somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাবলিক টয়লেট,সরকার এবং নির্বাচন পদ্ধতি বিষয়ক সুগভীর চিন্তাভাবনা !!!

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মোটেই ব্লগ লেখার অভ্যাস নাই । জীবনে প্রথম ব্লগ লেখার জন্য আমি কী-বোর্ড হাতে তুলে নিয়েছি । কলম দিয়ে লিখতে হয় বাধ্য হয়ে,ইচ্ছার বিরুদ্ধে । কলম দিয়ে লিখলে আমার লেখা সুন্দর হয় না, লাইনগুলা কেমন যেন এক অদৃশ্য সিঁড়ি বেয়ে ধাপে ধাপে উপরে উঠে পড়ে । কালিও শেষ হত খুব দ্রুত । তাছাড়া কলেজে পড়াকালীন সময়ে এক স্যার আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন আমার পুরুষাঙ্গের সাথে কলমের সাদৃশ্যের ব্যাপারে । এসব নানাবিধ কারনে কলমের প্রতি আমার ব্যাপক ক্ষোভ । কলম ছেড়ে কী-বোর্ড ধরাতে প্রচুর আনন্দ । লেখা খুব সুন্দর । একেবারে ছাপা অক্ষরের মত । কম্পুতে অভ্র নামে একটা জিনিস থাকলে তো আর কথাই নাই । আগে বলতো অসির চেয়ে মসি বড় । এখন বলা উচিৎ , অস্ত্রের চেয়ে অভ্র বড় । আরেকটা বড় সুবিধা হল কালি শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নাই । যেটা আমার মত কিপটাদের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা । আমি ছোটখাট কিপটা না, কিপটামিতে আমার বেশ নাম ডাক আছে বন্ধুমহলে । আমার কিপটামি নিয়ে তারা বেশ হাসাহাসি করে বিনোদন লাভের চেষ্টা করে । যদিও আমি এই হাসির কোন অর্থ খুঁজে পাইনা । এই তো সেদিন,আড্ডা দিচ্ছিলাম সবার সাথে । হঠাৎ প্রকৃতির ছোট একটা ডাক । পাশেই পাবলিক টয়লেট ছিল । যেখানে ছোট কাজটা সারতে গেলেও ২ টি টাকা দিয়ে আসতে হয় । আমি তাও গেলাম না । বসে বসে উশখুশ করছিলাম । বন্ধুর প্রশ্ন , "যাস না ক্যান ?২ টাকার লাইগ্যা ? এইখানে মুইতা দিবি নাকি হালা ? নাইলে ওই ডাস্টবিনের পাশে কুত্তাটার লগে খাঁড়াই যা " । যথেস্ট অপমানজনক বক্তব্য । প্রচন্ড অপমান লাগলেও মুখটা হাসিখুশী রেখে তাকে যুক্তিসহকারে বুঝানোর চেষ্টা করলাম আমি মোটেই কিপটা না । বললাম , "দোস্ত ওখানে হাগতে লয় ৫ টাকা । ৫ টা মিনিট বইলে আমার হাগা ধরবো মনে হয় । ৫ টাকা দিয়া তখন হাগলে আমার মুতার ২ টা টাকা বাইচ্যা যায় " । মনে হয়না অভাগা আমার কথার দাম বুঝলো । বুঝার কথাও না । অতীতে মানুষ না বুঝে কত দার্শনিকরে পরপারে পাঠাই দিছে,আর সে জায়গায় আমারে তো সামান্য পাবলিক টয়লেটে পাঠাইলো ।
পাবলিক টয়লেটে ঢুইকা আমি সরকারের জাত গুষ্টি উদ্ধার করলাম । অবশ্যই মনে মনে করলাম । প্রকাশ্যে এই কাজ করে মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার অপব্যবহারের দায়ে জেল খাটার কোন ইচ্ছাই আমার নাই । বলা যায়না , পাবলিক টয়লেটের ভেতরও ভ্রাম্যমান আদালত থাকাটা বিচিত্র না । পাবলিক টয়লেট বলে সেখানে আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা হবে না ,এটা কোন ধরনের কথা ? এতসব চিন্তা ভাবনা করে আমি মনে মনেই গালি দিলাম সরকারকে । সরকার কি পারেনা বিনামুল্যে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে সরকারী টয়লেট বানাই দিতে ? এতে করে এক ঢিলে ১০-১২ টা পাখি মারা যায় । টয়লেটের নামকরণ করা যায় ইচ্ছামত । দলের অনেক নেতার খুব শখ ফিতা কেটে যে কোন কিছু উদ্ভোদন করার এবং এই ফিতা কাটার ভিডিও বিটিভির রাত আটটার খবরে দেখানো । তাদের শখ টাও পূরণ হয় । জনগণের শখ পূরণ না করলেও ক্ষমতায় যাওয়া যায় ,থাকা যায় গদি আঁকড়ে । কিন্তু নিজদলীয় নেতাদের শখ পুরণ না করলে আপনি আর নাই । যাই হোক, আমি এই পাবলিক টয়লেটে দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আগামী নির্বাচনে যে দল প্রতিশ্রুতি দিবে বিনামূল্যে পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করা যাবে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসলে , আমি তাকেই ভোট দিব । সরকারের কাছে আমার চাহিদা অল্প । মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত । ভোটের আগে তারা যতই বলুক , আমরা ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ হেন হবে,তেন হবে ,চাল-ডাল-বাল এর দাম কমবে, বিদ্যুৎ বাড়বে , রাস্তাঘাট হবে সুন্দর - ঘরে আয়না লাগবেনা , রাস্তায় চেহারা দেখতে পারবেন । দুর্নিতি থাকবেনা ,এইটা থাকবেনা , ওইটা থাকবেনা - আমি তাদের ভোট দিবনা । আমি জানি এর কিছুই তারা করতে পারবেনা । খেজুরে গল্পে আমার মন ভরেনা । গতবার মহাজোটের পুঁটলিতে গেছিলো আমার মহামূল্যবান ভোট । আইডিয়া করেন কেন তাদের ভোট দিলাম । পারলেন না । আমি এত বেকুব না যে ১০ টাকায় চাল,প্রতি পরিবার থেকে একজনকে সরকারী চাকরী এসব অসম্ভব কথা বিশ্বাস করে ভোট দিব । আমার চাহিদা অনেক অল্প, আগেই বলছি । জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর , মাওলানা ভাসানি নভোথিয়েটার, চীন মৈত্রি সম্মেলন কেন্দ্র - এই ধরনের বিভিন্ন জিনিসের বিভিন্ন ধরনের আলাদা আলাদা নাম মুখস্থ রাখতে রাখতে আমার ক্ষুদ্র মস্তিস্কের পেরেশান অবস্থা ছিল । চিন্তা করে দেখলাম আওয়ামী লীগ আসলে এই পেরেশান অবস্থা থেকে মুক্তি পাব । সব জায়গার এক নাম । কত ব্রিলিয়ান্ট একটা আইডিয়া । যদিও জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের বর্তমান নাম নিয়ে আমি হতাশ ।
রাজনৈতিক দলগুলো সৎ হলে আপনারা যারা আমার মত চালাক (!!!) না,যাদের চাহিদা অনেক বেশী সরকার থেকে ,তাদের সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হতো কাকে ভোট দিবেন । নাহ ! অতটা সৎ হওয়ার দরকার নাই যে তারা বলবে "আমরা ক্ষমতায় গেলে দুর্নিতি করব না " । এইটা পুরা মিথ্যাই । আমাদের নির্বাচন পদ্ধতি হওয়া উচিৎ টেণ্ডার সিস্টেমে । বিএনপি- আলীগ সততা বজায় রেখে টেণ্ডার দাখিল করবে । তারা সৎ ভাবে বলবে আগামী পাঁচ বছর আমার পুত্র এবং নেতারা এত হাজার কোটি
টাকার বেশী দুর্নিতি করবেনা । যার পরিমাণ অল্প হবে আমরা দেশটাকে তাদের হাতে তুলে দিব ৫ বছরের জন্য ।
পরিশেষ :ব্লগ লেখার অভ্যাশ নাই আগেই বলছি । তারপরও দেখিনা লিখেই ফেলি এই ধরনের একটা মুড নিয়ে লিখে ফেললাম । কি নিয়ে লিখব , কতটুকু লিখব এগুলা কোন কিছুই ঠিক ছিলনা । আধা ঘণ্টা ফেইসবুকিং টাইম বিসর্জন দিয়ে লিখলাম । লজ্জায় এখনো ফেইসবুকে শেয়ার দেয়া হয় নাই । লেখার হেইডলাইন নিয়েই চিন্তায় আছি ৫মিনিট ধরে । কমেন্ট দিয়ে জানান দেন কেমন লাগল । ব্লগে থাকব নাকি বিদায় নিব তাও জানান ।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৪১
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×