somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতঃপর গণতন্ত্র.....!!!

০৪ ঠা জুন, ২০১০ রাত ১২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আব্রাহাম লিংকন সাধের গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন..

"Democracy is a government of the people, by the people and for the people”

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা জনগনের বাকস্বাধীনতা সহ সকল প্রকার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে।
রাষ্ট্র তথা সরকার তার সিদ্ধান্ত ও সকল প্রকার পদক্ষেপের জবাবদিহীতা জনগনের সামনে উপস্থিত করবে, গণতন্ত্র এমনই একটি শাসন ব্যবস্থা!



এইতো গত বছর জানুয়ারির কিছু আগেও বড় এক শিকলে আবদ্ধ ছিলো গণতন্ত্র!!

পথে ঘাটে সন্ত্রাস কমে গিয়েছিলো, মানুষ নিশ্চিন্তে সন্ধ্যার পর একা পথে চলতো, চাঁদাবাজরা হঠাৎ কোথায় সরে পরায় দোকানী আর ব্যবসায়ীরা কেমন আয়েশ করে ব্যবসায় মেতে ছিলো.. ঐ যে দেশের শেষ সীমানাটা যেখানে.. একদল শোসক সেখানে এমন এক বেয়ারা পাহারা বসিয়ে দেয় যে চোরাচালানীরা অতীষ্ট হয়ে সেই পাহারাদারদের উপর ক্ষেপে উঠে.... ঢাকার পথে ঘাটে মাস্তানের সংখ্যা প্রায় আশংকাজনক ভাবে হ্রাস পায়...

আর এসবের সাথে যোগ হয় একদলের দীর্ঘশ্বাস আর হা্হাকার.. “হায় গণতন্ত্র! কোথায় গণতন্ত্র!!!”

সত্য কথা.. সন্ত্রাস হ্রাস পেতে পারে, দেশের মানুষ নিশ্চিন্তে কটা দিন ঘুমোতে পারে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা অস্ত্র ছেড়ে হঠাৎ খাতা কলম নিয়ে মেতে উঠতে পারে, অভিভাভবকরা নিশ্চিন্তে আবার সোনালী দিনের স্বপ্নে বিভোর হতে পারেন... কিন্ত গণতন্ত্র তো শৃংখলাবদ্ধ!!! কুচক্রী সরকার গণতন্ত্রের সকল মানস কন্যা ও পুত্রদের শ্রীঘরে পাঠিয়ে তাদের অঢেল সম্পদের হিসেব চাইবার মতো ধৃষ্টতা পর্যন্ত দেখিয়েছে...


অবশেষে.. অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে. টিন চুরির অপবাদে দুষ্ট গণতান্ত্রিকদের বাদ দিয়ে দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করে আনে...

আনন্দের সাথে শুরু হয় হোলি খেলা.. এই খেলায় রং এর মতো তুচ্ছ জিনিস নয়.. বরং টাটকা রক্তের আবীর মেখে রাঙ্গানো হয় সময়...

এই মুক্তির কয়েক সপ্তাহ পর কুলাঙ্গার সেসব পাহারাদারদের হত্যা করে, ভাতৃপ্রতীম বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে সীমানা প্রায় মিটিয়ে আমরা বন্ধুত্ব জোরদার করি। গণতন্ত্র আমাদের সে সৌভাগ্য এনে দেয়!

গণতন্ত্রের অসীম শক্তি বলে শিক্ষা প্রতষ্ঠিানগুলোতে কলম মতো ঠুনক জিনিস ছেড়ে শুরু হয়ে যায় পেশী শক্তির লড়াই...

প্রিয় গণতন্ত্র আমাদের হল দখলের যুদ্ধ দেখার আনন্দ এনে দেয়।

গণতন্ত্র বলে এদেশের মানুষের নিরাপত্তা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হলেও বিশেষ পরিবারের আজীবনের আর বিশেষ দলের ৫ বছরের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়!!


কাংক্ষিত গণতন্ত্র এনে দেয় শোকের নামে বিকৃত চর্চা..

প্রিয় গণতন্ত্র বলে শুরু হয় প্রতিহিংসা আর ক্ষমতার দাপটে যাকে তাকে হেনস্থা...
প্রিয় গণতান্ত্রিকের হাতে বাংলাদেশের মানুষ হারায় বাক স্বাধীনতা!

গণতন্ত্র বলে কথা.. ক্ষমতাসীনের কুলাঙ্গার সন্তানরা লুটে নেয় মানুষের ঘর, জমি, ব্যবসা আর মেরুদন্ডের জোর!



অনেক স্বপ্ন নিয়ে কষ্টার্জিত অর্থে দরিদ্র বাবা মা কলম হাতে যে সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠিয়েছিলেন, গণতন্ত্রের উপহার স্বরূপ পেয়ে যান পুত্রের লাশ!
তাতে কি.. এমন তো হতেই পারে, এটা কোন ব্যাপার না!!
জনসংখ্যার ভারে নুয়ে পড়া দেশে এমন দু চারজন মারা গেলে মন্দ নয়, কোন এক পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আছে!!


আহা গণতন্ত্র!

"Of the People, By the People, For the People...”
সংজ্ঞা আজ পাল্টেছে সোনার বাংলায়.. হয়েছে..
“Of the Party, By the Party, For the Party!!!”
নতুন যুগ, নতুন সময়... সংজ্ঞাটি আরেকটু ঘষামাজা করে বর্তমানে নতুন রূপ ধারন করেছে..

“Of the Family, By The Family, For the Family”



গণতন্ত্র মানে আত্মজার ক্ষমতায় আরোহন
গণতন্ত্র মানে স্ত্রী পুত্রের গদি দখল
গণতন্ত্র মানে ক্ষমতাসীনের সন্ত্রাস আর লুটপাট
গণতন্ত্র মানে রাষ্ট্র প্রধানের পরিবারের চোটপাট
গণতন্ত্র মানে স্বৈরাচারের মুখে বিজয়ের হাসি
গণতন্ত্র মানে নিরীহ জনতার স্বাধীনতায় ফাঁসী
গণতন্ত্র মানে হল দখল, সন্ত্রাস আর চাঁদাবাজী
গণতন্ত্র মানে ছাত্রদের কলম ছেড়ে বন্দুক আর বারুদবাজী
গণতন্ত্র মানে হারিয়ে ফেলা বাক স্বাধীনতা
গণতন্ত্র মানে ক্ষমতাসীনের শুধুই পদলেহিতা।

আমার পূর্বপুরুষের রক্তের বিনিময়ে, প্রাণের বিসর্জনে অর্জিত স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধ আজ শুধু ক্ষমতালোভীর ফেরি করে ফেরা পণ্য মাত্র।

ক্ষমতালোভী ক্ষুধার্ত শকুনীর পাল আজ খামচে ধরেছে দেশের মানচিত্র, কুলুপ এঁটে দিয়েছে মানুষের মুখে। তাদের নোংরা নখরে ক্ষত বিক্ষত ধর্ষিতা মাতৃভূমি।

সরকারের তোষামোদ না করলে গুড়িয়ে দেয়া হয় সংবাদিকের কলম, ছিনিয়ে নেয়া হয় বাকস্বাধীনতা! তাই, বন্ধ হয়ে যায় চ্যানেল ওয়ান!
বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক।
বন্ধ হয়ে যায় “আমার দেশ” দৈনিক সংবাদপত্র।

অতঃপর.. বর্তমান বাংলাদেশে এই আমাদের গণতন্ত্র!!!!!
২১টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×