somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোকড়া চুলের প্রেমে পড়া

২৪ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লোকারণ্যহীন নিভৃত পথেই আসতো সে। একা আসত না। কয়েকজনের সঙ্গে দলবেধে আসত। স্কুলে যেত। খুব দ্রুত হাঁটত। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলত। আবার হাসত। অনেক ছোট একটি মেয়ে। কতই বা বয়স। ১৩ অথবা ১৪। সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সালটা তখন ১৯৯৯। ১৯৯৯ সাল সময় তো কম না। প্রায় ১৬ বছর আগে। আজকের যারা এসএসসি পরীক্ষা দেয় তারা নিছকই ক্লাস ওয়ানে পড়ে। প্রতিদিন শ'খানের সিএনজি, অটো ছুটে চলা রাস্তাটি তখনও পাকা হয়নি।
মেয়েটি প্রতিদিনই আসত। অনেকগুলো মেয়ের সঙ্গে। এর মধ্যেই হঠাৎ একটি চোখ গেল মেয়েটির দিকে। না সামনের চেহারার দিকে নয়। পিছন দিক থেকে। মেয়েটির কোকড়া চুলগুলো দেখে। বিধাতা যেন নিজ হাতেই এই চুলের যত্ন নেন। খুব বড় নয়। কিন্তু কোকড়া খোলা চুল দেখে চোখ একবার হলেও আটকাবে। কি অসাধারণ।
এসএসসি পরীক্ষার্থি শান্তর চোখও খুব সহজেই আটকে গেল। মেয়েটির চুলের প্রতি। কি এক মোহ তাকে বারবার মেয়েটির চুলের দিকে তাকাতে বাধ্য করে। শান্ত খোঁজ নেওয়া শুরু করলো মেয়েটির সম্পর্কে। তার নাম কি, কোথায় বাড়ি, আরওও...............।
একই স্কুলের অস্টম শ্রেনিতে পড়ে। নাম নাহার। নিষ্পাপ চেহারার মেয়ে। চেহারাতে কোন শয়তানি বা পাপ লুকিয়ে নেই। নির্ভেজাল। স্কুলে আসা যাওয়ার পথে উচ্চল হাসি। সবই মোহবিষ্ট করে শান্তকে। স্থির থাকতে দেয় না। বারবার মেয়েটির কথা ভাবতে বাধ্য করে সদ্য টিএনজে পা দেওয়া শান্তকে। মেয়েটিকে সরাসরি কিছু বলার সাহসও নেই শান্তর। আসলে সে একটু ভীতিু। এই প্রথম কোন মেয়েকে দেখে ভালো লাগছে। এটাই একটা ভয় তার ভিতরে কাজ করছে। কি করবে, কেউ জানলে কি হবে। লোকে কি বলবে। বাবা-মা, পরিবার তারা কি বলবে। মেয়েটিকে কিভাবে আকৃষ্ট করবে। মেয়েটি যদি রাজি না হয়। তাহলে?
মেয়েটির নাম নাহার। বাবা প্রবাসী। শান্তদের ২ গ্রাম দূরে বাড়ি। মেয়েটিকে কিভাবে বলবে এটা ভাবতেই পারছে না শান্ত।
এভাবে প্রতিদিনই নাহারকে দেখত শান্ত। ছোট্ট নাহারও একসময় বুঝলো তাকে কেউ একজন অনুসরণ করছে। মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার আসা-যাওয়ার দিকে কেউ একজন তাকিয়ে থাকে। তার মনের অবচেতন ভাবনায়ও মেয়েটি ছেলেটির কথা ভাবতে থাকে।
তারপর একসময় ................ হয়ে যায় দু'জনের প্রেম। দু'জনেই হাবুডুবু খেতে থাকে তাদের প্রেমের রাজ্যে। অথচ এটা দুইজনেরই অবুঝ ভালোবাসা, তা কেউই বুঝে না। এভাবেই তাদের দিনগুলো কেটে যায়। আস্তে আস্তে তাদের প্রেমের বয়সও বাড়তে থাকে। নাহার একসময় এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে। ছেলেটি তখন অনার্স করছে। এই সময়ই মেয়েটির ঘর থেকে বিয়ের কথাবার্তা চলতে থাকে। কিন্তু ছেলেটি তখনো বেকার। নিজের কলেজের যাওয়ার ভাড়াও নিতে হয় পরিবারের কাছ থেকে। এই অবস্থায় শান্তর কি করণীয় থাকে। নাহার শান্তকে কিছু একটা করার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু শান্তর মুখ থেকে কোনো কথা বের হয় না। আসলে এতদিনে এসে শান্ত বাস্তবতা বুঝতে শিখেছে। বুঝতে শিখেছে তাদের সঙ্গে যে পবিত্র প্রেম ছিল তা মিলনে রূপ নেওয়া সম্ভব না। শান্ত ভাগ্যকেই মেনে নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে থাকে। আর নাহার সে তার বাবা-মায়ের চাপে পড়ে তাদের পছন্দ করা ছেলেকেই বিয়ে করতে বাধ্য হয়। এদিকে চাপা পড়ে যায় দুটি কচি হৃদয়ের সুন্দর প্রেমের অসুন্দর সমাপ্তি। দু'জনই ভাগ্যকে মেনে নিয়ে বাস্তবতায় পা বাড়ায়।
কিন্তু দু'জন দু'জনকে যেভাবে তাদের মনে স্থান করে নিয়েছে তা আর কখনও মুছবে না তাদের হৃদয় থেকে। নাহার কিছুদিনের মধ্যেই তার ভাগ্যকে মেনে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে সুখে শান্তিতে ঘরসংসার করবে। আর শান্ত কিছুদিন জীবনযাপনে অনিয়ম করে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে।
(এটাই হচ্ছে আমাদের জীবনের প্রথম প্রেম। বেশিরভাগ কাহিনিই একইরকম, সমাপ্তিও প্রায় কাছাকাছি)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×