ভ্যাম্পায়ার একটি পৌরণিক ও লোককথার একটি প্রাণী যারা জীবিত প্রাণীর রক্ত খেয়ে বাঁচে।ভ্যাম্পায়ার অনেক সংস্কৃতিতে দেখা যায়। ইতিহাসবিদ ব্রায়ান ফ্রস্ট বলেনঃ” রক্তচোষা দৈত্য ও ভ্যাম্পায়ারে বিশ্বাস মানুষের অস্তিত্বের মতোই একটা পুরানা ব্যাপার। “ভ্যাম্পায়ার শব্দটি জনপ্রিয় ওঠে ১৮ শতকের প্রথম দিকে। পূর্ব ইউরোপ[৭] ও বলকানসের ধরনের কুসংস্কার বেড়ে ওঠে। ভ্যাম্পায়ার কুসংস্কারের মাত্রা যতই বাড়তে থাকে মানুষের মাঝে মাস হিস্টেরিয়া বাড়তে থাকে। ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা উপন্যাস স্বরণ করা যায় ভ্যাম্পায়ার সাহিত্য হিসেব। এই বইটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়, এমনকি এই শতাব্দীতেও এটা সমান জনপ্রিয়। অক্সফোর্ড ইংলিশ অভিধানে শব্দটি ১৭৩৪ সালে স্থান পায়।
অনেক পরিবর্ধিত ধর্মীয় উপাসনার পদ্ধতিতে ভ্যাম্পায়ারকে খুঁজ়ে বের করে যায়। এজন্য প্রথমে একটা কুমার বালককে কবরের উঠানে নিয়ে আসতে হবে অথবা একটি ঘোড়াকে। সাধারণত কালো ঘোড়া দরকার হয় আর আলবেনিয়াতে সাদা ঘোড়া দরকার হয়। যে কবরে ভ্যাম্পায়ার থাকে তার মাটিতে তখন গর্ত সৃষ্টি হয়। মানুষের মৃতদেহকে ভ্যাম্পায়ার হিসেবে ভাবা হয় অনেক সময় যেগুলোর পচে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সন্দেহজনক কবর খোঁড়া হলে পাওয়া যায় সারা মুখে শিকারের রক্তমাখা মৃতদেহ বা ভ্যাম্পায়ার। গবাদি পশুর মৃত্যু বা আত্নীয়, প্রতিবেশীর মৃত্যুকে ভ্যাম্পায়ারের প্রমাণ হিসেবে দেখা যায়।
লি ভ্যাম্পায়ার,আর ডি মরেইনের লিথোগ্রাফ
২০০৬ সালে ভেনিসের কাছে ১৬ শতকের একটি কবরে মুখে ইট দেয়া একটি মহিলা মৃতদেহ পাওয়া যায়, যা ভ্যাম্পায়ার জবাই করার উপাসনার প্রমাণ হিসেবে দেখা যায়। কবরে গরম পানি ঢেলে দেওয়া যা পুরো দেহকে পুড়িয়েও ভ্যাম্পায়ার তাড়ানো যায়। বলকানে পানিতে চুবিয়ে বা গুলি করেও ভ্যাম্পায়ার মারা যায়। তবে এক্সোরসিজমে পবিত্র পানি ছিটিয়ে ভ্যাম্পায়ার হত্যা করা যায়। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রোমানিয়াতে টোমা পেতরের কিছু আত্নীয় অভিযোগ করেন যে সে ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেছে। তারা তখন কবর ভেঙ্গে তার মৃতদেহকে তুলে ফেলে, তারপর তার হৃৎপিন্ড তুলে আগুনে পোড়ায় ও ছাই মিশ্রিত পানি খাইয়ে দেয়। আধুনিক ওকালটিস্ট আন্দোলনে ভ্যাম্পায়ার জীবনাচরণ একটি অনুপ্ররণার নাম। ভ্যাম্পায়ারদের ধূর্ত শিকারীসুলভ মনোভাব,তার মন্ত্রপুত ক্ষমতা তার একটি শক্তিশালী ভাবমূর্তি গড়ে তোলে যা ধর্মীয় উপাসনাতে, শক্তির কাজে ও মন্ত্র সাধনায় সর্বোপরি একরকম ধর্মীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলে। >উইকি
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১১:০৬