আমার এই লেখাটি মূলত সর্বসাধারনের পাঠযোগ্য নহে। যাহারা একটি বিশেষ ভাবধারায় গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কোরান বুঝিতে চাহেন আমার এই লেখা তাহাদের জন্য অপাঠ্য।
আমার লেখা মূলত আমাদের দলীয় লোকদের জন্য এবং যাহার উচ্চতর চিন্তা-চেতনায় উদবুদ্ধ সত্য সন্ধানী তাহাদের জন্য।কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলকে ইচ্ছা করে কোন কিছু লিখিতে চাহিনাই।
বানানগত ভুল হতে পারে, মানুষত । ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আল্লাহ কাফের দ্বারা আবৃতঃ
واللّهُ مُحِيطٌ بِالْكافِرِينَ
‘ওয়াল্লাহু মুহিতুম বিল কাফেরিন’-(সুরা বাকারাঃ১৯ এর শেষাংশ)
প্রচলিত অনুবাদঃ “আল্লাহ সত্য প্রত্যাক্ষানকারী-দিগকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন”(ইসলামিক ফাউন্ডেসন)
কোরানের বানীর আবেদন সর্বকালীন ও সর্বজনীন।শরিয়তের পরিভাষায় ‘কাফের’ অর্থ ‘সত্য প্র্ত্যাক্ষানকারী।পবিত্র কোরানে ‘কাফের’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে তার মূল ধাতু ‘কুফরুন’। ‘কুফরুন’ অর্থ আবৃত। এই প্রেক্ষিতে ‘কাফের’ শব্দটির অর্থ আবৃতকারী।
বাক্যটির অনুবাদে বলা হয়েছেঃ আল্লাহ সত্য প্রত্যাক্ষানকারী-দিগকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন-কিন্তু মূল আরবীতে এরুপ কোন কথাই বলা হয়নাই। আমি বলছি কোরানে আরবী ভুল লেখা হয়েছে, কিন্তু এর শাব্দিক অর্থ বাংলায় যা বলা হয়েছে তা সম্পুর্ন ভুল। আর এ ধরনের অসংখ্য ভুল দিয়ে কোরানে ভরপুর। মূলত সেই ১৪০০ বছর ধরে এই ভুল অর্থ ও ব্যাখ্যা দ্বারা বিভিন্ন মুসলমান সৃষ্টি হচ্ছে। আল্লাহর রসুল কোরান নাজেল এর পরে এর প্রচার ও প্রসার হয়েছে ইয়াজিদ, ওহাবী বিভিন্ন ইসলামের শত্রু দ্বারা। তাই আজ মুসলমানের এই করুন দশা।
আরবীর সরাসরি যদি আমরা অর্থ করি তাহলে দাঁড়ায়ঃ “এবং আল্লাহ কাফের দ্বারা আবৃত”। প্রচলিত ধারনা মতে তফসীরকারকগণ মনে করেন আল্লাহ সর্বশক্তিমান কিভাবে কাফের দ্বারা আবৃত থাকবে?যা একদমই সম্ভব না।তাই আল্লাহ কি বলেছেন বা বলতে চেয়েছেন সেটা একদম না দেখে না বুঝে নিজেরাই মতামত দিয়ে বসেছেন। প্রায় প্রতিটি কোরানের বঙ্গানুবাদে এরুপ ভুল দেখাই যায়।
দুই এক আরবী জানলে বা ভাষা জ্ঞান খুব প্রখর থাকলেই করান ব্যাখ্যা করা যায় না। আর আরবী পড়তে পারলেই কোরান তফসির করা …বহুদুরের ব্যপার। যাইহোক দুঃখের বিষয় হল আজ এইসকল আরবী জাননে ওয়ালা দিয়েই কোরানের অর্থ ব্যাখ্যা প্রচার প্রসার হচ্ছে। তাই মিথ্যায় আজ সমাজ, রাষ্ট্র, ভরপুর।
মূলত যারা আল্লাহকে তার সৃষ্টির ভিতর দেখতে চাননা, আল্লাহকে দূরে কোথাও সাত আসমানের উপর বসিয়ে রেখেছেন, সহজে আর তাঁকে তার সৃষ্টির ভিতর দেখতে চাননা তাদের তারা এ ধরনের ভুল অপব্যাখ্যা হয়ে থাকে। আর মোয়াবিয়া ইয়াজিদ ছিল এই ধারনার প্রধান নেতা। তাদের দ্বারাই আজ ইসলাম পরিচালিত। মোহাম্মাদী ইসলাম কবে লুকিয়ে পড়েছে লজ্জায়, আজ শুধু আছে তার খোলস মাত্র। তাও বিভিন্ন গত্রে ছিড়ে ছিড়ে টুকরা টুকরা করে ফেলেছে স্বার্থের, ভোগের জন্য। নিজেদের মত করে তফসির, ব্যাখ্যা দ্বারা ভরে দিয়েছে। এই ব্যাখ্যা পড়ে আবার নতুন আলেম সৃষ্টি হয়েছে।
আবার আমরা যদি একটু দেখি সুরা হিজর এর ৯ নং আয়াতের দিকেঃ
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
প্রচলিত অনুবাদঃ আমি সয়ং এই উপদেশ গ্রন্থ অবতরণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।
কিন্তু আজব বিষয় হল ‘আমি এই উপদেশ গ্রন্থ (কোরান)’-এই শব্দটি এই বাক্যের কোথাও নাই। যে শব্দটিকে কোরান বলে তুলে ধরা হয়েছে তা হল ‘জিকির’। কিন্তু জিকির আর কোরান কি এক জিনিস?ইহা বোঝার জন্য আশা রাখি দাড়ি, টুপি, জুব্বা, আলখেল্লা পড়ে অথবা মাদ্রাসায় যেয়ে কামেল পাশ করতে হবেনা!! কোরান ও জিকির দুটি আলাদা শব্দ এবং আলাদা অর্থবোধক।
প্রকৃত অনুবাদঃ ‘অবশ্যই আমরা নাজেল করি জিকির এবং আমরাই তা সংরক্ষন করি’
এখানে আমি বলে কোন শব্দ নাই, না আছে কোরান বলে কোন শব্দ। সুতরাং জাতিকে অবশ্যই জানতে হবে এই আমরা কারা। কেন কোরানের বহু জায়গায় এই আমরা ব্যবহার করা হয়েছে। আল্লাহ এক তারপরও এখানে আমরা কেন বাবহৃত হল? প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। অথচ এই প্রশ্ন করলে অনেক আলেমরা রেগে যায়, কেউ বলে বসে এ সকল প্রশ্ন করা উচিত নয়, কোরানের এইসব এক্মাত্র আল্লাহই জানেন… আরও কত কি? অথচ আল্লাহ বলছেন কোন কিছু না জেনে তার উপর বিশ্বাস আনা পাপ…তারপরও আমরা হলাম সেই না দেখে না জেনে শুনে ঈমানদার তথা বিশ্বাসী। হাস্যকর মুসলমান। অবাক লাগে নিজেদের।
দোহার
কাদরীয়া শরীফ
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ৮:৫১