আমার এক বান্ধবী আছে, যার কাজ নিয়মিত সোজা জিনিষ উল্টা করা। সে দুই পায়ে দুইরকম স্যান্ডেল পরবে, আর বলবে, "কে আমার পা দেখতেছে"? খেতে গেলে আগে ডেজার্ট খেয়ে এরপর ভাত খাবে। শেষে খাবে স্যুপ! কেউ হেসে দিলে বলবে, "সবই তো খাওয়া, পেট এ গেলে কোনটা আগে কোনটা পরে, কে বুঝতেছে?"
এই পর্যন্ত ঝামেলা ছিলোনা। ঝামেলাটা বাঁধলো, যেদিন আস্ত শাড়ীটা ডান-কাঁধে আঁচল ফেলে পড়ে কাজে গেলো, সারাদিন মীটিং করল। ওর ধারনা, দিনটা খুব ভাল ছিল, কারন সবাই হাসিখুশি, বিশেষ করে যেই ওর দিকে তাকায়, সেই হাঁসে। খুব ভাব নিয়ে এসে বললো, "দেখছ, আমি কত ভালমানুষ, আমাকে দেখেই লোকজনের মন ভালো হয়, আর হাঁসে"!
এতদিন তাও সবকিছু সোজাই যাচ্ছিল, হয়ত ফুটপাথে মোটরসাইকেল, রাস্তা বন্ধ করে ভি.আই.পি কিংবা জ্যাম ঠেকে সাধারন লোকজন, যাচ্ছিল কিন্ত সোজাই। ঝামেলা বাঁধালো উলটো যেয়েই। একদিন-দুইদিন নির্দোষ, ঝামেলা ছাড়াই। প্রথমে সাইকেল-মোটরসাইকেল আর রিক্সা (হঠাৎ উলটা রাস্তায়, কিন্ত সামনে পড়ে লেগে গেলে দোষ কিন্ত যে সোজা এসেছে তার)। এরপর বাঁধ ভেঙে গেলো মনেহয়। গাড়ীতে পতাকা দন্ড আছে কিন্ত সোজা রাস্তায়, প্রায় দেখাই যায়না।
আগে ভি.আই.পি গাড়ী পাশে, সামনে বা পিছে দেখতাম, আর এখন নিয়মিতই মুখোমুখি দেখি!
ঝামেলা বাঁধল, যখন প্রশাসনের গাড়ী উলটো রাস্তায় এসে মেরে ফেলল একজনকে। আচ্ছা মারতে হলে তো গাড়ীর গতি দরকার, গতি মানে রাস্তা ফাঁকা দরকার, তাহলে উল্টো যাবার কি দরকার? নাকি আমার বান্ধবীর মত ওদেরও কথা "কই, সবাই হাঁসে, সালাম দেয়, কেউ তো ঝানেলা বা সমস্যা হচ্ছে বলেনা"!
বান্ধবীকে দেখিনা অনেকদিন, উল্টা শাড়ী পরে প্রশাসনে গেল নাকি? সপ্তাহ শেষে তো চিন্তায় পড়ে গেলাম! উল্টো রাস্তায় কেউ বাহন চালালে দেখবেন তো, আমার বান্ধবীকে দেখেন কি না...
শুভ সপ্তাহান্ত!