয় অর্পিতার সাথে। প্রথম দেখায় প্রেম। খুব সুন্দর একটা কৈশোর কাটে খালিদের, অর্পিতার হাত ধরেই।
কয়েকবছর পর কোন এক ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখে মিষ্টিমুখ চলে খালিদের বাড়িতে, কানাডায় স্কলারশিপ পেয়েছে খালিদ। রাতে ফোনে ফিসফিস করে স্বপ্ন দেখায় সে অর্পিতাকে, আর কয়েকবছর পর বিয়ে করে ওকেও নিয়ে যাবে বিদেশে...
...............
মেজাজটা ভয়াবহ খারাপ খালিদের। ছোটবেলার বন্ধুর সাথে ঝগড়া করার পর কারো মনই ভালো থাকার কথা না। অর্পিতাকে নিয়ে কীসব বলছিল, ওর কিছু করার ছিল না। ফেসবুকে ঢুকে ইনবক্সে একটা লিংক পেল সে, তার বন্ধুই পাঠিয়েছে, দেখবে না দেখবে না করেও ক্লিক করে ফেলল।
এধরনের স্ক্যান্ডালের ভিডিও কোয়ালিটি খুব একটা ভাল হয় না, অবাক হয়ে লক্ষ্য করল খালিদ, এটার কোয়ালিটি বেশ ভাল...লিংকটা কেটে দেওয়ার আগ মুহূর্তে দৃষ্টিটা আটকে গেল স্ক্রিনে... ওই চেহারা তার অনেকদিনের চেনা, অনেক আপন... কীভাবে ভুলবে সে সেই চেহারাকে... অর্পিতার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে সে...
ফেব্রুয়ারি ৪।
প্রচণ্ড জ্বর খালিদের... দেখার কেউ নেই। ফিসফিস করে সে একটা প্রার্থনা করে, সেটা আর কেউ শুনতে পায়না... তার জন্মদাত্রী মা কি শুনতে পেয়েছিল?
"সরি মা, বিধাতা অনেক বছর আগে ভুল মানুষটাকে নিয়ে গিয়েছিল পৃথিবী থেকে"

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



