১আগস্ট তারিখ সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়েছে সন্দেহজনক লোডশেডিং। দেড়-দুই ঘণ্টা পর বিদ্যুত এসে থাকে বিশ মিনিট থেকে আধাঘণ্টা! এতোদিনতো ভালোই ছিল, হঠাৎ এমন ঠাডা পড়লো ক্যান?...মনে পড়লো মন্ত্রীরা কে কে যেন (মন্ত্রীদের নাম বলতে পারছি না রাজাকার মোডুদের ভয়ে, অজুহাত পাইলেই গিলি..ট) বলেছে রমজানে বিদ্যুত উৎপাদন হবে ৫হাজার মেগাওয়াট...লোডশেডিং কমিয়ে আনা হবে আধাঘণ্টায়। আহারে এমন দেশের পাবলিক আমরা যে দেশের পেরধান মন্ত্রী থেকে শুরু করে যেই মন্ত্রীই কিছু একটা বলে মিডিয়ায় প্রচারের জন্য ঘটে তার উল্টো। এইদেশের মানুষ পেরধানমন্ত্রীকেও মানে না। তাহলে আর আমার বাচ্চা ছেলেটাকে তার মা মারল কেন? নয়ঘণ্টার লোডশেডিং আর পানিবিহীন একটি দিন অতিবাহিত করে বিরক্তিটা ঝাড়লো তারওপর? আমার ছেলে জানালায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলছিল কুত্তারবাচ্চা হাসিনা কারেন্ট দে....ওর চিৎকারে পাশের বাড়িটার বিভিন্ন ফ্লাট থেকে বিভিন্ন মানুষের মুখ দেখা গেলো। ও যেন তাদের মনের কথাই বলেছে...
কী বাবু, তোমাদের বাসায় কারেন্ট নেই? আমাদের বাসায়ও নেই, পানি আছে? আমরাতো আজ একফোটা পানি পাইনি...
পাশের বাড়ির লোকদের উৎসাহে বাচ্চাটা আরও জোরে জোরে গালি দিতে লাগলো কুত্তার বাচ্চা হাসি না কারেন্ট দে...
এক বুড়ো বয়সী লোক বলে হাসিনার কী দোষ! দাদাদের চাল,
বাচ্চাটা এসব বোঝে না, সে তার মতো বলতে থাকে কুত্তার বাচ্চা হাসি না, কুত্তার বাচ্চা হাসি না...হঠাৎ এক পর্যায়ে তার মা এসে ঠাস করে গালে চড় বসিয়ে দেয়...গালির অপরাধে...আমি একটু খেপে গেলাম সারাদিন পানি নাই, বিদ্যুত নাই সেজন্য কি ও দায়ী নাকি ওকে তুমি মারলা কেন?...ওর উপর রাগ ঝারো? তারপর আমার মুখে যা এলো তাই বললাম পবিত্র রোজা মুখে। জানি পানির অভাবে গোসল নাই বাথরুমে দুর্গন্ধ
ঘরময় ময়লা, রান্নাচেষ্টার ময়লা, ফ্রিজের পচা মাছ, দুধ এতসবের মাঝে এই গালিটুকু সামান্যই। আমার শাশুড়ী একটু খেপে গেলেন তিনি গতদিন দুপুরে এসে পৌছেছেন। দুপুর একটায় ফরিদপুর থেকে গাবতলী পৌছলেও বাসায় পৌছতে বেজেছে সোয়া চারটা। ভয়াবহ জ্যাম। ৬তলা বাসায় উঠে দেখা গেলো তখনও কারেন্ট আসেনাই। কারেন্ট নাই তো পানিও নাই। নাই নাই নাই। রাত বারোটায় যখন টিনটিন করে পানি এলো তখন আর তার গোসলের ধৈর্য নাই...যাইহোক গোসল করতে না পেরে গরমে ঘামে অতীষ্ট মানুষটি রাতে না খেয়ে ঘুমালেন। রাত সোয়া তিনটায় যখন ঘুম থেকে উঠলেন ঠিক তখনই আবার লোডশেডিং....
২টা মোমবাতি শেষ....মোবাইলের আলো দিয়ে কোনওরকম একটাকিছু মুখে দিয়ে রোজার নিয়ত করলাম সকাল ১০টা পঞ্চাশে কারেন্ট গেলো...সারাদিন ওয়েট করি ওয়েট করি....আসে না আসে না আসে না...বাবুর মামা চুল কেটেছেন গোসল করতে পারছেন না। সন্ধ্যায় এক বস্তিতে টিউবয়েলের সাথে যুদ্ধ করে গোসল করে এলো...
সন্ধ্যা সাতটা পঞ্চাশে কারেন্ট এলো এলো পানি...কিন্তু পনের মিনিটও না...
আধাঘণ্টার মধ্যে কারেন্ট আবার গায়েব...দেড় ঘণ্টাপর এলো.....তার আধাঘণ্টাপর আবার গায়েব....হাসিনা আপা আমরাকি আর বাচুম না....খোদা গজব এইভাবে না দিয়ে একবারে দেও যেন বেশ্যামাগি হাসিনাও না বাঁচে....
জানি মডুরা এই দু:খটুকুও কাউকে জানতে দেবে না। ওরা সব দালাল কেড়ে নেবে আমার মুখের এই ভাষা।...