somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

***আসুন জেনে নিইঃ আমাদের সমাজে প্রচলিত কতগুলো কথা যা বাস্তবে শিরক***

১০ ই নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের মাঝে একটা স্বভাব রয়েছে আর তাহলো তার চেয়ে ভাল অবস্থায় কেউ থাকলে বা তার নিজস্ব অবস্থানের চেয়ে কাউকে বড় দেখলে সে তাকে তার মনের মাঝে এমন একটা জায়গায় স্থান দিতে শুরু করে যে ধীরে ধীরে সে নিজের অজান্তে শিরকে জড়িয়ে পরে। আমাদের অনেকেই প্রায়ই এই ধরণের কথা বলে থাকিঃ

***আপনি ছিলেন বলেই আজকে রক্ষা পেলাম!
***আমি আপনার উপরই ভরসা করছি!
***আপনি ছাড়া আর কে সাহায্য করবে!
***আপনি যদি থাকতেন তাহলে কাজটা এরকম হতো না!
***ভাই সাহায্য করেন, আপনিই একমাত্র পারেন আমাকে সাহায্য করতে!
***হ্যালো, ভাই কেমন আছেন! কঠিন বিপদে আছি উদ্ধার করেন ভাই! (মোবাইল কথোপকথন)
***হে দয়ার নবী রক্ষা কর মোরে!
***হে দয়ার নবী রক্ষা যদি না কর বেহেশতে যেতে পারব না!
***হে অমুক মাজারবাসী আমার অমুক আশাটা পূরণ করে দেন!
***কেবলাবাবাই ভরসা!
***দয়ালবাবা, বাবা ভান্ডারী রক্ষা কর মোরে!


আমি মোটামুটি কিছু প্রচলিত কথা তুলে ধরলাম, যার চর্চা করার মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত শিরক করে চলছি! যা মোটেই উচিত নয়, একজন মুসলিম হিসেবে এই বিষয়ে স্পষ্ট একটা ধারণা থাকা প্রয়োজন। কারণ, আল্লাহ তাআলা শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না।
“আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করা গুনাহ মাফ করবেন না। শিরক ছাড়া
অন্যান্য যে সব গুনাহ রয়েছে সেগুলো যাকে ইচ্ছা মাফ করে দিবেন।”

(নিসাঃ৪৮)

১।আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেছেন,
“আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার
করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো
তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না।”
(ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭)

“তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে [উপকার সাধন অথবা মুসীবত দূর
করার জন্য] ডাকো তারা কোন কিছুরই মালিক নয়।” (ফাতেরঃ ১৩)

২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেছেন,
“আল্লাহর কাছে রিযিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো”।
(আনকাবুত : ১৭)

৩। আল্লাহ তাআলা অন্য এক আয়াতে এরশাদ করেছেন,
“তার চেয়ে অধিক ভ্রান্ত আর কে হতে পারে, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ছাড়া
এমন সত্তাকে ডাকে যে সত্তা কেয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিতে পারবে
না”।
(আহকাফ : ৫)

৪। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,
“বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির ডাকে কে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে ? আর কে তার
কষ্ট দূর করে?”
(নামল : ৬২)

৫। ইমাম তাবরানী বর্ণনা করেছেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর যুগে এমন একজন মুনাফিক ছিলো, যে মোমিনদেরকে কষ্ট
দিতো। তখন মুমিনরা পরস্পর বলতে লাগলো, চলো, আমরা এ মুনাফিকের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহায্য চাই। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, “আমার কাছে সাহায্য চাওয়া যাবে না। একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।”


এই আলোচনা থেকে আমরা যা শিখলামঃ
***আল্লাহ ব্যতীত আর কারো কাছে সাহায্য চাওয়া শিরক।
***আল্লাহ ব্যতীত আর কারো কাছে রিযিক চাওয়া উচিত নয় তেমনি আল্লাহ ব্যতীত আর কারো কাছে জান্নাত চাওয়া উচিত নয়।
***আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকলে সে কুফরী করবে।
***ইখলাসের সাথে একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।
***রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক তাওহীদের হেফাযত, সংরক্ষণ এবং আল্লাহ তাআলার সাথে আদব-কায়দা রক্ষা করে চলার বিষয়টি জানা গেলো। অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও কাউকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারেন না সে বিষয়টিও আমরা জানতে পারলাম হাদীসটির মাধ্যমে।


মহান আল্লাহ আমাদেরকে শিরকপূর্ণ কথা, কাজ ও চিন্তা থেকে হিফাজত করুন। আমীন।
২২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×