somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্লাদিমির পুতিন

১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৯ই নভেম্বর, ১৯৮৯ সাল। জার্মানির সাধারণ জনগণ বার্লিনের প্রাচীরকে ভেঙে ফেলল, একজন কেজিবি সদস্য হিসেবে ভ্লাদিমির পুতিন তখন বার্লিনে কর্মরত। ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোকে জানিয়েছিল, হয়তো ফোর্স পাঠালেই রক্ষা করা যাবে বার্লিনের সীমানা প্রাচীর। মস্কো ফোর্স পাঠায়নি, কেননা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ধরে রাখার মতো সামর্থ্য মস্কোর ছিল না। আর এর ঠিক দু'বছর পরেই ভেঙে যাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন। ভ্লাদিমির পুতিনের মনে আজও সেই পূর্বেকার যন্ত্রণা বিরাজমান।

১৯৯৯ সাল, রাশিয়ার তিনটি শহর মস্কো, বায়নাস্ক এবং ভলগোদনস্কের বিভিন্ন এপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে হামলা হয়৷ এই হামলার ফলে তিনশো নিরপরাধ সিভিলিয়ান মারা যায় এবং আহত হন প্রায় এক হাজারেরও অধিক সিভিলিয়ান রুশ নাগরিক।
হামলায় দায় চাপিয়ে দেওয়া হয় স্বাধীনতাকামী চেচেন যোদ্ধাদের উপর। মূলত রাশিয়ান জনগণকে সরকারের পাশে আনতে এবং চেচেনদের প্রতি আরো কঠোর হওয়ার নিমিত্তেই তৎকালীন রুশ সরকার এই পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল। ইবনে আল খাত্তাব এবং আখেমিজ গোসিয়ায়েভ ফিল্ডে থাকলেও পেছনে ছিল রুশ গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি। তৎকালীন সময়ে রাশিয়ান প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন জানেন? মি. ভ্লাদিমির পুতিন।
এই হামলার সময় এফএসবিতে ছিলেন আলেক্সান্ডার লিটভিনেনকো, যিনি পরবর্তীতে রাশিয়া ছেড়ে লন্ডনে চলে আসেন এবং রুশ সরকারের কুকীর্তি ফাঁস করে দেন। ২০০৬ সালে রুশ গোয়েন্দারা লিটভিনেনকোর চা'য়ে পলোনিয়াম প্রয়োগ করে হত্যা করে। মৃত্যুর আগের দিন লিটভিনেনকো তার বাবাকে বলেছিলেন বহুদিন পূর্বেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বলেছেন, আপনি অন্তত কম্যুনিস্ট নন।
যারা নিজেরদের জীবনে সত্যিকারে মনুষ্যত্ব অর্জন করে, তারা একদিন না একদিন একজন স্নোডেন হয়ে উঠেন; লিটভেনকোর মতো জীবন বাজি রাখেন।

বার্লিনকে এখনও বলা হয়, দ্যা সিটি অব স্পাই। পূর্বের সোভিয়েত আমলের মতো না হলেও, এখনো বার্লিন স্পাইদের কাছে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক৷ যদিও ল্যান্ড অব কনফ্লিক্টের কেন্দ্র এখন ইউক্রেন। গত কয়েক বছর আগে বার্লিনে মস্কোর কনস্যুলেট ভবনের উপর থেকে পড়ে এক ব্যক্তি মারা যান। কল্পনা করুন, যখন তুরস্কে সৌদি এম্বাসিতে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করে কেটে কেটে পিস করা হয়েছিল।

বহু পূর্বেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, আমাদের সবাইকে পূর্বের জায়গায় মানে সোভিয়েত পূর্ববর্তী স্থানে ফিরে যেতে হবে। যখন লোহানেস্ক, দোনেস্ক অঞ্চল মাদার রাশিয়ার অন্তর্গত ছিল। কিন্তু বলশেভিকরা জায়গায় ব্যাপারে কোন তারতম্য করতেন না। তাই এই অঞ্চলগুলোকে ইউক্রেন প্রশাসনের আওতাধীন করা হয়েছিল।

নিজেদের ভাগ কম পড়ায় বলশেভিকরা ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যকার সাইকট-পিকট চুক্তি প্রত্যাখান করেছিল। আর তেমনই এক চুক্তি ছিল দুই পরাশক্তি আমারিকা ও সোভিয়েত ব্লকের অধীনে জার্মানিকে ভাগ করা। জার্মানির মূল কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে বিসমার্কের দ্বারা গঠিত প্রুশিয়া রাজ্যের উপর, যা ছিল পোল্যান্ড, কেলিনিনগ্রাদ(রাশিয়া) হয়ে লিথুনিয়া পর্যন্ত। ১৯৪৬ সালের পূর্বে কেলিনিনগ্রাদের নাম ছিল কনিগসবার্গ। আর কনিগসবার্গেই জন্মেছিলেন মহান জার্মান দার্শনিক, আধুনিক এনলাইটেনমেন্টের জনক ইমানুয়েল কান্ট।

বি:দ্র: ছবিটি তুলেছিলাম ফ্রাংকফুট সেন্ট্রাল স্টেশনের একটি বুকশপ থেকে। কেউ পুতিনের প্রতি রাগ দেখিয়ে বইটির মলাটে দাগিয়েছে। ৯/১১ এর পর ওয়েস্ট ইসলামকে অধ্যয়ন শুরু করেছিল, আর এখন করছে পুতিনকে। জার্মানির প্রায় প্রত্যেকটি বড় বুকশপে এই বইটি আমি দেখেছি৷
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১১:৫০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তারেক ৩০০০ কোটী টাকার লোভেই দেশে ফিরেছে

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০



তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

বই : টক অব দ্য টাউন

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৮

বই : টক অব দ্য টাউন



একটি বই হঠাৎ করে এতটা আলোচনায় আসবে আমরা কি ভাবতে পেরেছি ?
বাংলাদেশের মানুষ অতি আবেগপ্রবন , বর্তমান রাজনৈতিক অস্হিরতার মধ্যে ও
বাঙালীর স্বভাবসুলভ অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×