somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে আসুন নিঝুমদ্বীপ থেকে: সৌন্দর্যের হাতছানি : মায়াবী হরিণের অভয়ারণ্য।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অপরূপ সৌন্দর্য আর প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত দর্শনীয় স্থান হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ। পাখির কলকাকলি, হরিণের অভয়ারাণ্য, মেঘনার হিমশীতল বাতাসের প্রবাহ, সৈকত, অতিথি পাখির সমারোহ, জেলেদের মৎস্য শিকার ও বন্য প্রাণীদের সমাগম সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটকদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পর্যটন শিল্পে বিপুল সম্ভাবনার এ স্থানটি বঙ্গোপসাগরের অদূরে নোয়াখালীর
হাতিয়া উপজেলা সদর ওছখালী থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিনে বংগপোসাগরের মোহনায় অবস্থিত।

চল্লিশের দশকের গোড়ার দিকে শুরু হয় নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নদী ভাঙ্গণ। মূল ভূ-খন্ডের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গণের পর খন্ডখন্ডভাবে মেঘনার মোহনায় জাগতে থাকে নতুন নতুন চরাঞ্চল। ১৯৭৮ সালে হাতিয়ার এই দর্শনীয় স্থান নিঝুমদ্বীপে ছাড়া হয় ৪ জোড়া চিত্রা হরিণ। আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে হরিণের সংখ্যা। উত্তরে মূল ভূ-খন্ড হাতিয়া, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ এবং সমূদ্র সৈকতের মত সুবিশাল এলাকা, মাঝখানে চোখ জুড়ানো নিসর্গের হাতছানি দিয়ে সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটকদের ডেকে বেড়াচ্ছে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার দর্শনীয় স্থান নিঝুমদ্বীপ। মেঘনার বালিকনা যুক্ত রাশিরাশি লবনাক্ত
ঘোলাজল প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেও ও গর্জনের সঙ্গে মিলিন হয় আপন পরশে। বাতাসের সুমধুর প্রবাহ, কেওড়া বণে ঝাঁক বেঁধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মায়াবী চিত্রল হরিণের পাল, দল
বেঁধে ছুটে বেড়াচ্ছে বণ্য কুকুর ও শৃঙগালে দল। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়াচ্ছে হরেক রঙ্গের পাখ পাখালি। চোখ পেরালেই হরিণ মায়াবী হরিণের পাল। নিঝুমদ্বীপ বনে ফসলের মাঠে, রাস্তাঘাটে, সমস্ত স্থানে ঝাঁক বেঁধে ঘুরে বেড়া লেই দেখা মেলে মায়াবী হরিণের পাল। এর সৈকত থেকে সূর্যোদয় অবলোকনের দৃশ্য খুবই দর্শনীয়। এখানে জেলেদের মৎস্য শিকারের আনন্দ যেন অন্য এক জগতে পৌছে দেয় পর্যটকদের। শীতে অতিথি পাখিদের সমারোহে আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে এ প্রাকৃতিক পরিবেশ। মৎস্য শিকারীরা সর্বদা ব্যস্ত সময় কটায় মৎস্য শিকারে। এর অধিকাংশ স্থান জুড়ে চিকচিক করছে বালিকনা। দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপের প্রাকৃতিক সম্পদের তালিকা প্রণয়নের কাজ বহু আগে শুরু হলেও তা এখনো শেষ হয়নি। আগের তুলনায় বর্তমানে কাজি বাজারে প্রাণী সম্পদ বহুগুণ বেড়ে গেছে। তাছাড়া সুন্দরী, কেউড়া, গেওয়া, গোলপাতা, বাইনগাছসহ বহু প্রজাতির গাছ-পালায় প্রকৃতি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে সাজিয়ে তুলেছে। বাড়িয়ে দিয়েছে এর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য। কাজি বাজারের অভয়ারণ্য হরেক রঙ্গের অতিথি পাখিদের জন্য এক নিরাপদ স্থান। শীতে খাদ্যের অন্বেষণে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে উড়ে আসে জড়ো হয় এখানে। এরা ঝাঁক বেঁধে চলাফেরা করে, বাসা বাঁধে কেওড়া গাছের ডালে ও কাদাপানিতে। এ মৌসূমে এরা ডিম পাড়ে বাচ্চা ফোটায় আবার চলে যায় দূর অজান্তে। পাখিদের মোহনীয় কুহুতান শুনে মহে হয় এ যেন এক রূপ কথার পক্ষীরাজ্য। এর নির্জন বনে হাজার হাজার হরিণের সাথে বসবাস করে আসছে হাজার হাজারঅতিথি পাখির। তাদের একত্রে চলাফোরা। এ যেন এক অতিথিয়তা ও ভালোবাসার বিরল দৃষ্টান্ত। গোধূলিলগ্নে পাখির কুহুতান প্রাণী আর মেঘনার লোনা বাতাসের গন্ধ মিলে তৈরী হয় এক মোহনীয় ইন্দ্রজাল। শীত মৌসূমে সারা দেশ থেকে এখানে ছুটে আসেন সৌন্দর্য্য পিপাশু পর্যটকরা। শুধু শীত নয়, দর্শনার্থীরা একে বছরের সারা দিন পর্যটনের উপযুক্ত স্থান হিসাবে দেখছেন। আর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য তারা ছুটে আসেন এখানে। তাই বছরের সারা দিন পর্যটকদের পদাচরণে মুখরিত থাকে এটি। হরিণ, সৈকত, বালিকনা, কাকড়া, শৃগাল, সাগরের পানি ও তিথি পাখিদের সমাগমই পর্যটকদের ।


ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৫টায় তিনতলা বিশিষ্ট একটি লঞ্চ ভোল, মনপুরা হয়ে পরদিন সকাল ৯টায় হাতিয়ারতমরুদ্দি ঘাটে পৌছাঁয়। চট্টগ্রাম থেকে সাপ্তাহের ৫দিন
একটি করে স্টিমার হাতিয়ার নলছিরা ঘাটে যাতায়াত করে।
অপরদিকে প্রতিদিন ২টি কলে সিট্রাক ও বড়বড় নৌকা হাতিয়ার
নলছিরা ঘাটে যাতায়াত করে। এগুলো দিয়ে হাতিয়া সদর
ওছখালী পৌছঁলে সেখান থেকে নিঝুমদ্বীপ এ পৌছতে মাত্র তিনঘন্টা লাগবে।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×