somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগিং করা সহজ নয়

০১ লা মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

...সকলেরই ঘোরতর দুশ্চিন্তা।

এমন সময় পিওন আসিয়া আমাকে একখানা চিঠি দিয়া গেল।

নৃপেন বলিল, কার চিঠি হে?

আমি চিঠি পড়া শেষ করিয়া বলিলাম, বউ লিখেছে - বুঁচি মারা গেছে। কাল।


এতদূর লিখিয়া বলাই থামিল। কে জানে অণুগল্পখানি ব্লগে প্রকাশ করিবার উপযুক্ত হইয়াছে কিনা। তবে প্রকাশিবার পূর্বে সদ্যপ্রসূত সাহিত্যকর্মটার একখানা ব্যাকআপ রাখিয়া দিলে মন্দ হয় না, বলাতো যায় না - যেই হারে চলতি বইমেলায় বানের জলের ন্যায় ব্লগারগণের বই বাহির হইতেছে - তাতে করিয়া এতটুকু আশা করাই যায় যে স্বরস্বতী তাঁহার রাজহংস সমেত গলা তুলিয়া চাইলে হয়তোবা পরবর্তী বইমেলায় বলাইয়ের বই বাহির করিবার সদিচ্ছাটার কোন একটা গতিক হইবে। পোস্ট করিবার পূর্বে আরো একবার ভালো করিয়া নজর বুলাইয়া লইল সে নিজের লেখাটার
উপর - আজকাল বানান টানান ভুল হইলে বিচ্ছিরিপ্রকারের কটুবাক্য বর্ষণ করিয়া জ্ঞাতিগুষ্টি উদ্ধার করিয়া ছাড়ে ব্লগের কুলীন সম্প্রদায়। ছাপার অযোগ্য কয়েকটা গালি মনে পুষিয়া রাখিয়া বলাই স্বরস্বতীর নাম জপিতে জপিতে চক্ষু মুদিত অবস্থাতেই "প্রকাশ করুন" বোতামে ক্লিকাইল। তারপর দুদ্দাড় করিয়া হোম পেজ - দু্চ্ছাই, কি জানি বলে আজকাল ..."নীড় পাতা" তে গিয়ে অনলাইনে বিরাজমান ব্লগারদের লিস্টিতে একবার নজর বুলাতেই দিলটা ঠান্ডা হইল। যাক, তাহার লিখাখানা পড়িবার মতো যথেষ্ট মানুষজন রইয়াছে। ইনাদের সিংহভাগই ব্লগে লিখিবার পরিবর্তে মন্তব্যের তুফান তোলাটাকে রোজকার রুটিন বানাইয়া ফেলিছেন। ইনাদের হাতে লিখাটার ভাগ্য ছাড়িয়া দিয়া বলাই উদাস মনে সিটি বাজাইতে বাজাইতে ঘর হইতে বাহির হইল।

বহুত বেলা পর্যন্ত রকবাজি করিবার পর ঘরে ফিরিয়া অগ্নিশৃগালের জানালায় দৃষ্টিপাত করিতেই বলাইয়ের মেজাজটা বিগড়াইয়া গেল। কেবল দু একটা পরিচিত ব্যক্তি ব্যতীত কেউই মন্তব্যই করিবার প্রয়োজন মনে করে নাই! মেজাজটা বঙ্গদেশীয় ক্রিকেট টিমের ব্যাটিংয়ের মতোই দ্রুত বিগড়াইয়া গেল। গোদের উপর বিষফোড়ার ন্যায় সকলে আবার লিখাটা লইয়া টিটকারী মারিতেও বাকি রাখে নাই। তবে রে! আজি যদি প্রত্যেককে সে তুলাধুনা না করিয়াছে তবে সত্যই পিতৃপ্রদত্ত নাম পরিত্যাগ করিয়া ব্লগের নিক "বনফুল" কেই নিজের পরিচয় হিসেবে গ্রহণ করিবে। এই পণ করিয়া লুংগিতে গর্ডিয়ানের গিঁট কষাইয়া সে মন্তব্যের জবাব দিতে বসিল।

ভানুসিংহ লিখিয়াছেন:
দেখো বাবা বলাই। তোমার "সমাধান" শিরোনামের অখাদ্যটা, যাহাকে তুমি অণুগল্প বলে চালাইবার অপচেষ্টায় ব্যস্ত তাহা বিশেষ উপাদেয় মনে হইল না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উত্তম তবে সেই পরীক্ষার ফলাফল যদি এতটা ক্ষুদ্র হয় তবে তো মুশকিল।

জবাব: দেখুন গুরুদেব আমার যতদূর মনে পড়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা যৌবনকালে আপনিই সর্বাপেক্ষা বেশি চালাইয়াছেন। আজ এই বৃদ্ধবয়সে এসে এই পশ্চাদপসরণ আর রসবোধের অভাব কি ভীমরতির লক্ষণ? নিশ্চয়ই ভীমরতি, নতুবা জুনিয়র ব্লগারদের পিছনে লাগিবার কোন উপযুক্ত কারণ আছে কি? আপনার ব্লগিংয়ের সোনার তরী যে শিগগির ডুবিবে তাহাতে কোনরূপ সন্দেহ নাই।

আলী লিখিয়াছেন:
সাবাশ ব্যাটা। বেড়ে লিখেছিস। চালিয়ে যা বৎস।চেষ্টা করিলে আরো ভালো লিখিতে পারবি তাতে কোন সন্দেহ নাই। ;)

জবাব: তুমি যবনের পো অত চেঁচাও কেন? আফগান মুল্লুকে বসিয়া বসিয়া শুধু ভ্রমণকাহিনী লিখিলে চলিবে? ঐখানকার তন্বীদের বড়ই সুখ্যাতি শুনি, তাদের সাথে মাখামাখির কাহিনী নয় নাই শোনালে দু একখানা ছবি শেয়ার করিলে এমন কি ক্ষতি??

দুখু লিখিয়াছেন:
বড্ড পানসে লাগল হে, অনেক দিনের জমানো জলের মতো।

জবাব: ওরে পামর! অনেক দিনের জমানো পানির স্বাদের মাহাত্ম্য তুমি ছাড়া আর কে বুঝিবে?? তোমার লুলামির সকল ইতিহাস যে এখনও ফাঁস করিয়া দেই নাই তার জন্য ঈশ্বরের কাছে বেশি করিয়া শুকরিয়া আদায় কর।

এতটুকু লিখিয়া বলাই একটু দম ফেলিল। পাবলিক রিঅ্যাকশন দেখিয়া বাকিগুলার জবাব ছাড়িতে হইবে। আজি কারো নিস্তার নাই। ব্লগার ব্যাসদেবের সেই অগ্নিঝরা মন্তব্য বলাইয়ের মনে পড়িয়া গেল "বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনী"।
(চলিবে??)
৩০টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×