(কবি হেলাল হাফিজকে)
মাহমুদ হাসান
আসা হয় না ফেব্রুয়ারির বইমেলায়
মন পড়ে থাকে বাংলা একাডেমী চত্বরে
কাধের ঝুলাব্যাগ প্রেসক্লাবের সবুজ ঘাস
স্পর্শ করার আগেই ঊনসত্তরের নবীন যৌবন
আছড়ে পড়ে যুদ্ধ ডাকের কবিতায়
ছিল কী ভয় ধুলো ও রমণীতে।
পদ্মার বুক থেকে উঠে আসা ফুটফুটে সকালে
মুন্সিগঞ্জ লঞ্চঘাটের উদাস হাওয়ারা আজও
উকিঁ দেয় আষাঢ় রাতে তোপখানা রোডের
এক চিলতে হোটেলঘরে; দার্শনিক চেহারার
সত্তুরে কবির মাথার বালিশ ছুঁয়ে অবমিশ্র
মিছিল শেষ হয় না মগজে পিলপিল করে
ধাঁড়ি ইঁদুর,বদ আরশোলা,বেহায়া টিকটিকি
আর কলাভবনের দুর্দান্ত সুন্দরী সহপাঠিনী।
কদম ফোয়ারার আলোদন্ডের মাথায় কম্পমান
আঁধারে প্রতিটি মানুষ যেন একেকটি মিছিল
চিতার মতো ক্ষীপ্র ছুটছে বুড়িগঙ্গা অভিমুখে
পল্টন ময়দান ছাপিয়ে রমনা রেসকোর্স থেকে
শয়ে শয়ে মিছিল নেমেছিল শহরে একাত্তরে।
যৌবনের কবিতার নামে আজও ছুটির বিকেলে
আড্ডা হয় হেলেন সবিতা সেনের ছোট ছোট
ভালোবাসাগুলো স্মৃতির মার্বেল হয়ে হুটোপুটি
খায় হীরণবালার শাড়ির ভাঁজে; যদিও নিজের
মতো করে হয়নি বলা কোনদিন মনের কথাটি
তখন স্বপ্নচারী এক পরিপুষ্ট প্রেমিক ও প্রতিবাদী
তুমুল প্রশংসায় গুটিসুটি যেন লাজুক কিশোরী
জীবনের গিঁটে কখনো কী বাঁধা যায় শ্রেষ্ঠ সময়!
মানবিক অলংকারে নারীকে সাজাতে সাজাতে
কাবিননামায় স্বাক্ষর করা হয়নি বলে আজও
রেণু’পার মুখ প্রবারণা পূর্ণিমার ফানুস
সাপের খোলস পালটানোর মতো তুমিই
পেরেছো বদলাতে ধ্রুপদী জীবনের সংগ্রাম।
সদ্যছাপা সকালের কাগজ নিয়ে মধ্যরাতে
ঘরহীন ঘরে ফেরা ক্লান্তিরা নিভৃতে বইমেলার
ধুলোয় মিশে একাকার নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র
জনকের ধোপদুরস্ত অভিমান এ জীবনের।
বৃষিটর পা থেকে খসে পড়া ন–পুরের শব্দ ছুঁয়ে
সাদাকালো দাড়ির ভেতর উঁকি দিচ্ছে দিব্যি
নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় যেন যৌবনের আরেক নাম।
#